মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার হাওর তীরবর্তী গ্রাম উত্তরসূর। এই গ্রামেই কৃষি বিপ্লবের নতুন সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এই শীতের মৌসুমে সবজি চাষাবাদ করে সফলতার মুখ দেখেছে একটি খামার। লাভবান হওয়ায় এখন তারা খামারটি সম্প্রসারণ করার পরিকল্পনা করছেন।
সদর ইউনিয়নের উত্তরসূর গ্রামে দেখা যায়, হাইল হাওরের তীরের গ্রাম উত্তরসূরে গড়ে উঠেছে কাজী অ্যান্ড আজাদ এগ্রো ফার্ম। প্রায় আট একর জমির মধ্যে এই খামার গড়ে তুলেছেন উদ্যোক্তা কাজী আয়েশা। সেখানে এবার চাষ করা হয়েছে বিভিন্ন রকমের শীতকালীন সবজি। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি সাফল্য এসেছে লাউ থেকে। খামারটির চারপাশে এখন লাউয়ের ছাউনিতে ঘেরা। পাশাপাশি চাষ করা হয়েছে লালশাক, কলমিশাক, বেগুনসহ বিভিন্ন শাকসবজি। যা বাণিজ্যিকভাবে যাচ্ছে পার্শ্ববর্তী বাজারগুলোতে।
“ডিজিটাল বাংলা নিউজ” অনলাইনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
কাজী অ্যান্ড আজাদ এগ্রো ফার্মের পরিচালক কাজী মামুন বলেন, লাউয়ের পাতা সবুজ ও নরম। পুরুষ ও স্ত্রী ফুল যথাক্রমে রোপণের ৪২-৪৫ দিন ও ৫৭-৬০ দিনের মধ্যে ফুটে। প্রতিটি লাউয়ের ওজন দেড় থেকে দুই কেজি। প্রতি গাছে গড়ে ১০ থেকে ১২টি লাউ ধরে। চারা রোপণের ৬০-৭০ দিনের মধ্যে প্রথম ফসল তোলা যায়। তিন একর জমিতে লাউ চাষে সব মিলিয়ে খরচ হয়েছে পঞ্চাশ হাজার টাকা। গত কয়েক মাসে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকার লাউ বিক্রি করা হয়েছে।
শুধু সবজিই নয় কাজী অ্যান্ড আজাদ এগ্রো ফার্মে পরিকল্পিতভাবে রোপণ করা হয়েছে বিভিন্ন জাতের আম, লিচু, আনার, পেয়ারার গাছ। আধুনিক পদ্ধতিতে রোপণ করা হয়েছে বরই গাছ ও মরিচের গাছ। যেগুলো থেকে ইতোমধ্যে ফসল তুলে বাজারে পাঠানো হয়েছে। খামারের মাঝখানে আছে একটি পুকুর। যেখানে চাষ করা হচ্ছে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ। এছাড়া ডেইরি ও ক্যাটল ফার্ম তৈরির জন্য একটি শেড নির্মাণ করা হয়েছে। কয়েক মাসের মধ্যে এখানে তোলা হবে প্রায় ৪০টি গরু। সবমিলিয়ে এই প্রত্যন্ত অঞ্চলে নতুন এই খামার আশার আলো দেখিয়েছে।
কাজী মামুন বলেন, আমাদের খামারটি চালু হয়েছিল এক বছর আগে। এরপর শীতকালীন সবজি চাষাবাদ শুরু করি। খামারের সাথী ফসল হিসেবে আমরা এগুলো চাষ শুরু করি। এখানে বাণিজ্যিকভাবে কৃষি পণ্য উৎপাদনের কোনো উদ্যোক্তা আগে ছিল না। এরপর প্ল্যান করি এখানে একটি খামার করার। ছোট করে শুরু করেছিলাম, এখন অনেক বড় হয়েছে। এই খামার নিয়ে আমাদের অনেক বড় পরিকল্পনা আছে অদূর ভবিষ্যতে।
শ্রীমঙ্গল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিলুফার ইয়াসমিন মোনালিসা সুইটি বলেন, আমরা নতুন নতুন এলাকায় সবজি চাষের জন্য উদ্যোগ নিয়েছি। নতুন নতুন জমিতে আবাদ হচ্ছে। বিভিন্ন ধরনের প্রদর্শনীর মাধ্যমে কৃষক ও উদ্যোক্তাদের উৎসাহিত করছি।
ডিবিএন/ডিআর/মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান