তিমির বনিক, মৌলভীবাজার জেলা প্রতিনিধি: স্বাধীনতার ৫০ বছর পর মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজরিত ‘জয়বাংলা বধ্যভূমি’ সংস্কার কাজ হাতে নিয়েছে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসন।
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার রাজঘাট ইউপি অন্তগত সিঁন্দুরখান বাজার বিজিবি ক্যাম্প সংলগ্ন ফিনলে চা বাগানে অবস্থিত এই বধ্যভুমিটি একদিন সাধারণ মানুষের অজানা ছিল। অনেকেই জানা ছিল না, ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাক হানাদার বাহিনী কর্তৃক নিরস্ত্র বাঙ্গালীদের ধরে এনে নির্যাতন ও গনহত্যা চালাতো। সম্প্রতি স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের দাবীর পরিপ্রেক্ষিতে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রনালয় বধ্যভূটি সংস্কার ও একটি নান্দনিক স্মৃতি স্তম্ভ নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহন করে।
সোমবার (২২ নভেম্বর) সকালে এই বধ্যভূমির স্থান পরিদর্শন করেন মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান, এসময় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা স্মৃতিসৌধ নির্মানে স্থান নির্ধারণ ও ভূমি জরিপ করেন।
মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান বলেন, ‘জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারসহ স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে আমরা এখানে এসেছি জায়গাটি চিহ্নিত করতে। এর সাথে আমাদের অনেক আবেগ জড়িয়ে আছে। যে কারণে দেরিতে হলেও এখানে শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতি সম্মানে একটি সৌধ নির্মাণ করা হবে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর এ সৌধ নির্মান কাজ বাস্তবায়ন করবে’ বলে তিনি জানান।
শ্রীমঙ্গল উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার কুমুদ রঞ্জন দেব বলেন, সিঁন্দুরখান বাজারের পাশে বর্তমান বিজিবির ক্যাম্পই ৭১ সালে পাক হানাদার বাহিনী ক্যাম্প হিসেবে ব্যবহার করছিলো। তারা নিরস্ত্র বাঙ্গালীদের ধরে এনে এ মাঠে নির্যাতন ও হত্যা নিপিরন করে পাশের একটি পুকুরে ফেলে দিত। তিনি বলেন, দেশ স্বাধীন হওয়ার পর পুকুরটি থেকে ৪ বস্তা মানুষের মাথার খুলি ও হাঁড উদ্ধার করে মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘরে পাঠিয়ে দেয়া হয়। স্বাধীনতার ৫০ বছর পর হলেও শহিদ মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানে এখানে একটি সৌধ নির্মান হচ্ছে এতে আমরা আনন্দিত ও গর্বিত।
এসময় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আজিমুদ্দিন সরদার শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. নজরুল ইসলাম, সহকারী কমিশনার (ভূমি) নেছার উদ্দিন, শ্রীমঙ্গল উপজেলা প্রকৌশলী জাহিদুল ইসলাম, রাজঘাট ইউপি চেয়ারম্যান বিজয় বুনার্জি, সিঁন্দুরখান ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল হেলাল, মুক্তিযোদ্ধা জেলা ইউনিট কমান্ডার জামাল উদ্দিন, শ্রীমঙ্গল উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার মোয়াজ্জেম হোসনে ছমরু, মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব আছকির মিয়াসহ স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা ও আওয়ামীলীগের বিভিন্ন নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।