মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলায় যৌতুকের দাবিতে স্ত্রী’কে নির্যাতন ও আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল সোমবার রাতে ওই নারীর স্বজনদের করা মামলা দায়েরের পর কয়েছ আহমদ (২৫) নামে ওই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়।
কয়েছের বাড়ি উপজেলার সাগরনাল ইউপি দক্ষিণ বড়ডহর গ্রামের বাসিন্দা। এর আগে গতকাল দুপুরে স্বামীর বাড়ি থেকে ওই গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
মামলার এজাহারীয় ও পুলিশ সূত্রের বরাতে জানা গেছে, গত বছরের নভেম্বর মাসে একই উপজেলার গোয়ালবাড়ী ইউপির যোগীমোড়া গ্রামের বাসিন্দা রইছ আলীর মেয়ে রীমা আক্তারের (১৯) সঙ্গে পার্শ্ববর্তী সাগরনাল ইউপির দক্ষিণ বড়ডহরের বাসিন্দা আব্দুল কাদিরের ছেলে কয়েছ আহমেদের দাম্পত্য জীবন শুরু হয়। পেশায় কয়েছ চট্টগ্রামে ট্রাক চালক। বিয়ের পর কয়েছ ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা ট্রাক কেনার জন্য যৌতুক হিসেবে রীমার কাছে একাধিকবার টাকা দাবি করেন। পরিবারের আর্থিক অসচ্ছলতার কথা তুলে ধরে এ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন রীমা। এ কারণে তাঁর ওপর প্রায়ই শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালানো হতো।
এজাহারের সূত্রে আরও বলা হয়েছে, স্বামী কয়েছ প্রায়ই রীমাকে বলতেন, তিনি তাঁকে বিয়ে করে ঠকেছেন। রীমা মারা গেলে দ্বিতীয় বিয়ে করবেন। অনেক টাকা যৌতুক পাবেন। গতকাল সোমবার বেলা সাড়ে ১০টার দিকেও রীমা মোবাইল ফোনে কান্না কাটি করে নির্যাতনের কথা স্বজনদের জানান। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কয়েছের ছোট ভাই জাবেদ মোবাইলে রীমা আত্মহত্যা করেছেন বলে তাঁর স্বজনদের খবর দেন। পরে রীমার স্বজনদের কাছ থেকে খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। এ সময় ঘরের আড়ার সঙ্গে রীমার লাশ ঝুলতে দেখেন স্বজনরা। পরে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
“ডিজিটাল বাংলা নিউজ” অনলাইনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
লাশ উদ্ধারের পর কয়েছ’কে আটক করে পুলিশ। রাত সাড়ে ১১টার দিকে রীমার মা সারি বেগম (৪১) বাদী হয়ে কয়েছ ও তাঁর বাবা আব্দুল কাদিরকে (৬০) আসামি করে জুড়ী থানায় মামলা দায়ের করেন। যৌতুকের দাবিতে তাঁরা নির্যাতনসহ রীমাকে আত্মহত্যায় প্ররোচনায় মানসিক নির্যাতন চালান বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়।
জুড়ী থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মহসীন তালুকদার আজ মঙ্গলবার দুপুরে বলেন, সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরির সময় নিহত গৃহবধূর শরীরে, গলায় ফাঁসের চিহ্ন ছাড়া আর কোনো আঘাতের চিহ্ন দেখা যায়নি। আটক কয়েছ’কে রীমার মায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্ত্রী’কে নির্যাতনের বিষয়টি তিনি স্বীকার করেছেন। তাঁকে মৌলভীবাজারে সংশ্লিষ্ট আদালতে পাঠানো হয়েছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মৌলভীবাজার সদর ২৫০ শয্যা হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, কয়েছের বাবা পলাতক। তাঁকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
ডিবিএন/এসডিআর/মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান