ঢাকার একটি ধর্ষণ মামলায় তালতলী উপজেলার কচুপাত্রা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক এবিএম জাকারিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রবিবার গভীর রাতে আমতলী পৌর শহরের একে স্কুল এলাকার একটি বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। সোমবার দুপুরে তাকে ঢাকা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৪ সোপর্দ করা হয়েছে। আদালতের বিচারক শাহরিয়ার কবির তার জামিন আবেদন না মঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
জানা গেছে, তালতলী উপজেলার কচুপাত্রা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক এবিএম জাকারিয়া ঢাকার বারডেম হাসপাতালে এক সেবিকাকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে। পরে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলে। এতে সেবিকা অন্তঃস্বত্তা হয়ে যায়। এরপর জোরপুর্বক ঔষধ খাইয়ে ওই অন্তঃস্বত্তা নারীর ভ্রণ হত্যা করে। এরপর ওই সেবিকার সঙ্গে সকল যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে গত ১৯ মে ওই সেবিকা ঢাকা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৪ এবিএম জাকারিয়ার বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন।
আদালতের বিচারক শাহরিয়ার কবির মামলাটি আমলে নিয়ে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ওসিকে এজাহার হিসেবে গন্য করার নির্দেশ দেন। আদালতের আদেশ মতে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ মামুনুর রশিদ মামলাটি এজাহার হিসেবে গ্রহন করেন। রবিবার রাতে কেরানীগঞ্জ থানার এসআই মোঃ মিজানুর রহমান ও আমতলী থানা এসআই আশরাফ মিয়ার নেতৃত্বে যৌথ অভিযান চালিয়ে এবিএম জাকারিয়াকে আমতলী পৌর শহরের একে স্কুল এলাকার একটি বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। সোমবার দুপুরে পুলিশ জাকারিয়াকে ঢাকা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে প্রেরণ করেছেন। আদালতের বিচারক শাহরিয়ার কবির আসামী জাকারিয়ার জামিন আবেদন না মঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। ধর্ষক এবিএম জাকারিয়া তালতলী উপজেলার হুলাটানা গ্রামের সেকান্দার আলী হাওলাদারের পুত্র।
ঢাকা বারডেম হাসপাতালের সেবিকা বলেন, এবিএম জাকারিয়া বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে আমাকে বেশ কয়েকবার ধর্ষণ করেছে। এতে আমি অন্তঃস্বত্তা হয়ে যাই। পরে আমাকে জোর করে ঔষধ খাইয়ে ভ্রূণ হত্যা করেছে। এরপর থেকে আমার সঙ্গে সকল যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। আমি লম্পট এবিএম জাকারিয়ার শাস্তি দাবী করছি।
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার এসআই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মোঃ মিজানুর রহমান বলেন, আমতলী থানা পুলিশের সহায়তায় একটি ধর্ষণ মামলার আসামী এবিএম জাকারিয়াকে আমতলী পৌর শহরের একটি বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ মামুনুর রশিদ বলেন, ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতের একটি ধর্ষণ মামলায় স্কুল শিক্ষক এবিএম জাকারিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়।
তালতলী উপজেলা শিক্ষা অফিসার নজরুল ইসলাম বলেন, এবিএম জাকারিয়ার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বরগুনা জেলা শিক্ষা অফিসারের কাছে প্রতিবেদন দিয়েছি। তিনিই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবেন।
বরগুনা জেলা শিক্ষা অফিসার আব্দুল মুকিত মোল্লা বলেন, বিষয়টি আমি জেনেছি। উপজেলা শিক্ষা অফিসারের প্রতিবেদন পেলেই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আজ ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | হেমন্তকাল | ২০শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি | রাত ৪:৪৪ | শুক্রবার
ডিবিএন/এসই/ মোস্তাফিজুর রহমান (বাপ্পি)