বরেণ্য গীতিকার ও সুরকার আলাউদ্দিন আলী আর নেই। গতকাল ৯ আগস্ট বিকাল ৫টা ৫০ মিনিটে নগরীর মহাখালীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আশীষ চক্রবর্তী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ফুসফুসের প্রদাহ ও রক্তে সংক্রমণের সমস্যায় ভুগছিলেন আলাউদ্দিন আলী। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় ৮ আগস্ট ভোর পৌনে পাঁচটায় নগরীর মহাখালীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। সেখানেই লাইফ সাপোর্টে ছিলেন এই শিল্পী।
তবে ৯ আগস্ট আলাউদ্দিন আলীর শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছিল বলে জানিয়েছিলেন তার মেয়ে আদ্রিতা আলাউদ্দিন রাজকন্যা। রবিবার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে এই তথ্য জানান তিনি। কিন্তু এরই মধ্যে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে।
এর আগে, ২০১৫ সালের ৩ জুলাই অসুস্থ আলাউদ্দিন আলীকে ব্যাংকক নেওয়া হয়েছিল। সেখানে চিকিৎসকরা জানান, তার ফুসফুসে একটি টিউমার রয়েছে। এছাড়া দীর্ঘদিন ধরে শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় ভুগছেন তিনি। তার ক্যানসারের চিকিৎসাও চলছিল। সাভারে সেন্টার ফর রিহ্যাবিলিটেশন অব প্যারালাইজড কেন্দ্রেও দীর্ঘদিন চিকিৎসা নিয়েছেন তিনি।
১৯৫২ সালের ২৪ ডিসেম্বর মুন্সিগঞ্জের টঙ্গিবাড়ী উপজেলার বাঁশবাড়ি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন আলাউদ্দিন আলী। তার বাবা ওস্তাদ জাদব আলী। মায়ের নাম জোহরা খাতুন। দেড় বছর বয়সে পরিবারের সঙ্গে ঢাকার মতিঝিলের এজিবি কলোনিতে চলে আসেন। তিন ভাই ও দুই বোনের সঙ্গে এই কলোনিতে বেড়ে উঠেন এই শিল্পী। সংগীতে প্রথম হাতেখড়ি ছোট চাচা সাদেক আলীর কাছে। পরে ১৯৬৮ সালে বাদ্যযন্ত্রশিল্পী হিসেবে চলচ্চিত্রজগতে পা রাখেন তিনি। শুরুটা শহীদ আলতাফ মাহমুদের সহযোগী হিসেবে, পরে প্রখ্যাত সুরকার আনোয়ার পারভেজের সঙ্গে দীর্ঘদিন কাজ করেন তিনি।
আলাউদ্দিন আলী একসঙ্গে সুরকার, সংগীত পরিচালক, বেহালাবাদক ও গীতিকার। গান লিখে তিনি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন। বাংলা গান, বিশেষ করে বাংলা চলচ্চিত্রে অসংখ্য শ্রোতাপ্রিয় গান তৈরি করেছেন তিনি।
অসংখ্য গান সুর করেছেন আলাউদ্দিন আলী। তার সুর করা উল্লেখযোগ্য গান হলো—‘ও আমার বাংলা মা তোর’, ‘সূর্যোদয়ে তুমি সূর্যাস্তেও তুমি’, ‘প্রথম বাংলাদেশ’, ‘এমনও তো প্রেম হয়’, ‘আছেন আমার মুক্তার’, ‘বন্ধু তিন দিন তোর বাড়ি গেলাম’, ‘যেটুকু সময় তুমি থাকো পাশে’ প্রভৃতি।