যুবায়ের, জবি প্রতিনিধি: জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামীপন্থী নীলদলের একাংশে (জাকারিয়া-মোস্তফা) ভাঙন দেখা দিয়েছে। ইসলামের ইতিহাস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও শিক্ষক সমিতির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. শামছুল কবির জবি নীলদল (একাংশ) কার্যনির্বাহী পর্ষদ ২০১৯-২০২০ এর কার্যনির্বাহী সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। এই বিষয়ে ড. শামছুল কবির তার পদত্যাগের সত্যতা নিশ্চিত করেন। এর আগে ২০১৭ সালে নীলদল থেকে শিক্ষকদের বড় একটি অংশ বের হয়ে গেলে নীলদলে প্রথম ভাঙন ঘটে।
সূত্রে জানা যায়, নীলদলের (একাংশ) বিরুদ্ধে অঞ্চলপ্রীতি ও জামায়াত-বিএনপির সংশ্লিষ্টতা এনে গত ০৫ মার্চ সভাপতি ও সাধারন সম্পাদক বরাবর ‘কার্যনির্বাহী পর্ষদ ২০১৯-২০২০’ এর কার্যনির্বাহী সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ পত্র জমা দেন ইসলামের ইতিহাস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও শিক্ষক সমিতির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. শামছুল কবির। এরপর গতকাল নীলদলের (একাংশ) কার্যনির্বাহী কমিটি ও অনুষদ কমিটির সভায় এবিষয়টি গৃহীত হয়। নীলদলের (একাংশ) এই সদস্য বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের একটি অংশ নিয়ন্ত্রণ করেন। পদত্যাগে পর নীলদলে তার মিত্র শিক্ষকদের নিয়ে আরেকটি গ্রুপ গঠনের ঈঙ্গিতও দিয়েছেন এই সাবেক সহকারী প্রক্টর।
পদত্যাগের বিষয়ে জানতে চাইলে ড. শামছুল কবির বলেন, যে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে ২০১৭ সালে আমরা একাংশ নিয়ে জবিতে নীলদল গঠন করি তা সম্পূর্ণরূপে ব্যতয় হয়েছে। তাছাড়া তিনি বলেন, বর্তমানে এই নীলদল আওয়ামীলীগের আদর্শ কতটুকু ধারণ করছে তা সন্দিহান এবং কিছু ব্যক্তি নিজের স্বার্থ ও কর্তৃত্ব হাসিল করা এবং প্রতিষ্ঠিত করার জন্য নীলদল করছে কিন্তু তা বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ছিল না ও তিনি তা শিক্ষা দেননি। ড. শামছুল কবির আরও বলেন, এই গ্রুপ ও নীলদলের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক, ভ্রাতৃত্ববোধ, সৌহার্দ্যপূর্ণ্য সম্পর্ক, বন্ধুত্বপূর্ণ মনোভাবের অভাব দীর্ঘদিন ধরে প্রতীয়মান। এই গ্রুপ বর্তমানে ব্যক্তিকেন্দ্রীক, একচেটিয়া কর্তৃত্ব, সুবিধাভোগী ও অঞ্চল প্রীতির কেন্দ্রে পরিণত হওয়ায় একজন বঙ্গবন্ধুর আদর্শের কর্মী হিসেবে মেনে নিতে পারি না। ফলে এইরূপ অবস্থার প্রেক্ষিতে আমি পদত্যাগ করেছি।
পদত্যাগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি আরও বলেন মুখে মুখে বঙ্গবন্ধু বললে হবে না, তা কাজে কর্মে প্রমাণ থাকতে হয়। এছাড়া এই গ্রুপে অসংখ্য জামায়াত-বিএনপির শিক্ষক ঢুকে যায় এবং তাদের নিয়মনীতি, নির্ধারনী মোতাবেক এই গ্রুপটি পরিচালিত হচ্ছে তাই বঙ্গবন্ধুর একজন আদর্শিক সৈনিক হিসেবে আমি মেনে নিতে পারি নাই। ফলে এই নীলদলের কার্যনির্বাহী সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করি।
এবিষয়ে নীলদলের (একাংশ) সভাপতি ড. জাকারিয়া মিয়া বলেন, ড. শামছুল কবির আমাদের একজন ভালো সহকর্মী ছিলেন। তার পদত্যাগে আমি ব্যক্তিগতভাবে ব্যথিত। তবে তিনি নিজের যে কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারেন, আমরা সেটাকে সাধুবাদ জানাই। কিন্তু তিনি আমাদের সম্পর্কে যেসব অভিযোগ করে গেছেন এর কোন বাস্তবতা নেই। তিনি আমাদের সম্মানহানী করেছেন।