রাজধানীর আরামবাগে অবস্থিত ‘দেওয়ানবাগ শরীফের’ প্রয়াত পীর সুফি সম্রাট মাহবুব-এ-খোদা ওরফে দেওয়ানবাগীর নামাজে জানাজা আজ মঙ্গলবার বাদ জোহর দেওয়ানবাগে অনুষ্ঠিত হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ অবদানের জন্য জানাজার পর তাকে গার্ড অব অনার প্রদান করা শেষে বাবে মদিনা দেওয়ানবাগ শরীফে তার স্ত্রীর পাশে দাফনস্থ করা হবে।
আজ মঙ্গলবার (২৯ ডিসেম্বর)মতিঝিল জোনের এডিসি এনামুল হক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এছাড়া দেওয়ানবাগী পীরের ব্যক্তিগত সহকারি মোহাম্মদ মেহেদীও একই কথা জানিয়েছেন।
গতকাল সোমবার (২৮ ডিসেম্বর) ভোর ৬টা ৪৮ মিনিটে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ইন্তেকাল করেন দেওয়ানবাগী পীর। তার বয়স হয়েছিল ৭০ বছর।
দেওয়ানবাগের পরিচালক ড. আরসাম কুদরত এ খোদা স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতাযুদ্ধে দেওয়ানবাগী পীর ৩ নম্বর প্লাটুন কমান্ডার হিসেবে পাক হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে সাহসিকতার সঙ্গে যুদ্ধ করেন। যুদ্ধ শেষে তিনি সেনাবাহিনীর ১৬ বেঙ্গল রেজিমেন্টে রিলিজিয়াস টিচার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে তিনি সর্বমোট ১১ টি দরবার ও শতাধিক খানকাহ প্রতিষ্ঠা করেন।
দেওয়ানবাগ দরবার শরিফের ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্যানুযায়ী, দেওয়ানবাগী পীরের নাম মাহবুব-এ খোদা। তবে তিনি ‘দেওয়ানবাগী’ নামে পরিচিত। ১৯৪৯ সালের ১৪ ডিসেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলার বাহাদুরপুর গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম সৈয়দ আবদুর রশিদ সরদার। মা সৈয়দা জোবেদা খাতুন। ছয় ভাই দুই বোনের মধ্যে তিনি সবার ছোট। নিজ এলাকার তালশহর কারিমিয়া আলিয়া মাদরাসা থেকে ফাজিল পর্যন্ত পড়াশুনা করেন।
ফরিদপুরে চন্দ্রপাড়া দরবারের প্রতিষ্ঠাতা আবুল ফজল সুলতান আহমেদ চন্দ্রপুরীর হাতে বায়াত গ্রহণ করেন দেওয়ানবাগী পীর। এরপর তার মেয়ে হামিদা বেগমকে বিয়ে করেন দেওয়ানবাগী। এর সুবাদে শ্বশুরের কাছ থেকে খেলাফত লাভ করেন।
তার কিছু দিন পর নিজেই নারায়ণগঞ্জে দেওয়ানবাগ নামক স্থানে একটি আস্তানা গড়ে তোলেন এবং নিজেকে সুফি সম্রাট পরিচয় দিতে থাকেন মাহবুব-এ খোদা। আস্তে আস্তে তার অনুসারি বাড়তে থাকে। এক পর্যায়ে মতিঝিলের ১৪৭ আরামবাগে স্থায়ী দরবার গড়ে কার্যক্রম পরিচালনা করছেন দেওয়ানবাগী।