১৭ আগস্ট। দেশব্যাপী সিরিজ বোমা হামলার ১২তম বার্ষিকী আজ । ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি) নামে একটি জঙ্গি সংগঠন পরিকল্পিতভাবে দেশের ৬৪টি জেলার মধ্যে ৬৩টি জেলায় ৫০০টি পয়েন্টে একই সময়ে বোমা হামলা চালায়। এতে দুইজন নিহত এবং বিস্ফোরিত বোমার স্প্লিন্টারের আঘাতে অর্ধশতাধিক লোক আহত হয়। দেশে যখন জঙ্গি বিরোধী ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এবং জঙ্গি-সন্ত্রাসীদের নির্মূলে কঠোর অভিযান চলছে, সে সময়ে সিরিজ বোমা হামলার একযুগ পূর্তি পালন জঙ্গিবাদ নির্মূলে জনগণের সম্পৃক্ততা অনেক বাড়াবে বলে সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন। এদিকে বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ও রাজনৈতিক দল জঙ্গিবাদ প্রতিরোধে এবং তরুণ প্রজন্মকে এ ব্যাপারে সচেতন করতে এ দিবস পালন করবে। আওয়ামী লীগ সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ বিরোধী বিভিন্ন কর্মসূচীর মাধ্যমে এ দিবস পালন করবে। অপরদিকে দেশব্যাপী সিরিজ বোমা হামলায় দায়েরকৃত ১৫৯টি মামলার মধ্যে ৯৩টির নিষ্পত্তি হয়েছে। এতে ৩৩৪ জনের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা হয়। বাকী ৫৬টি মামলা এখনো বিচারাধীন রয়েছে। এসব মামলায় মোট আসামির সংখ্যা চারশো জন। ১২ বছর আগে ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট মুন্সিগঞ্জ ছাড়া দেশব্যপী ৬৩টি জেলায় সংঘটিত এই সিরিজ বোমা হামলায় মোট ১৫৯টি মামলা দায়ের করা হয়। ১৪৯টি মামলার ১১০৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে। অন্য ১০ মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে। এই পর্যন্ত ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট সিরিজ বোমা হামলার ২৭ জন আসামীকে অপর জঙ্গি সংশ্লিষ্ট মামলায় ফাঁসি দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৮ জনের ফাঁসি কার্যকর হয়েছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে এসব মামলায় আনা অভিযোগ প্রমানিত না হওয়ায় ৩৪৯ জন অভিযুক্তকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে। ২০০৭ সালের ৩০ মার্চ জেএমবির শীর্ষ নেতা শায়খ আব্দুর রহমান, তাঁর সেকেন্ড ইন কমান্ড সিদ্দিকুল ইসলাম ওরফে বাংলা ভাই, সামরিক কমান্ডার আতাউর রহমান সানি, সহযোগী আব্দুল আউয়াল, খালেদ সাইফুল্লাহ ও সালাউদ্দিনের ফাঁসি কার্যকর হওয়ার পর জেএমবির কার্যক্রম ঝিমিয়ে পড়েছিল। পরবর্তীতে ২০১৩ সালে জঙ্গি তামীম চৌধুরী দেশে ফিরে এসে নতুন করে জেএমবিকে সংঘটিত করে। এর নাম দেয় নব্য জেএমবি। নব্য জেএমবি সদস্যরা দেশের বিভিন্ন জায়গায় হামলা চালানোর চেষ্টা করে কিন্তু পুলিশ ও বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সফলতার সাথে তাদের দমন করতে সক্ষম হয়। এদিকে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আব্দুল্লাহ আবু বাসসকে জানান, ঢাকা শহরে বিভিন্ন জায়গায় বোমা হামলায় মোট ১৮টি মামলা হয়েছে। যার মধ্যে চারটি মামলার বিচার নিষ্পত্তি হয়েছে। পাঁচটি মামলা বিচারাধীন আছে এবং বাকী নয়টি মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে। চারটি বিচার নিষ্পত্তিকৃত মামলায় ৩৭ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়েছে। যার মধ্যে সর্বোচ্চ শাস্তি হল ১০ বছর।