দেশের ঐতিহ্যবাহী নাট্য সংগঠন বিবর্তন যশোর’র দুটি নাটক নিয়ে ভারত সফরে যাচ্ছে। ৩০ সদস্যের দলটি আগামী ১৭ ডিসেম্বর বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে ভারতে প্রবেশ করবে। ২৪ ডিসেম্বর দেশে ফিরবে দলটি। পশ্চিমবঙ্গে ও আসামে নাটক দু’টি মঞ্চস্থ হবে।বিবর্তন যশোর’র সাধারণ সম্পাদক আতিকুজ্জামান রনি জানান, দেশ সেরা মঞ্চনাটক ‘মাতব্রিং’ ও দর্শক নন্দিত পথনাটক ‘পাইচো চোরের কেচ্ছা’ নাটকটি নিয়ে ভারত সফরে যাওয়া হবে। ‘মাতব্রিং’ নাটকটি রচনা করেছেন সাধনা আহমেদ। নির্দেশনা দিয়েছেন জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যতত্ত্ব বিভাগের চেয়ারম্যান ইউসুপ হাসান অর্ক। এছাড়া পোশাক পরিকল্পনা- আইরিন পারভীন লোপা, আলোক পরিকল্পনা-শাহীন রহমান, সেট পরিকল্পনা- ইউসুফ হাসান অর্ক ও কোরিওগ্রাফ করেছেন অদিতি সরকার রুমা।তিনি আরো জানান, ‘পাইচো চোরের কেচ্ছা’ নাটকটির কাহিনী সংগ্রহ করা। যার নাট্যরূপ দিয়েছেন কাজী চপল। আর নির্দেশনা দিয়েছেন বৈদ্যনাথ অধিকারী।সংগঠনের সভাপতি সানোয়ার আলম খান দুলু জানান, ১৮ ডিসেম্বর পশ্চিমবঙ্গের কোন্নেগরের ভদ্রকালী বিদ্যালয় মিলনায়তনে কথা মুখ দলের আয়োজনে ‘পাইচো চোরের কেচ্ছা’ নাটকটি মঞ্চস্থ হবে। ১৯ ডিসেম্বর নদীয়ার শান্তিপুরে রঙ্গপীঠ নাট্য উৎসবে ‘মাতব্রিং’ নাটকটি মঞ্চস্থ হবে। ২০ ডিসেম্বর একই নাট্য উৎসবে ‘পাইচো চোরের কেচ্ছা’ নাটকটি মঞ্চস্থ হবে। ২১ ডিসেম্বর আসামের বঙাইগাঁও এর রবীন্দ্র ভবনে অল ইন্ডিয়া ড্রামা ফেস্টিবলে ‘পাইচো চোরের কেচ্ছা’ নাটকটি এবং ২২ ডিসেম্বর একই উৎসবে ‘মাতব্রিং’ নাটকটি মঞ্চস্থ হবে। ২৪ ডিসেম্বর দেশে ফেরা হবে।‘মাতব্রিং’ নাট্যকার সাধনা আহমেদ জানান, মান্দি জনগোষ্ঠীর দুই নর-নারীর অনবদ্য প্রেম কাহিনী আশ্রয় করেই নাটকের গল্প এগিয়ে চলে। আদিবাসী মান্দিপল্লীর ভোজেরউৎসব-নাচ-গান-আচার-বিশ্বাসসহ নানা উপকথা ঠাঁই পেয়েছে। এছাড়া নাটকটিতে তুলে ধরা হয়েছে- জঙ্গল এখন আর ইচ্ছে মত ব্যবহার করা যায় না। জঙ্গলের মালিক সরকার। এই সত্যের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে আদিবাসীরা তাদের নিজস্ব বেশ-বসন ছেড়ে নগর জীবনে আসতে বাধ্য হচ্ছেন।নাট্য নির্দেশক ইউসুপ হাসান বলেন, নাটকের গল্পটা মান্দি জনগোষ্ঠী নিয়ে হলেও তাদের বাস্তুভিটা উচ্ছেদকে বৈষ্ণিক দৃষ্টিকোন থেকে দেখা হয়েছে। সারা দুনিয়ার দুর্বলের উপর সবলের অত্যাচারের চিত্রই এখানে চিত্রিত হয়েছে ‘পাইচো চোরের কেচ্ছা’ নাটকের নির্দেশক বৈদ্যনাথ অধিকারী জানান, নাটকে যশোর অঞ্চলের হাজার বছরের লোকসংস্কৃতি তুলে ধরা হয়েছে।বিবর্তন যশোর ২৯ বছর ধরে সুনামের সাথে নাট্যচর্চা চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের ‘মাতব্রিং’ ১৪তম মঞ্চনাটক। নাটকটির প্রথম প্রদর্শনী হয় ২০১৬ সালের ৯ সেপ্টেম্বর। ‘পাইচো চোরের কেচ্ছা’ নাটকটি ২৯তম পথনাটক। এটি ১৯৯৭ সালে প্রথম মঞ্চস্থ হয়। :- মোঃলোকমান হোসেন, যশোর জেলা প্রতিনিধি