নওগাঁ প্রতিনিধি : সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগের জন্য যাতে আবেদন করতে না পারেন সে জন্য এক সহকারী শিক্ষককে কৌশলে মিথ্যা অভিযোগ এনে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। ঐ পদে নিয়োগ দেয়ার নামে ঐ শিক্ষকের নিকট থেকে ২০ লক্ষ টাকা দাবী করা হয়েছে। উক্ত টাকা দিতে অস্বীকার করায় প্রধান শিক্ষক দয়ারাম সাহা এবং ম্যানেজিং কমিটির মেয়াদ উত্তীর্ন সভাপতি আব্দুল মান্নান মুহুরী উক্ত সহকারী শিক্ষক মোছাঃ সাইমা ইয়াসমিনকে নানাভাবে ভয়ভীতি প্রদর্শন ও হয়রানী করছেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে। ভুক্তভোগি সহকারী শিক্ষক সাইমা ইয়াসমিন গত রবিবার দুপুরে প্রেসক্লাব মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এইঅেভিযোগ করেছেন। জেলার রানীনগর উপজেলার
ত্রিমোহিনী উচ্চ বিদ্যালয়ে এই ঘটনা চলছে।
লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করেন গত ১৭ নভেম্বর ২০২১ সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগের জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। মোছাঃ সাইমা ইয়াসমিন যাতে সে পদে আবেদন করতে না পারেন তার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ১৪ নভেম্বর ২০২১ তারিখে মিথ্যা বানোয়াট ও ভিত্তিহীন একটি ঘটনা তুলে ধরে তাকে শোকজ করা হয়। এর জবাব প্রদান করলেও পরবর্তীতে প্রথম ও দ্বিতীয় শোকজ না করেই নিয়ম বহির্ভূতভাবে সাময়িক বরখাস্ত করে বেতনভাতা বন্ধ করে দেয়া হয়। পরবর্তীতে একটি ফাকা রেজুলেশনে ঐ ভুক্তভোগি সহকারী শিক্ষকসহ সকল শিক্ষকদের স্বাক্ষর গ্রহন করে এই সাময়িক বরখাস্তের প্রক্রিয়া সম্পাদন করে। এরই অংশ হিসেবে ৩০ ডিসেম্বর ২০২১ তারিখে বিদ্যালয়ে হাজির হলে তাকে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করতে দেয়া হয় নি। এ ব্যপারে সাইমা ইয়্ধাসঢ়;সমিন উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে অবহিত করেন।
পরবর্তীতে প্রতিদিন বিদ্যালয়ে হাজির থাকা সত্বেও ১লা জানুয়ারী ২০২২ তেকে ১৬ জানুয়ারী ২০২২ পর্যন্ত অনুপস্থিত দেখিয়ে শোকজ করা হয়। অথচ এই চাকুরীতে প্রবেশের ১৮ বছরে ঐ শিক্ষকের নামে কোন ানিয়ম বা শোকজ-এর ঘটনা নাই এবং সুনামের সাথে চাকুরী করে আসছেন বলে তিনি দাবী করেন।
অপরদিকে উক্ত সহকারী শিক্ষক তাকে স্তাযীভাবে বরখাস্তের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করলে আদালত তার উপর নিষেধাজ্ঞা প্রদান করে।
এদিকে হাইকোর্টের রীট পিটিশন নং ৩৬৫৭/২০১৫ তারেিখর এক রায় এবং শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের যুগ্ম সচিব মহোদয়ের ৬ আগষ্ট ২০১৭ তারিখের ৬৯৪ স্মারকের এক নির্দেশ মোতাবেক ৬০ দিনের বেশী সাময়িক বরখাস্ত রাখা হলে তাকে বেতনভাতা ও অন্যান্য সকল ভাতাসমূহ সমুদয় প্রদান করতে হবে। এই নির্দেশের প্রেক্ষিতে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের নিকট গেলে তাকে বিদ্যালয় থেকে বের করে দেয়া হয়।
তিনি এক লিখিত বক্তব্যে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি যোগসাজশে সম্পাদিত অনিয়ম ও দুর্নীতির তালিকা তুলে বলেন টাইম স্কেলের রেজুলেশন করতে তার নিকট থেকে ৮ হাজার টাকা এবং সহকারী শিক্ষক নজুরুল ইসলামের নিকট থেকে ৫০ হাজার টাকা নিয়েছেন। দপ্তরী অছিমুদ্দিনের চাকুরী শেষ না হতেই তার ছেলেকে ঐ পদে চাকুরী দেয়ার অঙ্গিকার করে আরও ৫০ হাজার টাকা গ্রহণ করা হয়েছে। পূর্বের সভাপতি আলমগীর আলম ববি বিদ্যালয় ফান্ডে ৭ লক্ষ টাকা রেখে গেলেও সে টাকা কিভাবে খরচ করা হয়েছে তার কোন হিসাব নাই। শিক্ষকদের বিদ্যারয় ফান্ড থেকে সামান্য ভাতা দেয়ার নিয়ম থাকলেও গত ৬ বছর ধরে দেয়া হয় নি। ২০২০ সালে ব্যাংকে ৫০ হাজার টাকা, ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসে ব্যাংকে ১ লক্ষ ১০ হাজার টাকা এবং শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে বেতন পরীক্ষার ফি সেশন ফিসহ বিভিন্ন খাতের প্রচুর টাকা আত্মসাত করা হয়েছে।