মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার কায়েরচক এলাকায় হাকালুকি হাওরে কংক্রিটের একটি সেতু সংযোগ সড়ক (অ্যাপ্রোচ রোড) ছাড়া তিন বছর ধরে দিব্যি দাঁড়িয়ে আছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে ক’জন তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এটি একটি অপরিকল্পিত সেতু, কেউ একটি দিন ব্যবহার করার সুযোগ পায়নি। সেতুর দুই পাশে চলাচলের জন্য রাস্তা না থাকায় সাধারণ জনগনের কোনো কাজে আসছে না। সেতুর সুবিধা পাচ্ছেন না ইউনিয়নের কয়েক হাজার মানুষ।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, সরু একটি খালের মাঝখানে নির্মিত সেতুটি বিচ্ছিন্ন দ্বীপের মাঝে মাঝে দাঁড়িয়ে আছে সেতুটি অযত্নে অবহেলায়। এর দুই পাশে নেই কোনো সংযোগ সড়ক নেই চলাচলের কোন সুবিধা। খালের পানি শুকিয়ে আছে। খালের নিচ দিয়ে মানুষ পারাপার করছে।
“ডিজিটাল বাংলা নিউজ” অনলাইনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
এলাকার স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য খসরুজ্জামান বলেন, এখানে একটি সেতু দরকার। কিন্তু এত উঁচু সেতুর প্রয়োজন নেই। সেতুটি প্রায় ১৫-১৬ ফুট উঁচু। এটি সম্পূর্ণ অপরিকল্পিতভাবে ও ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। এ কারণে এ সেতু থেকে কেউ কোনোদিন চলাচলের সুবিধা পায়নি। কেউ এটি এক দিনের জন্য ব্যবহার করার সুভাগ্য হয়নি। সংযোগ সড়ক বিহীন সেতুটি দৃশ্যমান দাঁড়িয়ে আছে। তবে এর ফলে দুর্ভোগে পড়েছে সাতটি গ্রামের হাজারো মানুষ।
মদনগৌরী গ্রামের শামসুল ইসলাম জানান, স্থানীয় বাসিন্দাদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল এ এলাকায় একটি সেতু নির্মাণ করে দেয়ার। অবশেষে সেতুটি নির্মিত হলো ঠিক। তবে সেতুর দুই পাশে নেই কোনো সড়ক। সেতুটি নির্মাণের তিন বছরেরও অধিক সময় ধরে স্টেচু হয়ে দৃশ্যামান খাম্বার মত দিব্যি দাঁড়িয়ে আছে। সরকারের এত অর্থ খরচ করে বিগত তিন বছরের বেশি সময় পার হলো আমরা সাধারণ জনগনের ভোগান্তির যেন কোন অন্ত নেই। এটা স্থানীয় মানুষের কোনো কাজে আসছে না। স্থানীয় লোকজন জানান, সংযোগ সড়ক না থাকায় হাজার হাজার মানুষ খাল পারাপার করে যাতায়াতে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।
গ্রামের বাসিন্দা সাতিরুল ইসলাম বলেন, এ হাওর এলাকার ৯০ শতাংশের বেশি মানুষ কৃষিকাজের সঙ্গে জড়িত এবং তাদের কৃষিপণ্য বিক্রির জন্য আশপাশের এলাকায় নিয়ে যেতে হলেও রাস্তার বেহাল দশায় তা ব্যাহত হচ্ছে।
খসরুজ্জামান বলেন, এ দুর্ভোগ থেকে মুক্তির জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি গ্রামবাসীর।
“ডিজিটাল বাংলা নিউজ” অনলাইনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
কুলাউড়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার (পিআইও) কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০২০ সালে ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ের অধীনে কুলাউড়া পিআইও অফিসের উদ্যোগে একটি সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। এতে খরচ হয় ৩০ লাখ টাকা। তবে সেতুর সঙ্গে সড়ক নির্মাণের কোনো কথা বা নির্দিষ্ট অন্য কিছু ছিল না শুধু সেতুবিহীন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ভূকশিমইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান মনির বলেন, সেতুর দুই পাশে মাটি দেওয়া হয়েছে এ বছরও। আশা করছি, আগামী বছর সড়কটি হাঁটার জন্য প্রস্তুত হবে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) শিমুল আলী বলেন, সেতুর দুই পাশে সংযোগ সড়কে মাটি ফেলা হলেও তা বন্যার পানিতে ভেসে গেছে। এপ্রোচ রোড নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ডিবিএন/এসডিআর/ মোস্তাফিজ বাপ্পি