কয়েকদিন লিখতে পারিনি কিন্তু, পড়েছি। অনেকের লেখাই পড়েছি। ইতিমিধ্যে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোহাম্মদ নাসিম। কয়েকজন নেতা মারাও গেছেন। আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিতসাধীন রয়েছেন গনস্বাস্থের ডাঃ জাফরুল্লাহ চৌধুরীসহ বেশ কয়েকজন আলোচীত ব্যক্তিবর্গ। প্রতিদিনই পত্রিকায় নাম আসছে বিভিন্নজনের। এই আক্রমন থেকে রক্ষা পেতে সকলেরই উচিত সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা। বিশেষ করে বয়স্ক এবং জটিল রোগে আক্রান্ত সকলের। অন্যের আক্রান্ত হবার সংবাদ দেখে যারা নানাভাবে বিদ্রুপ করেন তারাও নিরাপদ নয়। সব পরিবারেই বয়স্ক মানূষ রয়েছে, মা বাবা ছাড়াও আছে স্বজন এবং প্রিয়জন। আপনজন কেউ আক্রান্ত হলে বিরূপ মন্তব্য সমভাবে আঘাত করবে সকলকেই। যারা ইতিমধ্যে আক্রান্ত হয়েছেন তারাও নিরাপদ থাকতে চেষ্টা করেছেন। অনেক ক্ষেত্রে আমাদের অনেকের চেয়ে বেশী নিরাপদ এবং নিরাপত্ত্বায় থেকেছেন। হোয়াইট হাউস কিংবা ১০ নম্বর ডাউনওয়ে ষ্ট্রিট সুরক্ষিত এবং সার্বক্ষনিক তদারকি থেকেও করোনার আক্রমন ঠেকানো যায়নি। আপনি আমি আক্রান্ত হবোনা এমন বিশ্বাস থাকা ভাল তবে, নিশ্চিত করে বলা সঠিক হবেনা। এই কথাটাই দেশবাসির কাছে এখন পৌছাতে হবে, জানাতে হবে ভয়বহতাটি। দায়িত্বটি সচেতন নাগরিক হিসাবে আমাদের সকলেরই। কর্ম হারিয়ে কষ্ট হচ্ছে মানূষের কিন্তু, বহু মানুষ সাহায্যের হাত বাড়িয়েছে। কিন্তু পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিটি এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেলে পুরু পরিবারটাইত ক্ষতিগ্রস্থ্য হয়ে পরবে। নীজেদেরকেই এখন সিদ্ধান্ত নিতে হবে কোনটা বেশী জরুরী। তা নাহলে নিত্য মৃতের সংখ্যায় যে কারো নাম যুক্ত হতে পারে। সরকারের বিরুদ্ধেও এখন সমালোচনা হচ্ছে প্রতিদিন। কেউ কেউ সরকারকেই করোনায় আক্রান্ত মৃতের সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য দায়ী করছেন কিন্তু, কোন কাজটি সরকার করতে ব্যর্থ হয়েছে বলতে পারেননি। সময় নির্ধারনে বিলম্বিত হয়েছে বলে যারা অভিযোগ করেন তাদের জন্য বলি, এই অভিযোগ এমিরিকাতেও হচ্ছে। ঈদ উপলক্ষে বাড়ীফেরা মানূষের ঢল কোন নিয়ম নিষেধ মানা হয়নি। ফিরতি পথেও অভিন্ন দৃশ্য দেখাগেছে কর্মে ফেরা মানূষের। লক ডাউন খুলে দেওয়ার দাবী উঠেছিল রমজান মাসে ব্যবসা জন্য। অনেকের দাবীর মূখে শর্তসাপেক্ষে লক ডাউন কিছুটা শিথিল ঘোষনা হলেও কোন শর্তই মানেনি অনেকে। সরকার কর্মহীন দরিদ্র জনগোষ্ঠির জন্য সাহায্য ঘোষনা করেও দুর্নীতি ধরা পরেছে। অর্থ অনুদানও তসরুফ করেছে দায়িত্বপ্রাপ্তরাই। স্বচ্ছল লোকেরাও নাম লিখিয়েছে আত্নসাৎ করার জন্য। অনেক দেশেই এখন করোনার আক্রান্ত হওয়া কিছুটা কমেছে তবে,মৃতের সংখ্যাটি এখনো বেড়েই চলেছে। বাংলাদেশে সরকার সব নিয়মই পালন করেছে কিন্তু জনগন সতর্ক হয়নি এখনো। ভেন্টিলেশন বা পি পি ই পর্যাপ্ত নেই কোথায়ও, বাংলাদেশেও ঘাটতি রয়েছে তবুও স্বল্প সময়ে কয়েকটি হাসপাতাল প্রস্তুত করা হয়েছে করোনা চিকিতসার জন্য। ফসল কাটায় কৃষকদের সহযোগিতা করেছে সরকার। যারাই সরকারকে দায়ী করে নিত্য লিখে চলেছেন তাদের উচিত হবে দূঃসময়টি বিবেচনা করার। অসত্য অভিযোগ আর মনগড়া ভাবনা প্রকাশ করার উপযূক্ত সময় এটা নয়। এই মুহুর্তে দেশের মানূষের জীবন রক্ষা করাই করনীয়। সকলেরই উচিত হবে নিজেদের সমর্থ অনুযায়ী মানূষকে সচেতন করা। শিক্ষিত মানূষদের কাছে প্রত্যাশাটি আরো বেশী।
আজিজুর রহমান প্রিন্স
রাজনীতিবিদ, লেখক ও গবেষক
টরেন্টো, কানাডা
৬ জুন ২০২০।