ডিবিএন ডেস্কঃ পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ হেরে যতটা না কষ্ট লেগেছে বাংলাদেশের মানুষদের, তারচেয়েও বেশী কষ্ট পেয়েছে মিরপুর শেরে বাংলার গ্যালারিতে নিজ দেশের লোকেদের হাতে পাকিস্থানের পতাকা ওড়াওড়িতে। টি-টোয়েন্টি সিরিজের ফলাফলকে ছাপিয়ে আলোচনার তুঙ্গে ছিল নিজ দেশের পতাকা ছেড়ে পাকিস্তানের পতাকা ও জার্সি নিয়ে এইরকম মাতামাতির ঘটনাটি। দেখা গিয়েছে গুটিকয়েক পাকিস্থানি নাগরিকের পাশাপাশি অনেক বাংলাদেশি নাগরিকও পাকিস্থানের জার্সি পরে পতাকা হাতে উল্লাস করেছে। ১৯৭১ সালে ৩০ লক্ষ শহীদের বিনিময়ে পাওয়া স্বাধীন সোনার বাংলায় এমন ঘটনা আমাদের জন্য জাতি হিসেবে খুবই লজ্জার এবং অপমানের বিষয়। যদিও এ বিষয়টি নিয়ে গত কয়েকদিন ধরেই মিডিয়া আর সোশ্যাল সাইটে তোলপাড় চলছে।
তবে গতকাল সোমবার (২২ নভেম্বর) টি-টোয়েন্টি সিরিজের তৃতীয় এবং শেষ ম্যাচে স্বচক্ষে গ্যালারির দিকে তাকিয়ে পাকিস্থানের পতাকার ওড়াওড়ি তেমন একটা দেখা যায়নি। দুই-একজনকে দেখা গেছে যারা পাকিস্থানের জার্সি পরে পতাকা হাতে যারা পাকিস্থানের নাগরিক বলেই ধারণা করা হচ্ছে। এছাড়া বিছিন্ন কয়েকটি জায়গায় এরকম দেখা গেলেও তা নগণ্য। কিন্তু গত দুই ম্যাচে পাকিস্থানের বড় পতাকা বা অনেক পতাকা যেমন দেখা গিয়েছে শেষ ম্যাচে তেমনটা দেখা যায়নি।
শেষ ম্যাচ শুরুর আগে দেখা গিয়েছে স্টেডিয়াম গেটের সামনে ব্যানার হাতে দাঁড়িয়ে রয়েছে কিছু তরুণ। যারা পাকিস্থানি পতাকা নিয়ে স্টেডিয়ামে আসা বাংলাদেশি নাগরিকদের প্রতিরোধের ঘোষণা দেন এবং তারা গ্যালারিতে পাকিস্থানি পতাকা ও জার্সি পরিহিত যে সমস্ত বাংলাদেশি সমর্থক দেখবেন তৎক্ষণাৎ সবাইকে প্রতিহত করবেন বলেন জানায়। ‘পাকিস্থানি দালাল রুখবে তারুণ্য’ ব্যানারে অবস্থান নেওয়াদের মধ্যে একজনকে জিজ্ঞেস করলে তিনি জানান, ৩০ লাখ শহীদ ও ২ লক্ষাধিক মা-বোনের আর্তনাদের বিনিময়ে পাওয়া স্বাধীনতা। সেই স্বাধীনতার শত্রু যারা আজও রাষ্ট্রীয়ভাবে ক্ষমা চায়নি, ক্ষতিপূরণ দেয়নি। যারা আজও ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে, তাদের হয়ে এদেশীয় দালাল গোষ্ঠীকে ৭১ এর মতোই প্রতিহত করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ আমরা। গ্যালারিতে পাকিস্থানি পতাকা ও জার্সি পরা নির্লজ্জ বাংলাদেশিদের দেখলে এর উচিত শিক্ষা দিতেও আমরা পিছপা হব না।
তাদের বক্তব্য অনুযায়ী সেই রকমই দৃশ্য বাস্তবে দেখা গেল। যেসকল বাংলাদেশি নাগরিক হাতে করে পাকিস্থানি পতাকা কিংবা জার্সি নিয়ে ঢুকতে যাচ্ছিলেন তাদের দেখামাত্রই সেগুলো তারা খুলে নেন এবং অগ্নিসংযোগ করেন। যার ফলে শেষ ম্যাচে গ্যালারিতে আর চাঁদ-তারা খচিত পতাকা হাতে ও জার্সি পরিহিত বাংলাদেশিদের উল্লাস চোখে পড়েনি।
এছাড়া আসছে আগামী ২৬ নভেম্বর থেকে চট্টগ্রামে শুরু হতে যাওয়া পাকিস্থানের বিপক্ষে টেস্ট ম্যাচেও “পাকিস্থানি দালাল রুখবে তারুণ্য” সগঠনের সবাই জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে একইভাবে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করবেন বলে জানা গেছে। ইতোমধ্যে চট্টগ্রামের তরুণরাও সংগঠিত হয়ে প্রস্তুত আছেন।