মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার রাজঘাট ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডে অতিদরিদ্রদের জন্য সরকারের ভর্তুকির ১৫ টাকা কেজি দরে “খাদ্যবান্ধব কর্মসূচীর” চাল বিতরণ না করে ইউপি সদস্য দীর্ঘদিন ধরে নিজেই গিলে খাওয়ার অভিযোগ উঠেছে রাজঘাট ইউপি সদস্য সেলিম হকের বিরুদ্ধে। এ ব্যাপারে গত বুধবার (১৮ই সেপ্টেম্বর) শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন রাজঘাট ইউনিয়নের ৪ চা শ্রমিক নারী ভুক্তভোগী।
অভিযোগ সূত্রের বরাতে জানা যায়, রাজখাট ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে তাদের নাম তালিকায় থাকা সত্ত্বে খাদ্য বান্ধব কর্মসূচীর এই চাল না দিয়ে তিনি নিজেই আত্মসাৎ করে নিচ্ছেন দীর্ঘদিন যাবৎ। এমনকি চালের কার্ড পর্যন্ত তাদেরকে দেননি। অতি দরিদ্রদের এসব চাল তার মনগড়া আত্মীয় স্বজনদের নাম তালিকায় দেখিয়ে তিনি নিজেই দীর্ঘদিন ধরে গিলে খেয়ে মোটা অংকের টাকায় দোকানে বিক্রি করছেন।
অনুসন্ধানের তথ্য অনুযায়ী জানা যায়, ৭নং রাজঘাট ইউনিয়ন পরিষদের ২ং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সেলিম হক আওয়ামীলীগের ক্ষমতার দাপট খাটিয়ে খাদ্য বান্ধব চালের ডিলার এনেছেন তার আপন বড় ভাইয়ের ছেলে ফয়েজের নাম ব্যবহার করে। আর পরিচালনার দায়িত্বভার গ্রহন করেন তিনি নিজেই। আর এসব চাল তার বাসার ভিতর নিয়মিত গেইট আটকিয়ে কিছু সংখ্যক মানুষের মাঝে বিতরণ করলেও সিংহ ভাগ চালের বস্তাগুলো উধাও করেছেন। এতে ১৫ টাকা কেজি দরে চাল থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন প্রকৃত হতদরিদ্ররা। আর সুবিধার দায়িত্ব নিয়ে নিয়েছেন ইউপি সদস্য নিজে। অথচ দেশের অতিদরিদ্র পরিবারের খাদ্য সমস্যার কথা চিন্তা করে ১৫ টাকা কেজিতে চাল বিক্রি শুরু হয়। এই কর্মসূচির উদ্দেশ্যে মহৎ হলেও দুর্নীতি ও অনিয়মের কারণে তা পুরোপুরিভাবে প্রশ্ন বিদ্ধ করা হচ্ছে এ কার্যক্রমকে। এলাকাবাসী আরও জানান, প্রকৃত দরিদ্ররা এ সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এলাকার ভুক্তভোগী মানুষ।
এছাড়া এলাকার ৪জন নারী চা-শ্রমিক মঙ্গলা তাঁতী,বিনতা তাঁতী,সত্য তাঁতী, হাসিনা বেগম জানান, তাদের নামে রয়েছে কার্ড, তালিকায় রয়েছে তাদের নাম। নিয়মিত আমাদের নামের চাল উঠানো হলেও দেখা মিলেনি চালের দেখা। আমাদের চালের কার্ডটি পর্যন্ত সেলিম মেম্বার দেননি। কার্ডের জন্য তার বাড়ীতে গেলে নানান অজুহাতে বুকভরা কষ্ট ফিরত আসতে হয়। গরিবদের হক নিয়ে যারা নয়ছয় করে, দুর্নীতি করে,তাদের কঠোর শাস্তি হওয়া উচিত। অচিরেই যেন সুষ্টু তদন্ত করে ইউপি সদস্যের এই অবৈধ বেনামী খাদ্যবান্ধব ডিলার বাতিল করে উনাকে আইনের আওতায় নেওয়া হয় এমন দাবী তাদের।
এব্যাপারে শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: আবু তালেব বলেন, আমি অভিযোগ পেয়েছি রাজঘাট ইউনিয়ন পরিষদের ওয়ার্ড মেম্বার সেলিম হকের বিরুদ্ধে। এব্যাপারে আমি চেয়ারম্যানের সাথে কথা বলে তদন্ত কমিটি গঠন করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জানিয়েছি।
আজ ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | হেমন্তকাল | ২০শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি | সকাল ১০:১৬ | শুক্রবার
ডিবিএন/এসই/ মোস্তাফিজ বাপ্পি