মিনিয়াপোলিস পুলিশের হেফাজতে মৃত্যু হওয়া আফ্রিকান-আমেরিকান কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েডকে সমাহিত করা হয়েছে। মৃত্যুর দুই সপ্তাহ পর হিউস্টনে নিজের মায়ের কবরের পাশে তাকে সমাহিত করা হয়। গতকাল মঙ্গলবার তার এই শেষকৃত্য অনুষ্ঠিত হয়। পরে পারিবারিক কবরস্থানে মায়ের পাশে তাকে সমাহিত করা হয়। ওই অনুষ্ঠানে ফ্লয়েডের জীবনের নানাদিক তুলে ধরে তাকে সম্মান ও শ্রদ্ধা জানানো হয়।
একজন বাবা, ভাই, অ্যাথলেট এবং পরামর্শদাতা হিসাবে জর্জ ফ্লয়েডকে সকলেই শ্রদ্ধা, ভালবাসায় সম্মানিত করেছেন।
প্রথমে মোটরগাড়িতে করে তার মরদেহ হিউস্টন মেমোরিয়াল গার্ডেনসে নিয়ে আসা হয়। এরপর সব আনুষ্ঠানিকতা সেরে ঘোড়ার গাড়িতে করে মরদেহ পিয়ারল্যান্ড সিমেট্রিতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে নিজের মায়ের কবরের পাশে সমাহিত করা হয় জর্জ ফ্লয়েডকে।
এ সময় ফ্লোয়েডের ভাই রডনি ফ্লোয়েড গির্জার সমবেত জনতার উদ্দেশ্যে বলেন, ‘একটু দূরে কুনি হোমস, সেখানেই তিনি জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তবে বিশ্বজুড়ে প্রত্যেকে তাকে মনে রাখবে। তিনি বিশ্বপরিবর্তন করতে চলেছেন।’
ফ্লয়েডের শেষকৃত্যের সময়ে রেডিও স্টেশনগুলো নীরবতা পালন করেছে। নগর কর্মকর্তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন। নিউইয়র্কে স্টক এক্সচেঞ্জের ব্যবসায়ীরা আট মিনিট ৪৬ সেকেন্ডের জন্য লেনদেন বন্ধ রাখে। কারণ এ সময় ধরে মিনিয়াপলিসের পুলিশ অফিসার ডেরেক চৌভিন ফ্লয়েডের ঘাড়ে হাঁটু চেপে ধরে রেখেছিলে। আর তখন শ্বাস নিতে না পেরে তিনি মারা যান।
জর্জ ফ্লয়েডের প্রতি শেষ শ্রদ্ধার অনুষ্ঠানে তার প্রতি ভিডিও ম্যাসেজের মাধ্যমে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন আগামী নভেম্বরে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডনাল্ড ট্রাম্পের বিরোধী ডেমোক্রেট প্রার্থী জো বাইডেন।
তিনি বলেছেন, জর্জ ফ্লয়েডের জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত হলেই প্রকৃত অর্থে আমেরিকা সব বর্ণের মানুষের সমান বিচার নিশ্চিত করার পথে এগিয়ে যাবে।
এছাড়া জর্জ ফ্লয়েডকে নিয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের করা বিতর্কিত মন্তব্যেরও প্রতিবাদ জানান তিনি।
জর্জ ফ্লয়েডের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন ও শেষ বিদায়ের অনুষ্ঠানে বিভিন্ন তারকা, রাজনীতিকসহ প্রায় ৫০০ অতিথি উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে স্থানীয় ডেমোক্র্যাট কংগ্রেস সদস্য আল গ্রিন বলেন, ‘জর্জ ফ্লয়েডের একমাত্র অপরাধ ছিল, তিনি কৃষ্ণাঙ্গ ছিলেন।’
নাগরিক অধিকার নিয়ে কাজ করা অ্যাকটিভিস্ট আল শার্পটন বলেন, ‘ঈশ্বর তাকে এমন এক আন্দোলনের কেন্দ্রে রেখেছেন, যা পুরো বিশ্বকে পরিবর্তন করবে।’