সিলেট প্রতিনিধি: সিলেটের শাহপরান থানাধীন বিআইডিসি আল-বারাকা আবাসিক এলাকায় ৩০ একর দখলীয় খাস ভূমি জবর দখলের চেষ্টায় হামলা ও ভাংচুরের ঘটনায় ভূমিখেকো প্রভাবশালী চক্রের বিরুদ্ধে থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। গত (২২ ফেব্রুয়ারী) সোমবার সকাল ১০টার দিকে এই জমি দখলের উদ্দেশ্যে শাহজালাল উপশহরের বাসিন্দা ফয়েজ রাজা চৌধুরী (৬০) ও বিআইডিসি আল-বারাকা এলাকার বাসিন্দা মইন উদ্দিন রাজু (৩০) এর নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী হামলা করে দেয়াল ভেঙ্গে জমি দখল করার চেষ্টা করেন। তারা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে দখলীয় পরিবারগুলোকে হামলা করে উচ্ছেদের চেষ্টা চালিয়ে দেয়াল ভাংচুর করতে থাকেন। পরে তাদের চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে আসলে ওই সন্ত্রাসীরা দলবল নিয়ে দ্রুত চলে যায়।
এ হামলা ও ভাংচুরের ঘটনায় ভূমিদস্যুদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রিন্ট ও অনলাইন মিডিয়ায় একাধিক সংবাদ প্রকাশিত হয়। এরপর ভূমিদস্যু ফয়েজ রাজা চৌধুরী নিজেদের ভালো লোক প্রমাণ করতে থানায় একটি সাজানো অভিযোগ দাখিল করেন। পরে নামে মাত্র একটি ভূইফোড় অনলাইন নিউজ পোর্টালে একটি প্রতিবাদ সংবাদ প্রকাশ করান। সেই সংবাদে তিনি জমি দখলের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। অবশেষে তিনি নিজেকে প্রতিবাদ সংবাদের মাধমে নিজেকে ভূমিদস্যু প্রমাণ করলেন।
এদিকে হামলা ও ভাংচুরের ঘটনায় গত (২৩ ফেব্রুয়ারী) মঙ্গলবার থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন বিআইডিসি আল-বারাকা আবাসিক এলাকার বাসিন্দা নুর মিয়ার মেয়ে রোকসানা বেগম। অভিযোগে ভূমিদস্যু ফয়েজ রাজা চৌধুরী ও মইন উদ্দিন রাজসহ ৬জনকে অভিযুক্ত করা হয়।
অন্যান্য অভিযুক্তরা হলেন, শাহপরান থানাধীন খাদিম নগরের বাসিন্দা মৃত গিয়াস উদ্দিন চৌধুরীর ছেলে জিয়া উদ্দিন নাদের (৫৫), এয়ারপোর্ট থানাধীন আম্বরখানা হাউজিং ষ্টেট এলাকার আব্দুল রাকিব চৌধুরীর ছেলে জুবায়ের রাকিব চৌধুরীর (৫৮), একই এলাকার বাসিন্দা মৃত আব্দুল হামিদের ছেলে তোফায়েল আহমদ (৫৫), কোতোয়ালী থানাধীন মিরবক্সটুলা এলাকার বাসিন্দা আজিদ আলীর ছেলে আব্দুল খালিক (৫০)। বর্তমানে শাহপরান তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ সারোয়ার হোসেন অভিযোগটি তদন্ত করছেন।
এই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে এর আগে রোকসানা বেগম বাদি হয়ে শাহপরান (রাঃ) থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেন। যার জিডি নং-১৫১৫।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, বেশ কিছু দিন ধরে এই চক্রটি উক্ত জমি দখলের চেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। এই চক্রের পিছনে নেতৃত্ব দিচ্ছেন জামাত শিব্বিরের সিলেটের প্রথম সারির দায়িত্বশীল নেতারা। তারা ওই ভূমিখেকো চক্রকে জমি দখলের পাওয়ার দেন। যার ফলে এই সন্ত্রাসীরা বার বার দখলীয় খাস ভূমি জবর দখলের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
জানা গেছে, ২০১৬ সালে তফশীল বর্ণিত ভূমিটি মহামান্য সুপ্রীম কোট (হাই কোর্ট বিভাগ)-এ রিট পিটিশন দায়ের করা হয়। (রিট পিটিশন নং-৭৩২৬/২০১৬) যাহা বর্তমানে বিচারাধীন রয়েছে। সিলেট সদর উপজেলার মৌজা- বহর, জে. এল. নং-৭০, দাগ নং- ১৪২, খতিয়ান নং-০১, পরিমাণ-৩০.০০ একর খাস টিলা রকম ভূমি। এই জমিতে প্রায় ১৫০টি পরিবার ২২ থেকে ২৩ বছর ধরে বসবাস করে আসছে। সরকারি খাস জমি দেখে লোভ সামালাতে পারছেনা ভুমি খেকো চক্রটি। বিধায় বার বার দখলের চেষ্টা চালাচ্ছে তারা।
এই ভূমি খেকো চক্রটি কোন আইনের তোয়াক্কা না করেই যে কোন সময় বড় ধরণের হামলা চালাতে চালাতে পারে। উক্ত সন্ত্রাসীদের কবল থেকে রক্ষা পেতে প্রশাসনের নিকট আশু হস্থক্ষেপ কামনা করছেন অসহায় পরিবারের বাসিন্ধারা।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে শাহপরান তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ সারোয়ার হোসেন ভূইয়া প্রতিবেদককে বলেন, বাদি রোকসানা বেগমের অভিযোগের তদন্ত কাজ চলছে এবং উভয় পক্ষকে ডাকা হয়েছে।