বিশেষ সংবাদদাতা, শরীয়তপুর: শরীয়তপুর জেলার সদর উপজেলার চররোসুন্দী গ্রামে এক চাঞ্চল্যকর ঘটনায় এলাকা ও পাশ্ববর্তী মানুষের মধ্যে আলোচনার মূল বিষয় হয়ে উঠেছে।
খোজ নিয়ে ও ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে জানা গেছে গ্রামের ১০৪ নং মৌজার বাসিন্দা নুরজাহান বেগমের জায়গাজমি অবৈধভাবে দলিল করে নিয়েছে তারই ছোট ছেলে নুরুল আলম হাওলাদার । নুরজাহান বেগম মৃত লালচান হাওলাদারের স্ত্রী। তাদের দুই ছেলে। বড় ছেলের নাম খলীলুর রহমান হাওলাদার আর ছোট ছেলে ঘটনার নায়ক নূরুল আলম হাওলাদার । ছোট ছেলে ফিল্মী কায়দায় সবকিছু লিখে নিয়ে এখন খলীলুর রহমানের ছেলেমেয়েদের ঘর সরিয়ে নিতে চাপ প্রয়োগ করছে এবং প্রতিবাদ করার কারনে প্রান নাশের হুমকি দিয়েছে ।
নুরজাহান বেগম গত তিন বছর ধরে পুরোপুরি সঙ্গাহীন অবস্থায় মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে । হাড্ডিসার নূরজাহানের উঠে দাড়ানোর ক্ষমতা নেই। নুর জাহান বেগম নিজে শিক্ষিত ছিল তাই তিনি কোন দিন টিপসই দিয়ে কোন কাজ করেননি । তার জাতীয় পরিচয় পত্রের ও তার নিজ স্বাক্ষর রয়েছে। অথচ জমি দলিল করতে গিয়ে তার হাতের ছাপ ব্যবহার করা হয়েছে ।
এখানেও সন্দেহ পোষণ করা হয়েছে যেহেতু নুরজাহান বেগম তিন বছর যাবত জ্ঞানহীন ঘরে পড়া তাহলে কার টিপে জমি দলিল হল! এদিকে গত ১৯ ফেব্রুয়ারী নুরজাহানের নামে বসত ভিটা সহ মোট ১২ শতক জমি লিখে নিয়েছেন তারই ছোট ছেলে নুরুল আলম হাওলাদার । জমি রেজিস্ট্রি করতে জাতীয় পরিচয় পত্র প্রয়োজনীয়তা দেখা দিলে এবং সেটি না পেয়ে ভুয়া জাতীয় পরিচয় পত্র তৈরি করে জমি রেজিস্ট্রি করে নেয় । আসল পরিচয় পত্র থেকে জানা যায় জমি রেজিস্ট্রি করতে যে আইডি ব্যবহার করা হয়েছে তার সাথে আসলের কোন মিল নেই এমনকি নুরজাহানের মায়ের নাম কাকলি বিবি এর স্থলে লেখা হয়েছে হাজেরা বেগম তার স্বামীর নামের স্থলেও যা লেখা হয়েছে তাও সঠিক নয় । ভুয়া জাতীয় পরিচয় পত্রের নম্বার হল ১৯৩০৮৬১৬৯৭৬১০৮৪৫৬ জন্ম তারিখ দেয়া হয়েছে ১৭ সেপ্টেম্বর ১৯৩০ যা সম্পূর্ন ই ভুয়া। প্রকৃত পক্ষে নুরজাহান বেগমের জন্ম তারিখ ও সাল ঐটা নয় । কৌশলগত কারনে এখানে সঠিকটি উল্লেখ করা হল না ।
অনুসন্ধান করে আরো জানা গেছে, নুরুল আলমকে জাতীয় পরিচয়পত্র নকল করার কাজে সহযোগীতা করেছেন তারই পুত্র বধু প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষিকা আয়েশা আক্তার ও মজিবর হাওলাদার।
নুরুল আলম হাওলাদারের কাছে গ্রাম্য সালিশ কারীদের মধ্যে দুজনকে পাঠানো হলে তিনি তাদের কাছে জাতীয় পরিচয় পত্রের প্রতারনার কথা স্বীকার করেন । এবং বলেন জাতীয়পরিচয় পত্র ছাড়া জমি রেজিস্ট্রি করা সম্ভব ছিল না তাই নকল করে বানিয়ে নিয়েছি তাতে কি হয়েছে? সঙ্গাহীন মায়ের নিকট থেকে জমি নেওয়ার কারন জিজ্ঞেস করলে গ্রাম্য মাতব্বরদের বলেন মা আমাকে আগেই জমি দিতে চেয়েছিল তাই নিয়েছি।
জাতীয় পরিচয়পত্র নকল তৈরি করার কারনে ও জাল দলিল করার কারনে পৃথক দুটি মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।