মোঃ মোস্তাফিজুর রহমানঃ সাধারণ অর্থে, যে কোনো কর্মপ্রচেষ্টাই উদ্যোগ। আর তেমন ভাবনা থেকেই শুরু করেছেন খামার, হতে শুরু করেছেন একজন উদ্যোক্তা। বলছিলাম ঢাকার ৪৯ নং ওয়ার্ড কাওলার নামাপাড়া এলাকার মোঃ কাওসার মিয়া’র কথা।
কাওসার মিয়া শান্ত-মারিয়াম ইউনিভার্সিটি অব ক্রিয়েটিভ টেকনোলজি থেকে বিবিএ (অনার্স ) শেষ করার পর কিছুদিন চাকরি করার পর তা ছেড়ে দিয়ে অনেকটা শখের বসে শুরু করেন ছাগল ও হাঁস-মুরগীর খামার। অবস্থা সম্পন্ন পরিবারের ছেলে হওয়ায় সত্ত্বেও একমাত্র নিজেকে আত্ননির্ভরশীল করার উদ্দেশেই তাঁর এই উদ্যোগ। প্রথমে শখের বসে কিনে ফেলেন ১ লাখ টাকার দেশী জাতের ছাগল। তারপর কিছু হাঁস, কিছু মুরগী। নিজেদের বসতবাড়ির অভ্যন্তরেই অল্প একটু জায়গায় দুটি রুম করে তার মধ্যেই শুরু করেছেন নিজের ছোট্ট এই খামার।
খামারের ব্যাপারে মোঃ কাওসার মিয়ার কাছে জানতে চাইলে বলেন, হাঁস-মুরগী ও ছাগল পালন অনেকটা শখের বসেই করি আমি। আমার এটা করতে ভালো লাগে। পড়াশুনা শেষ করে প্রথমে কয়েক জায়গায় চাকরী করা শুরু করি। কিন্তু কেন জানি কোন ধরণের আত্নতৃপ্তি পাচ্ছিলাম না। যার কারনে চাকরী ছেড়ে নিজেকে শখের কাজে নিবেদিত করলাম। আমার এই ছোট্ট খামার থেকে এখন যা পাচ্ছি তাতে নিজেদের প্রয়োজন মিটছে। আশাপাশের সবাইকে এখন হাস-মুরগীর ডিম উপহার দিচ্ছি। আর ঢাকায় খামার করা সম্ভব হয়ে উঠে না এ চিন্তাটা ভুল। নিজের আশা, সপ্ন আর পরিশ্রমে অল্প জায়গাতে খামার গুছিয়ে করা সম্ভব। আমি আশা করি ইনশাল্লাহ আমার এই সপ্নের খামার একদিন অনেক বড় হবে।
চাকরীর পিছনে ছুটে যারা হয়রান হচ্ছেন তাদের উদ্দেশ্য করে মোঃ কাওসার মিয়া বলেন, যারা কোন কাজ পাচ্ছেন না তারা বসে না থেকে অল্প কিছু পুঁজি দিয়ে ছোট করে আমার মতো করে খামারের উদ্যোগ নিতে পারেন। আমি আশা করি কেউ নিরাশ হবেন না, যদি নিজের সবটুকু ইচ্ছা শক্তি কাজে লাগিয়ে এতে নিজেকে নিয়োজিত করেন। উচ্চশিক্ষিত হয়ে শুধু চাকরি করতে হবে এই কথা ঠিক না। বরং লেখাপড়া জানা মানুষদেরই কৃষি পেশায় আশা উচিত। চাকরি করে শুধু নিজের পরিবার চালানো সম্ভব। কিন্তু একজন ভালো উদ্যোক্তা কিংবা সফল খামারি নিজে স্বাবলম্বী হওয়ার পাশাপাশি অন্যদেরও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পারবেন বলে আমি মনে করি।
তবে অনেকের কাছে কাওসারের আয় খুব মামুলি মনে হওয়াটা স্বাভাবিক। কিন্তু তিনি নিজে খুবই সন্তুষ্ট। নিজের পরিশ্রমে গড়ে উঠা এই খামার থেকে তিনি যা-ই পাচ্ছেন তার মূল্য অনেক বেশি যা আমারা সাধারণত বুঝতে পারি না।