লেবাননের বৈরুতের ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনার জেরে লেবাননে রাজনৈতিক সঙ্কট ক্রমশই ঘণীভূত হচ্ছে। রবিবার কয়েক ঘন্টার ব্যবধানেই বিস্ফোরণ রুখতে সরকারি ব্যর্থতার দায় নিয়ে পদত্যাগ করেছেন দেশের তথ্যমন্ত্রী মানাল আবদেল সামাদ ও পরিবেশ মন্ত্রী দামিয়ানোস কাত্তার।
এদিকে দুই মন্ত্রীর পদত্যাগের ফলে যথেষ্টই চাপে পড়েছেন প্রধানমন্ত্রী হাসান দিয়াব। ইতিমধ্যেই প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবি তুলে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন লেবাননের কয়েক হাজার নাগরিক।
গত ৪ অগস্ট বৈরুতে বন্দর এলাকার গুদামে রাখা অ্যামোনিয়াম নাইট্রেটে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় রবিবার পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন ১৫৮ জন। আহত হয়েছেন ছয় হাজারের বেশি মানুষ। আর গৃহহীন হয়েছেন তিন লক্ষেরও বেশি বাসিন্দা। কার্যত বৈরুতের অধিকাংশ এলাকাই বিস্ফোরণে ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে। বিস্ফোরণের পর থেকেই দেশের প্রধানমন্ত্রী হাসান দিয়াবের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।
শনিবার বিদেশ মন্ত্রণালয় সহ বেশ কয়েকটি সরকারি অফিসে হামলা চালায় সরকার বিরোধী বিক্ষোভকারীরা। পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষে ৬৫ জনের মতো বিক্ষোভকারী আহত হয়েছেন। পুলিশের এক আধিকারিকেরও মৃত্যু হয়েছে। বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস চালাতে হয় পুলিশকে।
একদিকে যখন বিক্ষোভের আগুনে পুড়ছে লেবানন ঠিক তখনই রাজনৈতিক সঙ্কট আরও গভীর হচ্ছে। বিস্ফোরণের ঘটনায় সরকারি ব্যর্থতার অভিযোগ তুলর ইতিমধ্যেই পদত্যাগ করেছেন ছয় সাংসদ। আর এদিন সকালে ব্যর্থতার দায়ভার কাঁধে নিয়ে পদত্যাগ করেছেন দেশের তথ্যমন্ত্রী মানাল আবদেল সামাদ। টেলিভিশনে দেওয়া এক সংক্ষিপ্ত ভাষণে তিনি বলেন, ‘বৈরুতের বিস্ফোরণের ঘটনায় আমি লেবাননের আমজনতার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি। আমরা তাদের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারিনি।’
তথ্যমন্ত্রীর পদত্যাগের কয়েক ঘন্টার মধ্যে ইস্তফা দেন পরিবেশ মন্ত্রী দামিয়ানোস কাত্তার। প্রধানমন্ত্রীর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত কাত্তারের পদত্যসাগে কিছুটা হলেও হতচকিত রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।
সূত্রের খবর, ঘনিষ্ঠ পরিবেশমন্ত্রী যাতে পদত্যাগ না করেন, সেই চেষ্টা চালিয়েছিলেন হাসান দিয়াব। কিন্তু তাতে লাভ হয়নি। পদত্যাগের সিদ্ধান্ত থেকে পিছু হঠানো যায়নি কাত্তারকে।
এদিকে, লেবাননের প্রধানমন্ত্রী হাসান দিয়াব বলেছেন, আগাম সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমেই কেবল বর্তমান সংকট থেকে উত্তরণ সম্ভব।