ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধিঃ সন্তানরা থাকেন ঢাকায়। ভাইয়েরাও অতিদরিদ্র। তাই কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী হাসপাতালে মারা যাওয়া বৃদ্ধা ফাতেমা বেওয়া (৬৫)’র লাশ নিতে আসেন নি কেউই। পরে সেই লাশ দাফন করেছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। শনিবার রাত ১১ টার দিকে ফুলবাড়ী কেন্দ্রীয় কবরস্থানে তার লাশ দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
জানা গেছে, বছর খানেক আগে ফাতেমা বেওয়ার স্বামী আজাহার আলী মারা যান। আপনজন না থাকায় স্বামীর বাড়ী লালমনিহাটের ছিনাই এলাকা থেকে উপজেলার বিলুপ্ত ছিটমহল দাসিয়ারছড়ার সমন্বয় পাড়ায় ভাইয়ের বাড়িতে চলে আসেন তিনি। তার তিন ভাই অতি দরিদ্র। আর এক ছেলে এক মেয়ে অনেক আগে থেকে পরিবার নিয়ে ঢাকয় থাকেন। মায়ের দেখভাল করেন না। প্রায় দেড় মাস আগে অসুস্থ্য হয়ে ফুলবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন ফাতেমা বেওয়া। অসুস্থ থাকাকালীন সময়েও কোন আপনজন বা আত্মীয়স্বজন হাসপাতালে তাকে দেখতে আসেননি কোনদিন। এক পর্যায়ে শনিবার বিকাল সাড়ে ৫ টার দিকে মারা যান তিনি।
এদিকে মারা যাওয়ার পর বৃদ্ধার লাশ নেয়ার জন্য পরিবারের কাউকে খুজে পাওয়া যাচ্ছিলনা। এ খবর জানাজানি হলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তার ভাইদের সাথে যোগাযোগ করলেও তারা লাশ নিতে অনিহা প্রকাশ করেন। পরে উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসানের নেতৃত্বে নেতাকর্মীরা বৃদ্ধার লাশ দাফনের উদ্যোগ নেন। রাত সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স মসজিদের সামনে জানাযা শেষে কেন্দ্রীয় কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান জানান, বৃদ্ধা দেড় মাস ধরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। এ দীর্ঘ সময়ে কোন আত্মীয়-স্বজন তাকে দেখতে আসেনি। মৃত্যুর পরেও কেউ লাশ নিতে চাচ্ছে না । তাই আমরা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা দাফন-কাফনের ব্যবস্থা করেছি।
ফুলবাড়ী হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক ডা. উম্মে হাফসা জানান, ওই বৃদ্ধা প্রায় দেড় মাস ধরে চিকিৎসাধীন ছিলেন। কেউ একজন ভর্তি করে গেছেন। নানারোগে ভুগছিলেন তিনি। শনিবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে তিনি মারা যান। পরে রাতে ছাত্রলীগের ছেলেরা তার দাফনের ব্যবস্থা করে।