করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে চলছে লকডাউন। আমাদের দেশের কয়েক দফা ছুটির মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। ফলে বেশিরভাগ দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। তাই চাইলেই যখন তখন খাবার কিনে আনা যাচ্ছে না।
কিন্তু শুধু কিনলেই তো হবে না। কীভাবে সেসব সংরক্ষণ করবেন, তা না জানলে তো এগুলো দ্রুত নষ্ট হয়ে যাবে, বিশেষ করে দুধ, পাউরুটি বা সবজির মতো দ্রুত পচনশীল দ্রব্য। তাই ফ্রিজে বা বাইরে যেখানেই রাখুন, প্রতিটা জিনিসেরই সংরক্ষণ করার কিছু নিয়মকানুন আছে।
তাহলে জেনে নিন কোন কোন উপায়ে এবং কিভাবে সংরক্ষণ করলে কেনা জিনিস নষ্ট হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না-
দুধঃ ডিপ ফ্রিজের নীচে যে ট্রে থাকে তাতে রাখুন দুধের প্যাকেট। পাঁচ দিন দুধকে টাটকা রাখতে পারে এই ট্রে। পুরনো নকশার ফ্রিজ হলে সরাসরি ডিপ ফ্রিজেও ভরে রাখতে পারেন দুধের প্যাকেট। তবে দুধ কেনার আগে অবশ্যই এর এক্সপায়ারি ডেট দেখে কিনবেন।
পাঁউরুটিঃ দু’-এক দিনের জন্য পাউরুটি টাটকা রাখতে চাইলে বাইরের তাপমাত্রায় রাখুন। তবে বেশি দিনের জন্য ভালো রাখতে চাইলে ফ্রিজে মজুত রাখুন তা। প্যাকেট থেকে খুলে ব্রাউন পেপারে মুড়ে বা ব্রেড বক্সেই মজুত রাখুন পাউরুটি। এতে মেয়াদ না ফুরনো অবধি টাটকা থাকে তা। আর ব্রাউন পেপারে মুড়ে রাখলে খুব শক্ত করে প্যাকেটের মুখ বাঁধুন।
ক্যাপসিকাম, টম্যাটো ও ব্রকোলিঃ দিন চারেকের জন্য রাখতে চাইলে বাইরেই রাখতে পারেন এদের। তবে দিন সাতেকের জন্য সংরক্ষিত করতে চাইলে মানতে হবে কিছু নিয়ম। ক্যাপসিকাম ও ব্রকোলিকে মাঝারি টুকরো করে কেটে নিন। টম্যাটোকে চার টুকরো করে কেটে নিতে হবে। এর পর একটা প্লেটে এই কাটা সব্জিগুলো এমন ভাবে রাখুন যেন একটার উপর একটা টুকরো না থাকে। প্লেটটি ঢেকে ফ্রিজে রেখে দিন। ভাল থাকবে সব্জি।
কাঁচামরিচঃ কাঁচামরিচ ভাল রাখতে চাইলে একটি কাগজে মুড়ে ফ্রিজে রেখে দিন। তবে এই ভাবেও দিন চারেকের বেশি ভাল রাখা কঠিন। কাঁচামরিচের সঙ্গে লবন মিশিয়ে তাকে মিক্সিতে বেটে নিলে যে লঙ্কাবাটা পাবেন, তাকে সংরক্ষণ করা সহজ। কোনও এয়ারটাইট কৌটোয় এটি রেখে ডিপ ফ্রিজে রেখে দিলে টাটকা থাকবে বহু দিন।
গাজরঃ ছোট ছোট টুকরো করে কেটে ফুটন্ত গরম জলে ২ মিনিট ফুটিয়ে নিন। এবার ঠান্ডা পানিতে ডুবিয়ে রাখুন মিনিট পাঁচেক। এরপর একটা প্লেটে কাটা টুকরো পর পর ছড়িয়ে ফ্রিজে রাখতে হবে। তবে রাখতে হবে, যেন একটার উপর আর একটা টুকরো না থাকে।
পালংশাকঃ ফুটন্ত গরম জলে দু’মিনিট ফুটিয়ে অথবা ব্লাঞ্চ করে, ঠান্ডা পোনিতে ডুবিয়ে রাখুন। এরপর ভাল করে পানি নিংড়ে, শাক কেটে একটি এয়ারটাইট কৌটোয় ভরে ডিপ ফ্রিজে রাখুন। ভাল থাকবে দিন সাতেক।
ধনেপাতাঃ ভাল করে ধুয়ে পানি শুকিয়ে নিতে হবে প্রথমেই। এরপর অল্প পরিমাণে পাতা ভাগ করে কয়েকটা পেপার টাওয়েল অথবা খবরের কাগজে মুড়ে ভাগে ভাগে প্যাক করে ফ্রিজে রাখতে পারেন। অথবা পাতাগুলো ধুয়ে শুকিয়ে একেবারে তরকারিতে দেয়ার মতো করে কেটে নিন। এরপর ফ্রিজে একটা বক্সে করে রাখুন। এভাবেও বেশ কিছুদিন ব্যবহার করা যাবে ধনেপাতা।
আলু্ঃ এই সবজি কখনই ফ্রিজে রাখবেন না। বরং ঝুড়িতে খোলা বাতাসে রাখুন। তবে অন্যান্য সব্জির সঙ্গে না রেখে আলুর জন্য আলাদা একটা ঝুড়ি বরাদ্দ করুন। তাতে ভাল থাকবে বেশি দিন।
পেঁয়াজঃ একই কথা পেঁয়াজের বেলাতেও। আলাদা ঝুড়িতে ছড়িয়ে রাখুন। অনেক দিন ভালো থাকবে। তবে আলু ও পেঁয়াজ রান্নার জন্য নেয়ার সময় একটু খেয়াল করবেন। যেগুলো নষ্ট হওয়ার সম্ভবনা আছে সেগুলো সরিয়ে রাখবেন। অর্থাৎ মাঝে মাঝেই আপনাকে খেয়াল করতে হবে।