মহামারি করোনার কারনে লকডাউন থাকা সত্তেও দেশের প্রিয়জনদের কাছে রেমিট্যান্স পাঠাতে অনলাইন-টু-ওয়ালেট সেবার উপর ভরসা রাখছেন প্রবাসী বাংলাদেশীরা।
প্রাপক গ্রাহক উভয়ই ঘরে অবস্থান করায়, অর্থ প্রেরণকারী বাইরে না গিয়ে তার নিজের মোবাইল থেকে অনলাইন অথবা ওয়ালেট ভিত্তিক মানি ট্রান্সফার সেবা থেকে নির্ধারিত ব্যাংকিং চ্যানেল হয়ে দেশে তার স্বজনের বিকাশ একাউন্টে টাকা পাঠাচ্ছেন। ফলে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে এই সময়ে বিকাশ অ্যাকাউন্টে রেমিট্যান্স আসার পরিমান অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে।
সোমবার (২০ এপ্রিল) বিকাশের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, জানুয়ারি থেকে ১৮ এপ্রিল পর্যন্ত বিকাশের মাধ্যমে ১৩৮ কোটি টাকার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। বিকাশ দেশের ৬টি বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের তত্ত্বাবধানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে রেমিট্যান্স গ্রহণের সেবা দিয়ে যাচ্ছে।
কোভিড-১৯ এর এই পরিস্থিতিতে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে অনলাইন ও ওয়ালেট ভিত্তিক মানি ট্রান্সফার প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে চলতি বছরের প্রথম তিন মাসের (জানুয়ারি-মার্চ) তুলনায় এপ্রিল মাসে গড়ে প্রতিদিন ১৫০ শতাংশ পর্যন্ত বেশি রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা।
বিকাশে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স আসে মালেশিয়া, সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ কোরিয়া, মধ্যপ্রাচ্য, ইউরোপ ও যুক্তরাজ্য থেকে। ভ্যালইউ, হানপাস, জিমানি এর মত ওয়ালেট ভিত্তিক সেবা প্রতিষ্ঠানের সাথে বিকাশের কৌশলগত অংশীদ্বারিত্বের ফলে, কোভিড-১৯ এর এই সময়েও এ সব দেশে অবস্থানরত প্রবাসীরা তাদের মোবাইল ওয়ালেট থেকে কয়েক মুহুর্তেই দেশে স্বজনদের বিকাশ অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠাতে পারছেন।
এই কঠিন সময়েও ওর্য়াল্ড রেমিট, ট্রান্সফারওয়াইজ, রিয়া, গালফ এক্সচেঞ্জ, বাহরাইন ফিন্যান্স কোম্পানি-বিএফসি, ব্র্যাক সাজন, সিবিএল মানি ট্রান্সফার, অগ্রণী এক্সচেঞ্জ, এনবিএল এক্সচেঞ্জসহ বিশ্বের শীর্ষ ৩৪টি মানি ট্রান্সফার প্রতিষ্ঠানের সাথে বিকাশের অংশীদ্বারিত্বের সুবাদে ৮০টির বেশী দেশ থেকে সহজেই বাংলাদেশে প্রিয়জনের কাছে অর্থ পাঠাতে পারছেন প্রবাসীরা।
এদিকে, প্রেরিত অর্থের ওপর সরকার ঘোষিত ২% আর্থিক প্রণোদনা এই কঠিন পরিস্থিতির মধ্যেও প্রবাসীদের মোবাইল ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠানোতে আরো বেশী উদ্বুদ্ধ করছে।
এছাড়াও, যেসব প্রবাসীরা বিকাশের মাধ্যমে রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছেন- তাদের জন্য বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবার উদ্যোগ নিয়েছে বিকাশ ও ডিজিটাল হেলথকেয়ার। এই কার্যক্রমের আওতায় প্রবাসীর পরিবারের সদস্যরা ঘরে থেকেই জরুরী প্রয়োজনে তিন মাসে ৯০ মিনিট পর্যন্ত ফোনে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের সেবা নিতে পারবেন।
যাদের হাসপাতালে ভর্তি হতেই হবে তারা পরবর্তীতে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর সর্বোচ্চ ৮ হাজার টাকা পর্যন্ত নগদ সহায়তা পেতে পারবেন।
কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগি যারা বাড়িতে অবস্থান করে সেবা নিচ্ছেন তারা ২০০০টাকা এই প্যাকেজের আওতায় সহায়তা দাবী করতে পারবেন। দূর্ভাগ্যজনক ভাবে মৃত্যু হলে অ্যাকাউন্টধারী ব্যক্তির নমিনিকে দশ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে এই প্যাকেজের আওতায়।
প্রবাসীদের স্বজনদের নিরাপদ রাখতে বিকাশ একাউন্টে যেসব গ্রাহক রেমিট্যান্স পান তাদের কাছ থেকে আইভিআর কলের মাধ্যমে এই ইন্স্যুরেন্স সেবা গ্রহণের সম্মতি নিয়ে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে সেবাগুলো দেয়া হচ্ছে। গ্রাহক সম্মতি দিয়ে নিবন্ধনের পুরো প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করেই কেবল সেবাটি নিতে পারবেন।