বিশ্বব্যাপী মহামারি করোনাভাইরাসে মন্দা অবস্থায় অর্থনীতি। বিশ্বব্যাপী এ সংকটময় পরিস্থিতিতেও দেশের অর্থনীতিতে স্বস্তি দিচ্ছে প্রবাসীদের আয় (রেমিট্যান্স)।
মে মাসের ২৮ দিনে দেশে ১৩৩ কোটি ৫০ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছে প্রবাসী বাংলাদেশিরা। বাংলাদেশি মুদ্রায় (বিনিময় হার ৮৫ টাকা ধরে) যার পরিমাণ ১১ হাজার ৩৪৭ কোটি টাকা। রবিবার (৩১ মে) কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, করোনাভাইরাস রোধে লকডাউনের কারণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে থাকা অনেক প্রবাসীর আয় বন্ধ হয়ে যায়। আবার অচলাবস্থার কারণে অনেকে দেশে টাকা পাঠাতে পারেননি। এসব কারণে গত দুই মাস রেমিট্যান্স কমেছে। তবে ধীরে ধীরে এখন বিশ্ব পরিস্থিতি উন্নত হচ্ছে। অনেক দেশ স্বাভাবিক হয়েছে। চালু হচ্ছে ব্যবসা-বাণিজ্য। তাই ঈদের মাসে প্রিয়জন ও আত্মীয়-স্বজনদের জন্য ধার-দেনা করে হলেও রেমিট্যান্স পাঠায় প্রবাসীরা। যার ফলে মাহামারিতে কোণঠাসায় থাকা অর্থনীতিতে স্বস্তি দিচ্ছে রেমিট্যান্স।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যানুসারে, চলতি বছরের মে মাসের ২৮ দিনে রেমিট্যান্স এসেছে ১৩৩ কোটি ৫০ লাখ ডলার। যা তার আগের মাস এপ্রিলের চেয়ে প্রায় ২৫ কোটি ডলার বেশি। এপ্রিলে রেমিট্যান্স এসেছিল ১০৮ কোটি ৬৪ লাখ ডলার। যা গত ৩০ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। এর আগে গত ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ৮৫ কোটি ৬৮ লাখ ডলার দেশে পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা।
চলতি বছরের মার্চ মাসে ১২৭ কোটি ৬২ লাখ ডলার রেমিট্যান্স আসে। যা গত বছরের মার্চ মাসের চেয়ে সাড়ে ১২ শতাংশ কম। গত বছরের মার্চে রেমিট্যান্স আসে ১৪৫ কোটি ৮৬ লাখ ডলার।
এদিকে রেমিট্যান্সে সরকার ঘোষিত ২ শতাংশ প্রণোদনা সহজে যেন পান সে জন্য বেশকিছু শর্ত শিথিল করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এতদিন দেড় লাখ টাকা পর্যন্ত রেমিট্যান্সের প্রণোদনায় কোনো ধরনের কাগজপত্র লাগত না।
তবে গত ১ জুলাই থেকে প্রবাসীদের পাঠানো পাঁচ হাজার মার্কিন ডলার বা পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত রেমিট্যান্সে বিনা শর্তে কোনো ধরনের কাগজপত্র ছাড়াই প্রণোদনার অর্থ প্রদান করা হচ্ছে। পাশাপাশি পাঁচ লাখ টাকার ওপরে কাগজপত্র জমা দেয়ার সময় বাড়ানো হয়েছে। এতদিন প্রণোদনা পেতে হলে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স প্রাপক ওঠানোর ১৫ দিনের মধ্যে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিতে হতো। এখন তা বাড়িয়ে দুই মাস করা হয়েছে।