আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ রাশিয়ার তেল-গ্যাস ও কয়লা আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এই ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম ৫ দশমিক ৬ শতাংশ বেড়ে ব্যারেল প্রতি ১৩০ দশমিক ১৩ মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে।
মঙ্গলবার হোয়াইট হাউজে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেন, আমরা রাশিয়া থেকে তেল এবং গ্যাসসহ সব ধরণের জ্বালানি পণ্য আমদানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছি। এর অর্থ আমেরিকার বন্দরগুলো আর রাশিয়ার তেল ঢুকতে দেবে না এবং আমেরিকার জনগণ পুতিনের যুদ্ধ মেশিনে আরেকটি শক্তিশালী আঘাত করবে।
প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেন, আমি আগে যখন এই নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে কথা বলেছিলাম, তখনই বলেছিলাম, স্বাধীনতার জন্য মূল্য দিতে হয়। এই স্বাধীনতার জন্য আমাদেরও মূল্য দিতে হচ্ছে। ডেমোক্রেটিক পার্টি ও রিপাবলিকান পার্টি- দুই দলের নেতারাই এটা বুঝেছেন। তাঁরা এ বিষয়ে স্পষ্ট যে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে হবে।
বাইডেন বলেন, ধারণা করছি, পুতিন যুদ্ধের’ কারণে কিছু কিছু জিনিসের দাম আরো বাড়বে। আমেরিকার জনগণের ওপর তার প্রভাব যেন সর্বনিম্ন থাকে তা নিশ্চিতে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি।
নিজের দেশের গ্যাস কোম্পানিগুলোকে সতর্ক করে বাইডেন বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিকে কাজে লাগিয়ে যদি কেউ বেশি মুনাফা লাভের আশায় অতিরিক্ত মূল্য বৃদ্ধি করে তবে তার কঠোর মূল্য দিতে হবে।
এদিকে ২০২২ সালের শেষ নাগাদ পর্যায়ক্রমে রাশিয়া থেকে তেল এবং জ্বালানি পণ্য আমদানি বন্ধ করবে ব্রিটেন। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন মঙ্গলবার বলেছেন, রাশিয়ার উপর তাদের তেল এবং জ্বালানি পণ্যের নির্ভরতা কমাতে যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশগুলোর সঙ্গে যোগ দিচ্ছে তাঁর দেশ।
অন্যদিকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা জারি করেনি এখনো। জার্মানিসহ ইউরোপের অনেক দেশই রাশিয়ার গ্যাসের ওপর নির্ভরশীল। ইউরোপীয় কমিশন জানিয়েছে, তারা রাশিয়ার তেল ও গ্যাসের ওপর নির্ভরশীলতা ২০৩০ সালের আগেই শেষ করে দেবে।
উল্লেখ্য, রাশিয়া বিশ্বের শীর্ষ প্রাকৃতিক গ্যাস উৎপাদনকারী দেশ, অপরিশোধিত তেল উৎপাদনে তাদের অবস্থান দ্বিতীয়। ২০২১ সালে বিশ্বের মোট তেলের ১৪ শতাংশ এসেছে রাশিয়া থেকে। রাশিয়ার মোট তেল রপ্তানির ৬০ শতাংশ যায় ইউরোপে, ৩৫ শতাংশ যায় এশিয়ায়।