একেএম কামাল উদ্দিন টগর, নওগাঁ জেলা প্রতিনিধিঃ নওগাঁর রানীনগরে যৌতুকের দাবীতে নির্যাতনের ঘটনায় ‘জাতীয় জরুরি সেবা-৯৯৯’ এ ফোন দিয়ে এক গৃহবধুকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।
গেল মঙ্গলবার (২০ এপ্রিল) উপজেলার পারইল ইউনিয়নের করজগ্রাম থেকে সুরাইয়া বানু শিখা (২৪) ও তার মেয়েকে উদ্ধার করা হয়। তার বাবার বাড়ি একই ইউনিয়নের বড়গাছা গ্রামে।
গতকাল বুধবার দুপুরে (২১এপ্রিল) এ ব্যাপারে ভুক্তভোগীর বড় ভাই আবু সিফাত তার বোনের স্বামী, শশুর, শ্বাশুড়ি ও স্বামীর বড় ভাইয়ের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেছেন।
ভুক্তভোগীর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, গত চার বছর আগে উপজেলার করজগ্রাম গ্রামের সখিন আলী ছেলে রুবেল হোসেন এর সঙ্গে বড়গাছা গ্রামের মৃত আব্দুস সালামের মেয়ে সুরাইয়া বানু শিখার সঙ্গে পারিবারিক ভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের সময় যৌতুক হিসেবে নগদ ২লাখ টাকা ও তিন ভরি স্বর্ণসহ বিভিন্ন আসবাবপত্র দেওয়া হয়। এরই মধ্যে তাদের সংসারে সাত মায়ের মেয়ে সন্তানের জন্ম হয়। বিয়ের পর থেকে রুবেল হোসেন সাত লাখ টাকা যৌতুক দাবী করে বিভিন্ন সময় শিখার ওপর নির্যাতন করত। এছাড়া রুবেল হোসেন মোবাইলে বিভিন্ন মেয়েকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে প্রেম করে বলেও অভিযোগ করা হয়।
সর্বশেষ গত মঙ্গলবার সকাল ১০ টার দিকে গৃহবধু শিখা তার ভাইকে মোবাইলে ফোনে জানায় তাকে আবারও শারীরিক ভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। এছাড়া শশুরের সহযোগীতায় শ্বাশুড়ি রোকেয়া ও ভাসুর রফিকুল হোসেন হাত-পা ধরে এবং স্বামী রুবেল হাসুয়া দিয়ে তাকে জবাই করে প্রাণে মেরে ফেলার চেষ্টা করে। তার ডাক চিৎকারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এসে তাকে উদ্ধার করে। ঘটনার পর গৃহবধুর বড় ভাই আবু সিফাত ‘জাতীয় জরুরি সেবা-৯৯৯’ নম্বরে ফোন দিয়ে পুলিশের সহযোগীতায় তার বোন ও ভাগ্নীকে উদ্ধার করে বাড়ি নিয়ে যায়।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত রুবেল হোসেন বলেন, আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ সম্পূর্ন বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। আমাকে সামাজিক ভাবে হেয় প্রতিপন্ন করতে ও পরিকল্পিত ভাবে ফাঁসানো চেষ্টা করা হচ্ছে।
রানীনগর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রুবেল হোসেন বলেন, মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ফোন পেয়ে ঘটনাস্থলে যায়। সেখানে গিয়ে ভুক্তভোগীর কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি তার ভাইয়ের সঙ্গে যেতে চান। এরপর তার স্বামীর (রুবেল হোসেন)
কাছে জানতে চাই- তোমার স্ত্রীতো চলে যেতে চাই। উত্তরে সে বলে যাক। পরে গৃহবধু তার ভাইয়ের সঙ্গে চলে যান। তাদেরকে থানায় গিয়ে আইনগত পদক্ষেপ নেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়।
রানীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহিন আকন্দ বলেন, এ ব্যাপরে থানায় একটি অভিযোগ হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।