ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈলে মাঠের পর মাঠ শুধু হলুদের বিশাল গালিচা, যতো দূরে চোখ পড়ে শুধু হলুদ আর হলুদ। গতকাল উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে প্রতিটি মাঠ জুড়ে সরিষা ফুলের মৌ মৌ গন্ধে মুখরিত ফসলের মাঠ। শীতের শিশির ভেজা সকালে কুয়াশার চাদরে ঘেরা বিস্তীর্ন প্রতিটি মাঠ যেন হলুদ বর্ণে ঘেরা এক স্বপ্নীল পৃথিবী। যেদিকে তাকাই শুধু সরিষা ফুলের হলুদ রঙের চোখ ধাঁধাঁলো বর্ণীল সমারোহ। মৌমাছির গুণগুণ শব্দে সরিষা ফুলের রেণু থেকে মধু সংগ্রহ আর প্রজাপতির এক ফুল থেকে আরেক ফুলে পদার্পণ এ অপরুপ প্রাকৃতিক দৃশ্য সত্যিই যেন মনো মনমুগ্ধকর এক মুহূর্ত। ভোরের বিন্দু বিন্দু শিশির আর সকালের মিষ্টি রোদ ছুঁয়ে যায় সেই ফুলগুলোকে। ভালো ফলনের আশায় উপজেলার কৃষকেরা রাতদিন পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। কৃষকের পাশাপাশি বসে নেই কৃষি কর্মকর্তারাও।
নন্দুয়ার ইউনিয়নের, আমজাদ আলী, বাচোর ইউনিয়নের মাহাতাব হোসেন, লেহেম্বা ইউনিয়ের রওশন আলী, হোসেনগাঁও ইউনিয়নের গোলাম রব্বানী এবং ধর্মগড় ইউনিয়নের আজিরন বেওয়া বলেন, আমরা সরিষা চাষ কেরেছি খরচ তেমন নেই। শুধু গৌবর সার দিয়ে জমি চাষের পর বীজ ছিটিয়ে দিতে হয়। তারপর গাছ বড় হলে দিতে হয় সেচ। সার বা কীটনাশক তেমন একটা দিতে হয় না। এ কারণে সরিষা চাষে অনেক লাভ। তাছাড়া এলাকার অনেক চাষি উচ্চফলনশীল জাতের সরিষা বীজ বিনামূল্যে পেয়ে আবাদ করেছেন।
কেমন ফলন আশা করছেন? জিঞ্জাসা করলে মুচকি হেসে তারা বলেন, বিঘা প্রতি ৬ থেকে ৮ মন তো হবেই ইনশাল্লাহ।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সঞ্জয় দেবনাথ বলেন, সরিষা একটি লাভজনক ঝুঁকিমুক্ত ফসল। সরিষার আবাদ বৃদ্ধিতে সরকার কৃষকদের বীজ, সার ও পরামর্শ দিয়ে উদ্বুদ্ধ করছে। সরিষা চাষ সম্প্রসারণের জন্য কৃষি বিভাগ অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছে। সরকারিভাবে এবার প্রায় ৫ হাজার ৩শ জন কৃষককে বীজ ও সার সহায়তা দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও আমার নিজ উদ্যোগে ২৫০ জন কৃষককে সার ও বীজ দিয়ে সহায়তা করি। আমাদের কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কৃষকদের যথাযথ পরামর্শ ও পরিচর্যার বিষয়ে প্রতিনিয়ত দিক নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। তাই কৃষকরা উৎসাহিত হয়ে সরিষার ব্যাপক চাষাবাদ করেছেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকালে এ বছর সরিষার ভালো ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে।
ডিবিএন/এসডিআর/মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান