ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলায় এবার শীত মৌসুমে লাউ চাষে ব্যাপক ফলন হয়েছে। এ বছর উপজেলায় প্রায় দশ হেক্টর জমিতে লাউ চাষ করেছে কৃষকেরা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, উপজেলার বিভিন্ন এলাকার লাউ ক্ষেতের মাঁচায় ঝুলছে ছোট বড় অসংখ্য লাউ। দেখে মন জুড়িয়ে যায় কৃষকসহ পাইকারদের। দেখা গেছে লাইলন জাতের সুতা দিয়ে ও বাঁশের খুটি দিয়ে তৈরি করা হয়েছে লাউয়ের মাঁচা। আর এই মাচায় ঝুলছে বিভিন্ন জাতের অসংখ্য লাউ। যদিও এর আগে আমরা লাউ চাষ বাড়ির চালের উপর বা বাড়ির এক পাশের কোন পড়ে থাকা জমিতে দেখতে পেতাম। দেশে কৃষিতে উন্নয়নের ছোঁয়ায় হাইব্রিড জাতের লাউ এখন কৃষকের একটি লাভজনক সবজি ফসলে পরিনত হয়েছে।
দেখা গেছে বিভিন্ন গ্রামের কৃষকেরা আগের তুলনায় এখন লাউকে শীতকালীন একটি অর্থকরি ফসলে পরিনত করেছে এবং হাইব্রিড জাতের লাউ চাষে অন্যান্য সবজি চাষের তুলনায় খরচ কম হওয়ায় এবং অর্থ বেশি পাওয়ায় কৃষকরা দিন দিন লাউ চাষের দিকেই ঝুঁকছেন বেশি। কারণ শীত কালীন শুধু নয়, গ্রীষ্মকালীন সবজি হিসেবে বাজারে লাউয়ের চাহিদা রয়েছে। এলাকায় নতুন হাইব্রিড জাতের লাউয়ের ব্যাপক চাষ হয়েছে। গোলাকার ও আকর্ষনীয় হাল্কা সবুজ রঙের এই লাউয়ের প্রচুর ফলন পাওয়া যায়। বাম্পার ফলন ও বাজারদর ভালো পাওয়ায় খুশি কৃষকরা। ফলে দিন দিন এর চাষ বাড়ছে। মাত্র ৪৫ থেকে ৬০ দিনে এসব লাউ পরিপক্ক হয়ে যায়।
“ডিজিটাল বাংলা নিউজ” অনলাইনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
উপজেলার বনগাঁও গ্রামের মো. হোসেন এবং সন্ধ্যারই সরকারপাড়া গ্রামের তোজাম্মেল হক বলেন, আমরা গত বছর কয়েক ২৫ শতাংশ করে জমিতে লাউ চাষ করে লাভবান হয়েছি তাই এবার আমরা প্রায় এক একর করে জমিতে লাউ চাষ করেছি এবং খরচের তুলনায় লাভের অংক বেশি গুনছি। লাউ চাষে তেমন বেশি খরচ হয়না। আমাদের এক একর জমিতে খরচ হয়েছে ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা। কিন্তু এখন পর্যন্ত আমরা প্রায় ৮০ থেকে ৯০ হাজার টাকার মতো লাউ বিক্রি করে ফেলেছি। সাইজ বুঝে ২০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত প্রতিটি লাউ বিক্রি করতে পারছি। আরো সব মিলে লাখ দেড়েক টাকার মতো লাউ বিক্রি করতে পারবো ইনশাল্লাহ।
অপরদিকে কুমোড়গঞ্জে এলাকার লাউ চাষি সফিকুল বলেন, আমি আমার লাউ বিক্রির পাশাপাশি এলাকার কৃষকদের কাছে থেকে লাউ সংগ্রহ করে ঢাকার পাইকারের কাছে বিক্রি করি। হাইব্রিড জাতের লাউ চাষ করলে অন্যান্য ফসলের চেয়ে অনেক গুনে খরচ কম। প্রতি সপ্তাহে লাউ দুই থেকে তিন বার কাটা লাগে। নিয়মিত পরিচর্যা করলে কয়েক মাস পযন্ত ফলন পাওয়া যায়। আর হাইব্রিড জাতের লাউ মারিয়া, ডায়না,নবাব,লাল তীর কোম্পানির ডায়না, বারি লাও -৪ সহ আরো বহু কোম্পানীর হাইব্রিড জাতের লাউ চাষ করছে কৃষকরা।
রাণীশংকৈল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সঞ্জয় দেবনাথ বলেন,এবার এ উপজেলায় প্রায় দশ হেক্টর জমিতে লাউ চাষ করেছে কৃষকেরা। আমরা কৃষকদের সকল ধরনের পরামর্শ দিয়ে সাথে থাকার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি। এটি একটি শীতকালীন আগাম সবজি হওয়ায় কৃষকেরা অনেক লাভবান হয়। যা অন্যান্য সবজির তুলনায় এই সবজি চাষে তেমন খরচের পরিমাণ কম।