হুমায়ুন কবির, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিঃ ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলায় চলতি বছর ভুট্টার বাম্পার ফলন হয়েছে। বিশেষ করে উপজেলার ধর্মগড় ও লেহেম্বা ইউনিয়নে এর ব্যাপক চাষাবাদ হয়েছে। বাজারে ভুট্টার চাহিদা ভালো থাকায় দামও পাচ্ছেন কৃষকেরা। প্রতিমন ভুট্টা বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকায় । এবার ভুট্টার বাম্পার ফলন ও ভালো দাম পাওয়ায় আগামীতে উপজেলায় দ্বিগুণ ভুট্টা চাষের সম্ভাবনা রয়েছে বলে ধারণা করছে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর জানিয়েছে, উপজেলায় এ বছর গত বছরের চেয়ে বেশি ভুট্টা চাষ হয়েছে। পরিপূর্ণ হয়ে ওঠেছে ভুট্টার গাছ আর গাছে গাছে ধরেছে মোচা। সেই মোচায় স্বপ্ন ডুবে আছে কৃষকের। ভুট্টার দানা পরিপক্ক হয়েছে এবং ঘরে তুলেছেন কৃষকের স্বপ্নের ভুট্টার ফসল।
কৃষকরা জানান, গম, ধানের নায্য মূল্য না পাওয়ার কারণে এবং কম খরচে বেশি লাভ হওয়ায় তাদের গমের চেয়ে ভুট্টা চাষে আগ্রহ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এবছর উপজেলায় রবি ভুট্টা ৫ হাজার ২৫০ হেক্টর জমিতে ও খরিপ ভুট্টা ২ হাজার ৯৫০ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে। এবার ভুট্টার গড় ফলন প্রতি হেক্টর জমিতে ১০ থেকে ১১.৫০ টনের মধ্য পাওয়া যাচ্ছে। উপজেলার অনেক ভুট্টা চাষি জানান ভূট্টা একটি অর্থকারী এবং অত্যন্ত লাভজনক ফসল। মানুষের খাদ্যের পাশাপাশি মাছ, হাঁস-মুরগী ও গো-খাদ্য হিসেবে ভুট্টার ব্যবহার বৃদ্ধি পাওয়ায় ভুট্টার চাহিদাও বেড়েছে অনেক বেশি। ভুট্টা চাষে খরচ কম অথচ ফলন ভালো ও দাম বেশি হওয়ার কারণে ভুট্টা চাষের আগ্রহ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
শনিবির ১ মে সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ভুট্টা নিয়ে চাষিদের ব্যস্ততা চলছে। জমি থেকে ভুট্টা তোলা, মেশিনে ভুট্টা আলাদা করা, ভুট্টা সংগ্রহের পর গাছ কেটে পরিস্কার করাসহ অন্যান্য কাজে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন তারা। বাড়ির সামনে চোখে পড়ছে নারীদের রোদে ভুট্টা শুকানোর দৃশ্য। কোন কোন বাড়ির সামনে তারা রোদে শুকাচ্ছেন ভুট্টার ডগা ও ডালপালাগুলো। এসব জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করবেন তারা।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সঞ্জয় দেবনাথ বলেন, সমগ্র উপজেলায় ভুট্টা চাষপদের সাথে আমাদের নিবিড় যোগাযোগ
রয়েছে। দেশে বাণিজ্যিকভাবে মাছ চাষ ও গবাদিপশু লালন-পালন বেড়েছে। আর মাছের ও গবাদিপশুর খাবার তৈরিতে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন পড়ছে ভুট্টার।একারণে কৃষকেরা দামও পাচ্ছে বেশি। তাই গতবারের তুলনায় দাম বেশি পাওয়ার অর্থনৈতিক ভাবে লাভবান হচ্ছেন কৃষকেরা।