হুমায়ুন কবির (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধিঃ ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলায় দুর্গা পূঁজোকে সামনে রেখে নিপূণ হাতে কাঁদামাটি, খড়, বাঁশ, সুতলি ও রং দিয়ে তৈরি হচ্ছে প্রতিমা। প্রতিমা তৈরির কাজে দিনরাত ব্যাস্ত সময় পার করছেন মৎশিল্পীরা। উপজেলার বিভিন্ন মন্ডপে কারিগররা ফুটিয়ে তুলছেন দুর্গা, লক্ষী, স্বরসতী, গণেশ ও কার্তিকের প্রতিমা। মন্ডপে,মন্ডপে চলছে অবকাঠামো তৈরির কাজ, কোথাও চলছে মাটি দিয়ে প্রতিমা তৈরির কাজ, আবার কোথাও শুরু হয়েছে রংয়ের কাজ। হিন্দু ধর্মালম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গা পূজা ঘনিয়ে আসায় যেনো দম ফেলার ফুসরত নেই রাণীশংকৈল প্রতিমা তৈরির কারিগরদের।
শরতের উজ্জ্বল আকাশে সাদা মেঘের আনাগোনার মধ্যে, কাশফুলের শুভ্র আন্দোলনের সাথে তাল মিলিয়ে বাঙলা পঞ্জিকায় বছর ঘুরে আসে শরৎ। প্রকৃতিতে ঋতুর রাণী শরতের আগমনেই সনাতন ধর্মালম্বীদের মনে দোলা দেয় দশভুজা মহামায়া ত্রিনয়নী দেবীর আবাহনী। জানান দেয় শারদীয় উৎসবের। দুর্গতিনাশিনী দেবীর আগমনী বার্তায় ভক্তকূলে আনন্দের জোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। তাইতো দেবী দুর্গাকে ঢাঁক, ঢোল, উলু আর শঙ্খ ধ্বনিতে বরণ করতে অধীর আগ্রহে প্রহর গুনছেন ভক্তকুল।
রবিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সরজমিনে উপজেলার বিভিন্ন পূজা মন্ডপে ঘুরে দেখা যায়, বিভিন্ন আকার আর নানা সব কারুকাজে দেবী দুর্গার প্রতিমা বানানোর ব্যস্ততা। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত প্রতিমার র্পূণরুপ দিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন মৃৎ শিল্পীরা।
পৌরশহরের কলেজপাড়া মন্দির, গোবিন্দ মন্দির ও হাটখোলা মন্দিরের কারিগর দীনবন্ধু, জগন্নাত রায় এবং অনুপ মালাকার জানান এবার গতবারের থেকে জিনিশপত্রের দাম বেশি, বিশেষ করে রংয়ের দাম। তাই কাজ করে তেমন পোষায়না তবুও বাপ দাদার পেশা ধরে রাখতে কাজ করে যাচ্ছি।
রাণীশংকৈল পৌরশহরের কলেজপাড়া পূজামন্ডপ কমিটির সাধারণ সম্পাদক প্রভাষক মিন্টু বসাক জানান, মহাপঞ্চমীতে দেবীর বোধনের মধ্য দিয়ে দুর্গোৎসবের শুরু পরদিন ১ অক্টোবর মহাষষ্ঠীতে পূজা থেকে মন্ডপে মন্ডপে বেজে উঠবে ঢাকঢোল আর কাঁসার শব্দ । প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে সনাতনীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় এই উৎসব।
উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি ছবিকান্ত দের তথ্যমতে এবার উপজেলায় মোট ৫৪টি পূজা মন্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হবে। তবে কোনো ঝুঁকিপূর্ণ মন্ডপ নেই। তিনি আরো বলেন উপজেলা প্রশাসন এবং পুলিশ প্রশাসন পূজা ভালোভাবে পালনের লক্ষ্যে সব ধরনের সহযোগিতা করে যাচ্ছে।
রাণীশংকৈল থানা অফিসার ইনচার্জ এসএম জাহিদ ইকবাল বলেন সুষ্ঠুভাবে পূজা পালনের জন্য শুরু থেকে প্রতিমা বিসর্জন পর্যন্ত সর্বোচ্চ নিরাপত্তা, নজরদারি ও মনিটরিং অব্যাহত থাকবে।
এ ব্যাপারে ইউএনও সোহেল সুলতান জুলকার নাইন কবির স্টিভ বলেন পূজা সুষ্ঠুভাবে উদযাপনের জন্য প্রশাসনিক ভাবে সর্বোচ্চ নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এবং প্রতিটি মন্ডপে সিসি ক্যামেরা ও অগ্নি নির্বাপক সিলিন্ডার রাখার নির্দশ দেয়া হয়েছে।