রাজশাহীর তানোর উপজেলার একটি গির্জায় আদিবাসী সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্রীকে (১৫) আটকে রেখে ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত ফাদার প্রদীপ গ্যা গরীকে (৪৮) গ্রেফতার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
মঙ্গলবার দিনগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে রাজশাহী নগরীর আমচত্বর সংলগ্ন বিশপ হাউজ থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
র্যাব-৫ এর রাজশাহীর কোম্পানি অধিনায়ক এটিএম মাইনুল ইসলাম বলেন, ধর্ষণের খবর জানতে পারার পর থেকেই পলাতক প্রদীপ গ্যা গরীকে গ্রেফতারে প্রচেষ্টা শুরু হয়। পরে রাতেই তাকে বিশপ হাউজ থেকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর তাকে তানোর থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।
এর আগে রাত সাড়ে ৮টার দিকে সাধুজন মেরী ভিয়ান্নী গির্জায় কর্মরত ওই ফাদারের বিরুদ্ধে তানোর থানায় ধর্ষণের মামলা দায়ের হয়।
ভুক্তভোগীর পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আদিবাসী খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের ওই কিশোরী শনিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সকালে বাড়ির পাশে ওই গির্জার পাশে ঘাস কাটতে গিয়ে নিখোঁজ হন। অনেক খোঁজাখুঁজির পর তাকে না পেয়ে পরের দিন রোববার থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন তার ভাই। পরের দিন সোমবার দুপুরের পর জানা যায় নিখোঁজ কিশোরী গির্জার ফাদার প্রদীপের ঘরে বন্দি অবস্থায় আছে। পরে কিশোরীর পরিবারের সদস্য এবং এলাকার লোকজন ওই কিশোরীকে উদ্ধার করে।
এরপর সন্ধ্যায় গির্জার ভেতরেই শালিসি বৈঠক বসে। সেখানে দোষ প্রমাণিত হওয়ায় ফাদার প্রদীপকে গির্জা থেকে অপসারণ করা হয়। ভুক্তভোগী ওই কিশোরীকে গির্জার ভেতরে সিস্টারদের কাছে রাখা হয়। সেইসঙ্গে বলা হয় থানা থেকে নিখোঁজের জিডি প্রত্যাহার করে নিলে ওই কিশোরীকে পরিবারের কাছে পাঠানো হবে। এ ছাড়া সাবালিকা হওয়া পর্যন্ত ওই কিশোরীর খরচ বহন করবে গির্জা কর্তৃপক্ষ।
গতকাল দুপুরে ওই কিশোরীর ভাই থানায় গিয়ে জানান, তাঁর বোনকে পাওয়া গেছে। কিন্তু তাকে পরিবারের কাছে ফিরেয়ে দেওয়া হচ্ছে না। গির্জার প্রধান ফাদার প্যাট্রিক গমেজ ও শালিসি বৈঠকের প্রধান কামেল মার্ডি তাঁকে আটকে রেখেছেন।
খবর পেয়ে সন্ধ্যায় তানোর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুশান্ত কুমার মাহাতো ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাকিবুল হাসান গির্জা থেকে ওই কিশোরীকে উদ্ধার করেন।
এ বিষয়ে ওসি রাকিবুল হাসান বলেন, শারীরিক পরীক্ষার জন্য ওই কিশোরীকে আজ (বুধবার) সকালে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) পাঠানো হয়েছে। গ্রেফতার ফাদার প্রদীপকেও আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে।