গনতান্ত্রিক দেশে বিরোধী দল জরুরী। বাংলাদেশে বিরোধীতা আছে বিরোধী দল নেই। এখন দেশে দুটিই দল। আওয়ামী লীগ এবং সব দল মিলে বিপক্ষ দল। বিরোধী দলের কোন দায়বদ্ধতা নেই। তাদের একটাই কাজ সমালোচনা করা। সরকার ভাল কাজ করলেও সমালোচনা করতে হবে। সব দেশেই সরকারের সমালোচনা হয়। বস্তুনিষ্ঠ এবং গঠনতান্ত্রিক হয় তাদের সমালোচনা। কিন্তু বাংলাদেশে পদ্মা সেতু নির্মান করলেও সমালোচনা করে। জনগনকে হুশিয়ার করে সেতুতে উঠেতে। ভেঙ্গে পরবে বলে ভয় দেখানো হয়। করোনা বিশ্বকে অচল করে দিয়েছে। প্রতিষেধক নেই করোনা মোকাবেলার। যখন ভ্যাকসিন আবিস্কার হল বাংলাদেশ অনেক দেশের আগে ভ্যাকসিন এনে বিনামূল্যে বিতরন শুরু করে দিয়েছে। এই ভ্যাকসিন নিয়েও বিরোধীরা ব্যঙ্গ করেছে। নেতাদের অসত্য প্রচারনা বিশ্বাস করে ভ্যাকসিন নেয়নি অনেকে। মৃত্যু হয়েছে মানুষের। এই নেতারাই ভ্যাকসিন নিয়ে পোষ্ট দিয়েছে শোস্যাল মিডিয়াতে। অভিযোগ করেছে সরকার বিরোধীদের ভ্যাকসিন দিচ্ছেনা। বিরোধী নেতাদের কোন বক্তব্যটিকে বিশ্বাস করবে জনগন? ভ্যাকসিন নিতে এখন লাইন লেগে গেছে। এখন বলছে সরকার ভ্যাকসিন আনতে ব্যর্থ হচ্ছে। তাই সরকার উৎখাত করতে হবে। কিন্তু যারা সরকার উৎখাত করার হুমকে দেয় তারা জনসম্মুখে আসেনা। সুযোগ সুবিধামত অসুখের কথা বলে সরকারের কাছ থেকে অনুদান নেয়। এই অনুদান নেওয়ার সময় নেতারা কি বলেন জানা যায়নি তবে দন্ত বেড় করে সূখের তৃপ্তিটি বুঝিয়ে দেন। মুরুব্বিরাও সমঝোতার টেবিলে বসে চীজ কেক খান আর জমীরায় আবদার করেন হাস্য চেহারায়। অনেকে এখন বয়োভারে অক্ষম হয়ে পরেছেন কিন্তু, রাজনীতি থেকে অবসর নিতে চাননা। মরার আগে একবার হলেও আরাম কেদারায় বসে সূখের ঢেকুর গিলতে চান। জনগনের কাছে দায়বদ্ধতার কথাটি ভেবেনা। করোনা বিপর্যয়ে কোন নেতাকে মানুষের সেবায় এগিয়ে আসতে দেখা যায়নি। বরং করোনাকে পুজি করে সরকার উৎখাত করার ষরযন্ত্র করেছে অনেকে। এসব কিছুই এখন সকলের জানা।
বাংলাদেশ উন্নত হয়েছে। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলি বাংলাদেশের উপর জড়িপ করে প্রবন্ধ ছাপছে। বলছে বাংলাদেশ উন্নয়নের মডেল রাষ্ট্র। উন্নয়নশীল দেশগুলিকে পরামর্শ দিচ্ছে বাংলাদেশের মডেল অনুসরন করতে। বাংলাদেশের বিরোধী নেতারা বলছে ভিন্ন কথা। তাদের চোখে “বাংলাদেশ ধ্বংস হয়ে গেছে। সরকারকে উৎখাত করে একটি গনতান্ত্রিক সরকার ( তাদের মত) প্রতিষ্ঠা করতে হবে”। কিন্তু বলতে পারেনা কোন সরকারটিকে তারা মডেল মনে করে! নেতারা বলতে না পারলেও দেশের মানূষ উপলব্ধি করছে। বিদ্যুৎ বিভ্রাট নেই। খাদ্য ঘাটতি নেই দেশে। উৎপাদন বন্ধ হয়নি বিদ্যুৎ কিংবা হরতালের কারনে। রপ্তানী রেকর্ড ছাড়িয়েছে। রাজস্ব উৎপাদন হয়েছে বিশ্বয়করভাবে। ব্যংকের রিজার্ভ এখন সর্বোচ্চ। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন সহ বঙ্গবন্ধু স্যটেলাইট, কর্নফুলি টানেল এবং উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে সর্বক্ষেত্রে। দেশের মানুষই এখন বলাবলি করে ” শেখ হাসিনা যা করেছে তা আন্য কোন সরকার করে দেখাতে পারেনি”। আগামি নির্বাচনেও শেখ হাসিনাকেই ভোট দিবে মানুষ। এসব শুনে বিরোধী নেতারা হতাশ হয়ে পরেছে। মাঝে সাঝে ঘরে বসে ফিরিস্তি দিয়ে সরকারের মুন্ডুপাত করে। তারা জানে নির্বাচন করে ক্ষমতায় যাওয়া তাদের পক্ষে সম্ভব হবেনা। তাই স্বাধীনতা বিরোধী গোষ্ঠিকে সঙ্গে রেখেছে সন্ত্রাস অব্যহত রাখতে।
নির্বাচন খুব বেশী দূরে নয়। ২০২১ ফুরিয়ে যাচ্ছে। ২০২৩ সালের ডিসম্বরে বর্তমান সরকারের মেয়াদ পুর্ন হবে। নির্বাচনি মাঠে গিয়ে কি বলে দলের পক্ষে ভোট চাইবে নেতারা! গত ১৫ বছরে আগুন সন্ত্রাস ছাড়াত তাদের ঝুলিতে তেমন কোন অর্জন নেই। শির্ষ নেতা অর্থ আত্নসাধের মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে এখন নির্বাচনেরও অযোগ্য। বাকিরা অন্তরদন্দে বহুধা বিভক্ত। কে দল চালায় কর্মীবাহিনীও জানেনা। মিথ্যাচারের সত্যটি জেনেগেছে জনগন। এমন নেতাদের জনগন নির্বাচীত করবে কোন ভরসায়? রাজনীতির অবস্থাটি সেই কারনে বদলে গেছে। আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে তৎপর এখন বিরোধীরাও। মনোয়ন পেলে নৌকার জোয়ারে নির্বাচীত হবে অবধারিত। তাই টিকিট না পেলে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েই লড়বে নির্বাচনী খেলায়। অর্থ খরচ করে নির্বাচীত হতে পারলে সরকারী দলে নাম লেখাবে। তাতেও যদি ব্যর্থ হয় তাহলে সম্মিলিত বিরোধী দলে গিয়ে সমালোচনা করবে সরকারের।
সত্য মিথ্যা যাচাই না করে বিভ্রান্ত হওয়ার চরিত্র বাঙালীদের রয়েছে। সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে পারলেই ক্ষমতা হাতের মুঠোয়। ” হয় পাচটা কলা দাও নাহয় কাধে করে নাও” নীতিতে অটুট থাকবে নেতারা। এই ষ্ট্রেটেজিতেই জামাতের সাথে, হেফাজতের সাথে আতাত রক্ষা করে চলেছে দলটি। দেশের বাইরে এখন যে ভার্চুয়াল মিথ্যাচার প্রচার হচ্ছে তা এই ষ্ট্রেটেজিরই অংশ। অনেক অর্থ ঢালছে সরকারের বিরুদ্ধে জনমত গঠন করতে। লক্ষ্যনীয় হল কোন রটনাই বেশীদিন স্থায়ী হয়না। নিত্যনতুন বিষয় তুলে যঘন্যভাবে অসত্য বলছে মিডিয়াতে। কিছুদিন আগে একজন দাবী করেছিল তার নির্দেশ পেলেই সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখল করে নিবে। আসলে রাজনীতি কঠিন বিষয়। জনগনকে সাথে নিয়ে রাজনীতি করতে হয়। মিথ্যা নির্ভর রাজনীতির ফলাফল শুন্য।
আজিজুর রহমান প্রিন্স,
কলামিস্ট, ঢাকা, বাংলাদেশ।