কোনটি কেটেছে উইপোকায়, কোনটি ভাঙা হয়েছে পিটিয়ে আর চুরি বা যন্ত্রাংশ হারানো গেছে অসংখ্য ইভিএমের। রংপুর অঞ্চলে সংরক্ষিত ১০ হাজার ইভিএমের অবস্থা এমনই। রংপুর সিটি নির্বাচনে এই ইভিএম ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত করতে গিয়ে এমন হাল ধরা পড়েছে নির্বাচন কমিশনের পর্যবেক্ষণে। শুধু নির্বাচন কমিশনের হেয়ালিপনায় অতি স্পর্শকাতর ইভিএমের অধিকাংশই হয়ে গেছে অকেজো।
২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগে প্রায় চার হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ১ লাখ ৫০ হাজার ইভিএম কেনে নির্বাচন কমিশন। বিভিন্ন নির্বাচনে সেগুলো ব্যবহারের পর তা সংরক্ষণ করা হয় সারাদেশের ইসির আঞ্চলিক অফিসগুলোতে।
এর মধ্যে রংপুর অঞ্চলে সংরক্ষণ করা হয়েছিলো ১০ হাজার ৭৫৯টি ইভিএম। রংপুর সিটি নির্বাচন সামনে রেখে গত সেপ্টেম্বরের শেষে সেই ইভিএমগুলো যাচাই বাছাই করে প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা। সংরক্ষিত ইভিএমের মধ্যে ৬ হাজার ৩৫টিতে ধরা পড়ে ত্রুটি, আর ১১২৩ টি ইভিএমের মধ্যে কোনটির যন্ত্রাংশ চুরি গেছে, হদিসই নেই কোনটির।
রংপুরের ইভিএম পর্যবেক্ষণ শেষে নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিয়ে জানান প্রকল্প কর্মকর্তারা। চিঠিতে জানানো হয়, অধিকাংশ ইভিএমের প্যাকেট কেটে উইপোকা ক্ষতিগ্রস্থ করেছে সব যন্ত্রপাতি। অযত্ন আর অবহেলায় স্পর্শকাতর ইভিএমের যন্ত্রপাতির অধিকাংশই হয়ে গেছে অকেজো।
রক্ষণাবেক্ষণের আগে আর ব্যবহার করা যাবে না সে সব যন্ত্র। তাই আগামী ২৭ ডিসেম্বর রংপুর সিটি নির্বাচনে ভোট করতে নতুন করে ঢাকা থেকে পাঠানো হচ্ছে ইভিএম।
এমন অবস্থায় দেশের বিভিন্ন জায়গায় মজুদ করা ইভিএমগুলো দ্রুত সংরক্ষণের উদ্যোগ নিতে নির্বাচন কমিশনকে অনুরোধ জানিয়েছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা।
অতিস্পর্শকাতর এই ইভিএম সংরক্ষণে আরো ৮ দফা সুপারিশ জানানো হয়েছে ঐ চিঠিতে।
আগামী ২৭ ডিসেম্বর রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের দিন ধার্য করে তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ তারিখ ২৯ নভেম্বর। ১ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র বাছাই করা হবে। আর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ৮ ডিসেম্বর। প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে ৯ ডিসেম্বর। প্রার্থীরা ১৭ দিন প্রচার-প্রচারণার সুযোগ পাবেন। ২৭ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে ৮টা থেকে বিকেলে সাড়ে ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলবে। ভোট কেন্দ্রগুলোতে ইভিএম ছাড়াও সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হবে।