যুক্তরাষ্ট্রের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসরায়েল বিরোধী বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশের একজন সদস্য গুলি ছুড়েছেন। তবে এ ঘটনায় কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
এর আগে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীরা হ্যামিলটন হল নামের একটি স্কুলভবন দখল করে নিলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট মিনোচে শফিক নিউইয়র্ক পুলিশ বিভাগকে খবর দেন। পরে পুলিশ শিক্ষার্থীদের সরিয়ে দিতে সেখানে যায়। এ সময় ওই ক্যাম্পাস থেকে ১১২ জন বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
নিউইয়র্ক পুলিশ বিভাগের বিবৃতিতে বলা হয়, কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের হ্যামিলটন হলে শিক্ষার্থীরা বেরিকেড দিয়েছিল। সেখান থেকে তাদের সরিয়ে দেওয়ার সময় একজন পুলিশ সদস্য কয়েক ফুট দূর থেকে দেয়ালে গুলি ছুড়েছেন।
ওই দেয়ালের আশেপাশে কোনো শিক্ষার্থী ছিল না। তবু ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। আমাদের ধারনা, গুলি ছোড়ার ঘটনাটি দুর্ঘটনাবশত ঘটেছে।
নিউইয়র্ক পুলিশ বিভাগের মুখপাত্র সার্জেন্ট তারিক শেপার্ড বলেন, প্রতি বছর গড়ে আটটি দুর্ঘটনাজনিত গুলির ঘটনা ঘটে থাকে। প্রতিটি ঘটনাই তদন্ত করে দেখা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, স্নাতক চূড়ান্ত সেমিস্টারের পরীক্ষার আর কয়েক সপ্তাহ বাকি রয়েছে। এই সময়ে সীমিত পরিসরে ক্যাম্পাস খোলা থাকবে এবং সকল পরীক্ষা অনলাইনে অনুষ্ঠিত হবে।
এদিকে নিউইয়র্ক পুলিশ হ্যামিলটন হলে অভিযানের একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে। ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, হ্যামিলটন হলের সিঁড়িতে বিক্ষোভকারীরা চেয়ার ও ডেস্ক ফেলে রেখেছে। সেগুলো সরিয়ে নিচ্ছে পুলিশ।
চলতি সপ্তাহের শুরুর দিকে কয়েকজন শিক্ষার্থী বিবিসিকে বলেছিলেন, পুলিশ তাদের ওপর আক্রমণাত্মক আচরণ করছে। তবে নিউইয়র্ক পুলিশ এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলের হামলার প্রতিবাদে কয়েক সপ্তাহ ধরে বিক্ষোভে উত্তাল আমেরিকার শতাধিক বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ। বিক্ষোভকারীদের হটাতে মারমুখী আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ইতোমধ্যে দুই হাজারের বেশি শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়েছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, গাজায় ইসরাইলের হামলা বন্ধ এবং ইসরাইলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্ক ছিন্ন করতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রতি দাবি জানিয়ে গত ১৭ এপ্রিল প্রথম আন্দোলনে নামেন কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউইয়র্ক ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীরা। এরপর দেশটির ৪৫টি অঙ্গরাজ্যের প্রায় ১৪০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিক্ষোভ ছড়িয়েছে।
বিক্ষোভকারীদের হটাতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ। শনিবার পর্যন্ত ২ হাজার ৩০০ জনের বেশি ব্যক্তিকে গ্রেফতারের খবর জানা গেছে। পুলিশ বিক্ষোভকারীদের অস্থায়ী তাঁবু ভেঙে দিয়েছে। তাঁদের ছত্রভঙ্গ করতে প্রাণঘাতী নয়, এমন গ্রেনেড এমনকি গুলির ব্যবহার করা হয়েছে।
ডিবিএন/ডিআর/তাসফিয়া করিম