আজ সোমবার ২০১৮ সালের শেষ দিন, ৩১ ডিসেম্বর। প্রতিবছর এই দিনে থার্টিফার্স্ট নাইট উদযাপন করে বিভিন্ন এলাকার মানুষ। উৎসব ঘিরে ঘটে অনেক অপ্রীতিকর ঘটনাও। এবার কোনো বিশৃঙ্খলা ও অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন এলাকায় কিছু নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটান পুলিশ (ডিএমপি)। ডিএমপি তাদের সংবাদমাধ্যম ‘ডিএমপি নিউজ’-এ এসব নির্দেশনা দেয়। নির্দেশনায় বলা হয়েছে : ১. ঢাকা মহানগরের সার্বিক নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলার স্বার্থে রাস্তার মোড়, ফ্লাইওভার, ভবনের ছাদে এবং প্রকাশ্য স্থানে কোনো ধরনের জমায়েত, সমাবেশ বা উৎসব করা যাবে না। ২. নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে খোলা জায়গায় কোনো ধরনের অনুষ্ঠান বা সমবেত হওয়া যাবে না। খোলা জায়গায় নাচ, গান ও কোনো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করা যাবে না। ৩. কোথাও কোনো ধরনের আতশবাজি বা পট্কা ফোটানো যাবে না। ৪. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় সন্ধ্যা ৬টার পর বহিরাগত কোনো ব্যক্তি বা যানবাহন প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। ৫. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আবাসিক এলাকায় বসবাসকারী শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের গাড়ি নির্ধারিত সময়ের পর প্রবেশ করতে পারবে। কিন্তু সে ক্ষেত্রে পরিচয় দিতে হবে। এবং শুধু নীলক্ষেত ও শাহবাগ ক্রসিং দিয়ে ঢুকতে পারবে। ৬. গুলশান এলাকায় প্রবেশের জন্য কাকলী ক্রসিং ও আমতলী ক্রসিং ব্যবহার করা যাবে। তবে নির্ধারিত সময়ের পর পরিচয় দিয়ে এ দুটি ক্রসিং দিয়ে প্রবেশ করতে হবে। ৭. গুলশান, বনানী, বারিধারা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আবাসিক এলাকায় যাঁরা বসবাস করেন না, তাঁদের আজ এসব এলাকায় যেতে নিরুৎসাহিত করা হলো। ৮. সন্ধ্যা ৬টার পর হাতিরঝিল এলাকায় কাউকে থাকতে দেওয়া হবে না। ৯. গুলশান, বনানী ও বারিধারা এলাকায় যেসব নাগরিক বসবাস করেন, তাঁদের রাত ৮টার মধ্যে নিজ এলাকায় ফিরতে অনুরোধ করা হলো। ১০. মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সন্ধ্যা ৬টার পর ঢাকা মহানগরীর কোনো বার খোলা রাখা যাবে না। ১১. সন্ধ্যা ৬টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন আবাসিক হোটেল, রেস্তোরাঁ, জনসমাবেশ ও উৎসবস্থলে সব লাইসেন্স করা আগ্নেয়াস্ত্র বহন না করতে বিশেষভাবে অনুরোধ করা হলো। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ উপর্যুক্ত নির্দেশনা পালনে ব্যর্থ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। যেসব এলাকায়, যখন নিষেধাজ্ঞা ১. গুলশান, বনানী ও বারিধারায় প্রবেশের সব রাস্তা রাত ৮টা থেকে বন্ধ রাখা হবে। তবে ওই এলাকায় বসবাসকারী নাগরিকরা প্রবেশের জন্য কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ (কাকলী ক্রসিং) এবং আমতলী ক্রসিং (মহাখালী) ব্যবহার করতে পারবেন। সে ক্ষেত্রে গুলশান, বনানী ও বারিধারায় বসবাসকারীদের রাত ৮টার মধ্যে এলাকায় প্রবেশের জন্য অনুরোধ জানানো হচ্ছে। ২. রাত ৮টার পর গুলশান, বনানী ও বারিধারা এলাকায় ঢুকতে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকা-ফিনিক্স রোড ক্রসিং, বনানী ১১ নম্বর রোড ক্রসিং, চেয়ারম্যানবাড়ি ক্রসিং, শুটিং ক্লাব, বাড্ডা লিংক রোড, ডিওএইচএস বারিধারা, ইউনাইটেড হাসপাতাল ক্রসিং ও নতুন বাজার ক্রসিং ব্যবহার করা যাবে না। তবে এসব এলাকা থেকে বের হতে এসব ক্রসিং ব্যবহার করা যাবে। ৩. সন্ধ্যা ৬টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত শুধু শাহবাগ ক্রসিং এবং নীলক্ষেত ক্রসিং দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা যানবাহন নিয়ে ঢুকতে পারবে। সে ক্ষেত্রে পরিচয় দিয়ে, শনাক্ত হলে প্রবেশ করতে পারবেন। এ জন্য পরিচয়পত্র সঙ্গে রাখতে সকলকে বিনীত অনুরোধ জানানো হচ্ছে। ৪. পলাশী ক্রসিং, ভাস্কর্য ক্রসিং, বক্শীবাজার ক্রসিং, রোমানা চত্বর ক্রসিং, দোয়েল চত্বর ক্রসিং এবং শহীদুল্লাহ হল ক্রসিং দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় সকল প্রকার গাড়ি প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকবে। ৫. হাইকোর্ট পয়েন্ট থেকে আসা সব ধরনের যানবাহন দোয়েল চত্বর বাঁয়ে মোড় নিয়ে শহীদুল্লাহ হল হয়ে চানখাঁরপুল ক্রসিং দিয়ে বের হয়ে যেতে পারবে। ৬. কেউ বেপরোয়া, মদ্যপ ও বিপজ্জনক অবস্থায় গাড়ি চালাবেন না। ৭। সড়ক ব্যবহার সংক্রান্ত যেকোনো জরুরি প্রয়োজনে ফোন করতে পারবেন : ডিসি ট্রাফিক (নর্থ)-০১৭১৩৩৭৩২২৫, এডিসি ট্রাফিক (নর্থ)-০১৭১৩৩৭৩২২৬, এসি ট্রাফিক (গুলশান)-০১৭১৩৩৯৮৪৯৭, এসি ট্রাফিক (উত্তরা)-০১৭১৩৩৯৮৪৯৮, ডিসি ট্রাফিক (সাউথ)-০১৭১৩৩৭৩২২৩, এডিসি ট্রাফিক (সাউথ)-০১৭১৩৩৭৩২২৪, ডিসি (গুলশান)-০১৭১৩৩৭৩১৬৬ ও ডিসি (উত্তরা)-০১৭১৩৩৭৩১৫৬- এসব নম্বরে। ডিএমপি বলেছে, ‘যেকোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতিতে সংশ্লিষ্ট নাগরিকদের কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যদের সাহায্য গ্রহণের পরামর্শ দেওয়া হলো। কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যদের সহায়তা করার জন্য সম্মানিত নাগরিকদের অনুরোধ করা যাচ্ছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ ইংরেজি নববর্ষ-২০১৯ উদযাপন নির্বিঘ্ন করতে সম্মানিত নগরবাসীর সর্বাত্মক সহযোগিতা কামনা করছে।’