মোঃলোকমান হোসেন,যশোর জেলা প্রতিনিধি:-যশোর উপশহরে একটি রাস্তা নির্মাণের কয়েকমাসের মধ্যে ভেঙে গেছে।নিন্মমানের নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে রাস্তা করায় নির্মাণের চার মাসের মধ্যে রাস্তা ভেঙে গেছে।ভেঙে যাওয়া রাস্তাটি উপশহর তেতুলতলা থেকে উত্তর দিকে সোজা যেয়ে মিশেছে ইউনিয়ন পরিষদের সামনের রাস্তার সাথে। এই রাস্তা দিয়ে উপশহর ডিগ্রি কলেজে যাওয়া যায়।এই রাস্তা ছাড়াও উপশহরের আরো বেশ কয়েকটি রাস্তার পিচ খোয়া উঠে যাচ্ছে।সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, উপশহরকে আধুনিক ও পরিকল্পিত নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে অবকাঠামো উন্নয়নের লক্ষে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ টেন্ডার আহবান করে।একাজে ব্যয় ধরা হয় ১৫ কোটি টাকা।এরমধ্যে উপশহরের সেক্টরসহ ৬টি ব্লকের সড়ক নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ৮ কোটি ৮ লাখ টাকা ও পরিকল্পিত মাস্টার ড্রেন নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ৬ কোটি ৬৫ লাখ টাকা।গত ১০ মার্চ রাস্তা নির্মাণ কাজের ওয়ার্কঅর্ডার হয়।কাজ শুরু করা হয় মার্চ মাসের শেষের দিকে। উপশহর এলাকায় ড্রেন নির্মানের কাজ পান মাদারীপুর জেলার ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স খান ট্রেডার্সের মালিক মুজাম খান।আর রাস্তার কাজ পেয়েছে যৌথ ভাবে মার্ককনসট্রাকশন ও মইনুদ্দিন বাশি।অথচ রাস্তা নির্মাণের পর আড়াই মাস পার হওয়ায় আগেই রাস্তা গুলি ভেঙে যাচ্ছে।কোন কোন রাস্তা ডেবে যাচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।উপশহর এলাকাবাসী অভিযোগ করে বলেছেন,দেশ স্বাধীনের পর প্রায় ৪৭ বছরে যশোর উপশহরে ১৫ কোটি টাকার এতো বড় উন্নয়ন কাজ আর হয়নি। এতো বড় উন্নয়ন কাজ উপশহরের ইতিহাসে এটাই প্রথম।আর এই উন্নয়ন কাজে দুর্নীতির করা হচ্ছে। নিন্মমানের ইট খোয়া দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে রাস্তা।ফলে নির্মানের আড়াই মাসের মাথায় তা ভেঙে যাচ্ছে।অভিযোগে বলা হয়েছে, ভাঙ্গাচুরা পুরাতন রাস্তা খুড়ে ফেলে উচু নিচু গর্ত বন্ধ করে সেটা সমান করে রোলার মারার কথা।কিন্তু সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার পুরাতন রাস্তা খুড়ে ফেলে সেটা সমান না করেই তার সাথে নতুন খোয়া মিশিয়ে রোলার মারছে।ফলে সিডিউল অনুযায়ি কাজ করা হচ্ছে না।সিডিউলে বলা হয়েছে,রাস্তার সাববেইজ করার সময় বালি খোয়া মিশ্রন করে রোলার মারতে হবে। এতে রাস্তা উচু হবে এবং বৃষ্টির পানি রাস্তায় দাড়াবে না।আর বৃষ্টির পানি রাস্তায় না দাড়ালে রাস্তা দীর্ঘ স্থায়ী হয়।এরপর ম্যাকাডামের সময় শুধু খোয়া ও পানি রোলার করতে হবে।রোলার করার পর রাস্তার থিকনেছ হবে সাড়ে চার ইঞ্চি।সেটাও করা হচ্ছে না।আর রাস্তায় যে বিটুমিন দেয়া হচ্ছে তাও খুবই নিন্মমানের। চুড়ান্ত পর্যায়ে পাথরের খোয়া ও চিপ দিয়ে রাস্তার থিকনেছ হবে ৩৭ মিলি মিটার।এর মধ্যে ১২ মিলি মিটার সিল কোট ও ২৫ মিলি মিটার কাপেটিং করতে হবে।কিন্তু কোন কিছুই ঠিক মতো করা হচ্ছে না।প্রতিটি কাজেই দুনীতি করা হচ্ছে।এর ফলে নির্মাণের এক দুমাসের মধ্যেই রাস্তা ভেঙে যাচ্ছে।
একই সাথে ড্রেন নির্মাণেও ফাকি দেয়া হচ্ছে।রাতের বেলায় ড্রেন নির্মাণ করায় দেখার কেউ নেই। আর এই সুযোগে নির্দিষ্ট পরিমান নির্মাণ সামগ্রী না দিয়ে ফাকি দেয়া হচ্ছে।এবিষয়ে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী দিপক কুমার সরকারের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, রাস্তার কাজে কোন দুর্নীতি করা হচ্ছে না।রাস্তার নীচ দিয়ে যাওয়া পানির পাইপ দুর্বল থাকায় ভেঙে রাস্তা বসে গেছে।রাস্তার ওই জায়গা ঠিকাদারকে দেখানো হয়েছে।আবারও ঠিক করে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।