নিজস্ব প্রতিবেদকঃ বঙ্গবন্ধু, স্বাধীনতা, জাতীয় পতাকা আর প্রকৃতি একইসূত্রে গাঁথা এমনটাই দেখতে পাওয়া গেছে ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে শস্য রোপণের মাধ্যমে ফসলের মাঠে। অপরূপ প্রকৃতির লাল-সবুজ ফসলের মাঠে রঙিন লালশাক আর সরিষা রোপণ করে পরম মমতায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি ও স্মৃতিসৌধ এঁকেছেন ঈশ্বরগঞ্জের কৃষক আবদুল কাদির।
বঙ্গবন্ধুর ছবির চারপাশে জাতীয় পতাকা, জাতীয় ফুল শাপলা আর নৌকার ছবি বাড়িয়েছে সৌন্দর্যের মাত্রা। লালশাক আর সরিষার চারাগুলো বড় হচ্ছে আর স্পষ্ট ও নান্দনিক হয়ে উঠছে বাংলাদেশের স্থপতির অবয়ব। বঙ্গবন্ধুর প্রতি অগাধ ভালোবাসা থেকেই ফসলের এমন শিল্পকর্ম বলে জানান কৃষক আব্দুল কাদির। যে জমিনে পরম ভালোবাসায় বেড়ে উঠে শষ্য, সেই জমিতে হৃদয়খচিত ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছেন তিনি।
কৃষক আবদুল কাদিরের বাড়ি ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে উপজেলার আঠারবাড়ি ইউনিয়নের পাড়া খালবলা গ্রামে। কৃষক মো. তারা মিয়ার মেঝ ছেলে আবদুল কাদির। স্ত্রীর নাম মকসুদা আক্তার। দুই ছেলে ও এক মেয়ের জনক ৪১ বছর বয়সী আবদুল কাদির পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ার সময় নিজেদের জমিতে কাজ শুরু করেন। পরে আর পড়ালেখা হয়নি। মাঠেই দিন-রাত পরিশ্রম করে সোনার ফসল ফলান তিনি।
মুজিববর্ষ উপলক্ষে ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে নিজের জমিতে লালশাক ও সরিষা দিয়ে পরম মায়ায় এঁকেছেন জাতির জনকের প্রতিকৃতি, স্মৃতিসৌধ, নৌকা, শাপলা ও মুজিববর্ষ। শিল্পী কৃষকের সৌন্দর্যময় ফসলের মাঠ দেখতে প্রতিদিন ভিড় করছেন মানুষ।
গত বছরও নিজের স্ত্রীর প্রতি ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ হিসেবে ‘ভালোবাসার জমিন’ বানিয়েছিলেন কৃষক আবদুল কাদির। ফসলের মাঠে ‘নকশি কাঁথা’’ এঁকে আলোচিত হয়েছিলেন তিনি। এবার তার ভালোবাসার জমিনে লালশাক আর সরিষা দিয়ে আঁকলেন বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য।
এদিকে, ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাধন কুমার গুহ মজুমদার জানান, কৃষক কাদির মানসিক সৌন্দর্যের বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছেন ফসলের মাঠে। আর্থিক লাভবান না হলেও দূর-দূরান্ত থেকে লোকজন শৈল্পিক কাজ দেখতে আসার মধ্যেই তৃপ্তি কৃষকর। তার কাজে কৃষি বিভাগ গর্বিত। তাকে রাজস্ব বাজেটের সরিষার প্রদর্শনী মাঠ দেওয়া হয়েছে। আগামী বছরের বঙ্গবন্ধু কৃষি পদকের জন্য তার নাম প্রস্তাব করা হবে।