তিমির বনিক, মৌলভীবাজার প্রতিনিধি: মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার কাদিপুরে রয়েছে দেশের অন্যতম দর্শনীয় সুন্দর ও আকর্ষণীয় মন্দির। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কাছে মন্দিরটি কাদিপুর-শিববাড়ি নামে পরিচিত। এবারের দুর্গাপূজায় এ মন্দিরের আকর্ষণ থাকছে এক হাজার হাতের প্রতিমা মূর্ত। চারবছর ধরে তৈরি করা এ প্রতিমার কাজ শেষ পর্যায়ে। এখন চলছে রঙের কাজ।
শিববাড়ি মন্দিরের অপরুপ সৌন্দর্য্য ও আশপাশের প্রাকৃতিক দৃশ্য খুব সহজেই পর্যটকদের মন কেড়ে নেয়। অত্যাধুনিক মনোমুগ্ধকর এই মন্দির পূণ্যার্থীদের কাছে একটি তীর্থ স্থান হিসেবে বিবেচিত। যা দৃষ্টিনন্দন স্থাপত্যশৈলীর শৈল্পিকতায় মুগ্ধ করে পূণ্যার্থীসহ আগতদের।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নয়নাভিরাম নানা কারুকাজ ও শৈল্পিক শৈল্পিকতার তুলির আঁচড় আর চারপাশের নৈসর্গিক প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের নিদর্শন শিববাড়ি মন্দির। দুর্গাপূজা এলেই এখানে দেশ-বিদেশের নানা প্রান্ত থেকে আসেন দর্শনার্থীরা। তবে দুর্গাপূজা ছাড়াও বছর জুড়ে শিববাড়িতে মনস্কামনা পূরণে আসেন দুর দূরান্তের ভক্তরা।
মন্দিরটির রক্ষণাবেক্ষণ ও প্রধান পুজারি দায়িত্বে থাকা আচার্য পুলক সোম বলেন, সহস্রভুজা (এক হাজার হাত) দেবীদুর্গার প্রতিমা নির্মাণ শুরু হয় ২০১৮ সালে নভেম্বর মাসে। কিন্তু করোনাকালে বৈশ্বিক মহামারীতে কাজের ধীরগতি থাকায় নির্মাণ কাজ বিলম্ব হয়। ২০ জন নির্মাণ শিল্পীর হাতের ছোঁয়ার চার বছর ধরে তৈরি করা হচ্ছে প্রতিমাটি। গত মাসে প্রতিমার কাজ প্রায় শেষ হয়েছে। এ প্রতিমা নির্মাণে পাথর, সিমেন্ট, রড ও বালু ব্যবহার করা হয়।
তিনি আরও বলেন, ১লা অক্টোবর মহাষষ্ঠীর পূর্বেই আনুষঙ্গিক সব কাজ শেষ হবে। পাথরের তৈরি প্রায় ২৩ ফুট উঁচু তপ্তকাঞ্চন বর্ণের সহস্রভুজা প্রতিমায় এখন রঙের কাজ চলছে। মহাষষ্ঠীর দিন দুর্গাপূজার মূল আচার অনুষ্ঠান শুরু হবে।
পুণ্যার্থীরা জানান, এই মন্দিরে পুজার সময় এসে হাজারো মানুষের সাথে দেবীর দর্শন করাটাও আমরা সৌভাগ্য মনে করি। পূজার সময় ভক্তদের ভিড়ে মুখর হয়ে উঠে ঐতিহাসিক অনিন্দ্যসুন্দর এ মন্দিরটি। সারাবছর পুণ্যার্থীদের আগমন থাকেই। তবে এবার একহাজার হাতের প্রতিমা দর্শন করতে প্রতিবারের চাইতেও এবার বেশি পুণ্যার্থীদের আগমন হতে পারে বলে ধারনা করছেন।
উল্লেখ্যঃ মৌলভীবাজার জেলায় এবার ১০০৭ টি মন্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হবে। এবারের পূজায় সাত শতাধিক পুলিশ তিন স্তরে মোতায়েন থাকবে। এছাড়া প্রায় সাড়ে ছয় হাজার আনসার মোতায়েনের পাশাপাশি বিভিন্ন পর্যায়ের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী থাকবে বলে জেলা আইন-শৃঙ্খলা সভায় সিদ্ধান্ত হয়।