ভারতের উত্তরপ্রদেশের একটি স্কুলে মুসলিম সহপাঠীকে শিক্ষার্থীদের চড় মারতে এক শিক্ষিকার নির্দেশ দেয়ার ঘটনায় ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার মাঝে স্কুলটি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে এ সংক্রান্ত একটি নোটিশ পাঠিয়েছে রাজ্য শিক্ষা দফতর।
রোববার ভারতের সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে উত্তরপ্রদেশের স্কুলটি বন্ধ করে দেয়ার এই খবর দেয়া হয়েছে। দেশটির কর্তৃপক্ষ বলেছে, এই ঘটনার তদন্তের জন্য স্কুলটি আপাতত বন্ধ থাকবে।
বন্ধ থাকার কারণে ওই স্কুলের শিক্ষার্থীদের যেন পড়াশোনার ক্ষতি না হয়, সে জন্য তাদের কাছের স্কুলগুলোতে ভর্তির নির্দেশ দেয়া হয়েছে ওই নোটিশে।
গত বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) মুজাফফরনগরের খুব্বাপুর গ্রামের নেহা পাবলিক স্কুলে হোমওয়ার্ক না করায় এক মুসলিম শিশুকে তার সহপাঠীদের দিয়ে থাপ্পড় মারা হয়। স্কুলের অধ্যক্ষ ত্রীপ্তা তিয়াগী সাত বছর বয়সী শিশুটিকে থাপ্পড় মারার জন্য তার সহপাঠীদের নির্দেশ দেন।
এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এতে দেখা যাচ্ছে, ভুক্তভোগী শিশুটি এক পাশে দাঁড়িয়ে কাঁদছে আর শিক্ষিকা তৃপ্তি অন্য শিশুদের একে একে উঠে এসে ওই শিশুকে চড় মারতে নির্দেশ দিচ্ছেন।
নেহা পাবলিক স্কুলের শিক্ষিকা তৃপ্তি ত্যাগী অবশ্য তার এমন কাণ্ডের পক্ষে সাফাই গেয়ে বলেছেন, এটি নিছকই সামান্য একটি ঘটনা। তবে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে।
তৃপ্তি ত্যাগি বলেছেন, তিনি সাম্প্রদায়িক দৃষ্টিকোণ থেকে এমন নির্দেশ দেননি। শিশুটি হোমওয়ার্ক না করায় তাকে থাপ্পড় মারতে কিছু শিক্ষার্থীকে নির্দেশ দিয়েছিলেন বলে দাবি করেছেন তিনি।
আত্মপক্ষ সমর্থন করে তিনি বলেন, শিশুটির বাবা-মা তার ব্যাপারে কঠোর হওয়ার জন্য আমাকে চাপ দিয়েছিল। আর আমি প্রতিবন্ধী। তাই তাকে চড় মারার জন্য কিছু ছাত্রকে নির্দেশ দিয়েছিলাম, যাতে সে তার বাড়ির কাজ করা শুরু করে।
শিশুটি ও তার বাবা-মাকে প্রদেশের শিশু কল্যাণ কমিটি কাউন্সেলিং করেছে। শিশুটির বাবা বলেছেন, আমার ছেলের বয়স ৭ বছর। এই ঘটনাটি ২৪ আগস্ট ঘটেছিল। ওই শিক্ষিকা ছাত্রদের আমার ছেলেকে বারবার মারতে বাধ্য করেছেন। আমার ছেলেকে এক বা দুই ঘণ্টা ধরে নির্যাতন করা হয়েছে। সে ভয় পেয়েছে।
শিশুটিকে থাপ্পড় মারার ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। দেশটির রাজনীতিকরাও এই ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন। শিশুটির বাবা বলেছেন, তিনি স্কুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনবেন না। তবে তার সন্তানকে আর ওই স্কুলে পাঠাবেন না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
ডিবিএন/ডিআর/তাসফিয়া করিম