বি এন পি’র সেক্রেটারি জেনারেল আর তাদের প্রচার বাক্স রিজভী আহাম্মেদ বলেছেন, জেনারেল জিয়ার বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করছে সরকার। মিথ্যা প্রচারনা করে জিয়াকে হেয় করা হচ্ছে। ১৫ই আগষ্ট জাতীয় শোক দিবসে এবার খালেদা জিয়ার জন্মদিনের কেক কাটেনি কিন্তু জাতীর জনকের শাহাদত বার্ষিকিতে শোক প্রকাশও করেনি বি এন পি। মিথ্যা জন্মদিনের কেক না কাটলেও মেজর সিনহার হত্যার বিচার দাবী করেছে একইভাবে দিবসটিকে উপহাস করার জন্য। আগষ্ট মাস জুড়েই টেলিভিশন চ্যনেলগুলি বংগবন্ধু আর ১৫ ই আগষ্টের ঘটনার সচিত্র প্রতিবেদন প্রচার করেছে। এইসব চিত্র পরিস্কার দেখিয়ে দিয়েছে, ১৫ ই আগষ্টের হত্যা পরিকল্পনা কারা কিভাবে কোথায় বসে করেছে। কর্নেল ফারুক এবং রশিদ লন্ডনে যে টেলিভিশন সাক্ষাতকার দিয়েছে, সেই রেকর্ডটিও প্রচার করেছে টেলিভিশন চ্যানেলে। এই দুই খুনী নীজমূখে জেনারেল জিয়ার কথা উল্লেখ করেছে। ঘুম থেকে উঠে জিয়া সেভ করে প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন পুর্ব পরিকল্পিতভাবেই। খুনী মাজেদও ফাঁসিতে যাওয়ার আগে যে বক্তব্য দিয়ে গেছে, সেখানেও ১৫ ই আগষ্ট জিয়ার ব্যস্ততার কথা বলে গেছে। মাসব্যাপি আলোচনায় বিজ্ঞজনেরাও টেলিভিশনে বসে যেসব তথ্য প্রকাশ করেছেন, তার কোন টিকে রিজভীরা মিথ্যা বলবেন? যদি জানা থাকে তাহলে রিজভীরা বলছেন না কেন? কোন কথাটি মিথ্যা বলেছেন তারা! যদি প্রচারীত তথ্যচিত্র বা কোন বক্তব্য মিথ্যা প্রমান করতে না পারেন তাহলে, সরকার জিয়াকে নিয়ে মিথ্যাচার করছে দাবী করলেন কোন যুক্তিতে? ৪৫ বছরেও বি এন পি বংগবন্ধু হত্যায় জিয়ার সম্পৃক্ততা কথা স্বীকার না করে মিথ্যাচার করে আসছে। জাতীর জনকের মৃত্যু বার্ষিকীতে বেগম জিয়ার জন্মদিন বলে মিথ্যাচার করেছে। স্বাধীনতার ইতিহাস বদল করে মিথ্যাচার করেছে। রাজাকার, আলবদর, আল- শামসের নেতাদের জাতীয় নেতা বানিয়ে মিথ্যাচার করেছে। ২১ শে আগষ্টে শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা করে ২৪ জনকে হত্যা করে, জজ মিয়ার মিথ্যাচার করেছে। এতিমের টাকা আত্মসাৎ করে মিথ্যাচার করেছে। আগুন সন্ত্রাসে আন্দোলনের নামে মিথ্যাচার করেছে। আর কি কি করলে বি এন পি নেতাদের মনে হবে, তারা নীজেরাই মিথ্যা নির্ভর হয়ে মিথ্যার রাজনীতি করছে? মিথ্যার সংজ্ঞাটাই পাল্টে দিয়েছে বি এন পি। মিথ্যা বলে বলে লজ্জাটিও আর নেই নেতাদের। একটা মিথ্যাকে অবশ্য বি এন পি বাদ দিয়েছে এবার, বেগম জিয়ার মিথ্যা জন্মদিনটি বন্ধ করেছে। ১৫ ই আগষ্টে জাতীর জনকের হত্যায় জেঃ জিয়ার সম্পৃক্ততাটিও একদিন স্বীকার হবে বন্ধ হবে গলাবাজিটিও। একটু সময় লাগবে, মিথ্যার স্থায়িত্ব বেশী দিন থাকেনা। সত্যের জয় হবেই একদিন। এখন দাবী উঠেছে, বংগবন্ধু হত্যার নেপথ্যের নায়কদের বিচারের। সেই বিচারটি শুরু হলে মরনোত্তর বিচার হবে অনেকের। সেদিন প্রচার বাক্সটিও আর খুলবেনা। অন্যের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে গলাবাজি করা যায়, রাজনীতি করা যায়না কারন, জনগন এখন সবই দেখে আর বোঝে। দেশের পরিবর্তনটি বি এন পি নেতারা না দেখলেও দেশের জনগন ঠিকই দেখছে। অপরাধ আর অপরাধী রাজনীতির অংশ নয় সে কথা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বুঝিয়ে দিয়েছেন। সিনহা হত্যার বিচার হচ্ছে এবং অপরাধীরাও এখন আইনের হাতে বন্দি। এই সব ইস্যুকে সম্বল করে রাজপথ কাঁপানোর হুংকার দিয়ে লাভ হবেনা। বরং সত্য উপলব্ধি করে নীজেরাই আত্নসমালোচনা করে দেশ এবং মানূষের কল্যানে কাজ করাই হবে এখন বি এন পি নেতাদের করনীয়। বি এন পি বড় দল, তাদের উচিত হবে গনতান্ত্রিক পন্থায় দেশের স্বার্থে জনগনের পাশে এসে দাড়ানো। হঠকারি সিদ্ধান্তে দলটি এখন নিস্কৃয় হয়ে পরেছে। দলকে সংগঠিত করতে নেতৃত্বের পরিবর্তন দরকার বি এন পি’র। মিথ্যার বাক্স বাজিয়ে কর্মীবাহিনীকে ধরে রাখা যাবেনা, সময়টিও দ্রুত চলে যাচ্ছে।
আজিজুর রহমান প্রিন্স
রাজনীতিবিদ, লেখক ও গবেষক
টরেন্টো, কানাডা
১৮ আগষ্ট ২০২০।