হঠাৎ করেই বি এন পি তৎপর হয়ে উঠেছে। কেমন যেন একটা আন্দোলন আন্দোলন ভাব দেখাচ্ছে। তারেক জিয়াও লন্ডন থেকে আন্দোলনের হুংকার দিচ্ছে। যোগাযোগ বন্ধ করে দিতে নেতা কর্মীদের নির্দেশ দিয়েছে। কিন্তু কেন? হঠাৎ এমন উত্তেজিত হওয়ার কারন কি? বি এন পি’নেতাদের বক্তব্য শুনে মনেহয় যেন সরকারের পতন ঘটিয়েই ছাড়বে এবার। কিন্তু আসলেই কি বি এন পি’র আন্দোলন করার ক্ষমতা আছে? ডাক দিলেইকি মানুষ আন্দোলনে ঝাপিয়ে পরবে? ১৩ বছরে বহু সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে দেশে। বি এন পি কোন কিছুতেই যোগ্য ভূমিকা রাখতে পারেনি! করোনার ভেকসিন নিয়ে মিথ্যাচার করেছে বি এন পি নেতারা। তাদের কথায় বিশ্বাস করে জীবন গেছে মানুষের। নিজেরা ভেকসিন নিয়ে ভাল থেকেছেন। পল্টনের অফিসে বসে নিত্য সন্ধায় লিখিত বক্তব্য পড়লেই রাজনীতি হয়না। জনগনের পাশে এসে দাড়াতে হয়। বি এন পি রাজনীতির সেই শর্তটি পুরন করতে পারেনি। ২০০৯ সাল থেকে তত্বাবধায়ক সরকারের অধিনে নির্বাচন দাবী করে আসছে। কিন্তু আজও পর্যন্ত তত্বাবধায়ক সরকারের রূপরেখাটি বর্ননা করতে পারেনি। দলের দুই শির্ষ নেতা নির্বাচনে অযোগ্য। তাহলে বি এন পি’র এই উত্তেজনার কারন কি?
কারন আছে! বি এন পি জানে আগামী নির্বাচনেও তারা ব্যর্থ হবে। বি এন পি’র হাতে এমন কোন ইস্যু নেই যা বলে জনগনের কাছে ভোট চাইবে। নির্বাচনে জিতে গেলে কে হবেন সরকার প্রধান বলতে পারেনি বি এন পি। নির্বাচনে অংশ না নিলে বা সরকার গঠনে ব্যর্থ হলে দলটি অস্তিত্ব সঙ্কটে পরবে। তাই তারা দেশে একটা অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চায়। বি এন পি চায় সামরিক বাহিনী কিছুদিন ক্ষমতায় থাকুক। মিলিটারির সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে ক্ষমতায় যাওয়ার ব্যবস্থাটি তৈয়ার করে নিবে তারা। সামরিক বাহিনীর অধীনে নির্বাচন হলে বি এন পি’কেই সমর্থন দিবে সামরিক বাহিনী। এমনই ভাবে বি এন পি।
বাস্তবতাটি মোটেও তেমন নয়। সামরিক বাহিনী আর কারও বাহক হতে চায়না। সেনাবাহিনীর ভাবনা বদলে গেছে। তারেক’কে নিয়েও বি এন পি’তে মতবিরোধ আছে। নেতৃত্বে যারা রয়েছেন তারা অনেকেই তারেকের নেতৃত্ব মেনে নিবেনা। জামাতের গন্ধটি লেগে রয়েছে বি এন পি’র গায়ে। গন্ধ ছুটাতে দলের নেতারা চিন্তিত। ভোটের হিসাবেও বি এন পি পিছিয়ে। ৩২% শতাংশর ভোট ব্যঙ্ক রয়েছে বি এন পি’র। এর বিপরিতে আওয়ামী লীগের রয়েছে ৩৪% শতাংশ। জোটের ভোট যুক্ত হলে এই হিসাবটিও বদলে যায়। বি এন পি ভোট ব্যঙ্ক বাড়াতে পারেনি বরং কমেছে জামাতের কারনে। বাস্তবতাটি বি এন পি জানে। আর জানে বলেই আগামী নির্বাচনের আগেই দেশে একটা অস্থিতিশীল অবস্থা সৃষ্টি করতে চায়। মিথ্যা আর অসত্য প্রোপাগান্ডা চালিয়ে মানুষের মনে ভীতি সৃষ্টি করতে চায়। এখন যে সব শ্লোগান দিচ্ছে, ভোট ডাকাতির অভিযোগ করছে তা নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকা দেওয়ার কৌশল মাত্র। বিগত নির্বাচনে বি এন পি প্রচারনাও চালায়নি। আওয়ামী লীগের জন্য বি এন পি হুমকি নয়। নির্বাচনে বি এন পি’র অংশগ্রহন গনতন্ত্রের জন্য জরুরী। কিন্তু বি এন পি নির্বাচনে যাবে না। মানুষ বি এন পি’কে নির্বাচনে না যাওয়ার জন্য দায়ী করবে তাই একটি খোঁড়া যুক্তি তৈয়ার করে রাখতে চায়!
মানুষ বি এন পি’কে ভোট দিবে কেন? গত ১৩ বছর বি এন পি’র রাজিনীতির সাফল্য কি? দেশের মানুষ কি বোকা ভেবেছে বি এন পি নেতারা? গত ১৩ বছরে দেশ কোথা থেকে কোথায় এসে পৌছেছে তা কি জনগন দেখছেনা?
ইলিয়াছ, কনক সরোয়ার, কেপ্টেন সহিদ, কর্নেল দেলোয়ার যে সব মিথ্যাচার করেছে৷ তার কোনটি সত্য হয়েছে? প্রোপাগান্ডা সত্য হলে এতদিন সরকারের থাকত না। প্রচারনায় বিশ্বাস করে কোন মানুষ রাস্তায়ও নেমে আসেনি! বছরের পর বছর ধরে বিদেশে বসে যারা অপপ্রচার চালায় তারা একদিন থেমে যাবে। কারন মিথ্যা নির্ভর রাজনীতি স্থায়ী হয়না।
আজিজুর রহমান প্রিন্স
টরন্টো, কানাডা
২৮ সেপ্টম্বর ২০২১।