ব্যাপক আলোচিত খুলনার রহিমা বেগম অপহরণ মামলায় পুলিশ ব্যুরো অব ইভেস্টিগেশন (পিবিআই) আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। পিবিআই প্রতিবেদনে পরিকল্পিতভাবে এ নাটক করার জন্য রহিমা এবং তার দুই মেয়ে মরিয়ম মান্নান ও আদুরী আক্তারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আদালতে সুপারিশ করেছে।
আজ সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে মহানগর হাকিমের আদালতে এ তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন পিবিআই পরিদর্শক তদন্ত কর্মকর্তা আব্দুল মান্নান।
এ খুলনা পিবিআই পুলিশ সুপার (এসপি) সৈয়দ মুশফিকুর রহমান ১৩ ফেব্রুয়ারি দুপুরে এক প্রেস ব্রিফিং করেন। তিনি বলেন, রহিমা বেগম আব্দুল মান্নানের তৃতীয় স্ত্রী। মূলত জমি রক্ষার জন্য মরিয়ম মান্নানের পরিকল্পনায় তার মা রহিমা বেগম আত্মগোপন করেন। আর মরিয়মের বোন আদুরী থানায় অপহরণ মামলা করেন। এ পরিকল্পনার আগে রহিমা তার বর্তমান স্বামী বেল্লাল ঘটককে বলেছিল, রহিমা তিন-চার মাস এখানে না থাকলে তার কোনও অসুবিধা হবে কিনা। এ কারণে বেল্লাল ঘটক এ ঘটনার সাক্ষী। আর আত্মগোপনে যাওয়ার আগে মরিয়ম মান্নানই রহিমাকে বিকাশে ১০০০ টাকা পাঠান। আর ফরিদপুর থেকে বান্দরবান যাওয়ার পথে রহিমাকে ঢাকা থেকে কিছু কাপড় পাঠান। যা জিজ্ঞাসাবাদে রহিমা প্রথমে স্বীকার করলেও পরে তা ঘোরাতে চেষ্টা করেন।
“ডিজিটাল বাংলা নিউজ” অনলাইনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
এসপি আরও বলেন, প্রেস ব্রিফিংয়ের আগেই আদালতে ফাইনাল রিপোর্ট দেওয়া হয়েছে। ওই রিপোর্টেই তিন জনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আদালতে সুপারিশ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ২০২২ সালের ২৭ আগস্ট রাত সাড়ে ১০টার দিকে খুলনার দৌলতপুরের মহেশ্বরপাশার বণিকপাড়া থেকে রহিমা বেগম নিখোঁজ হন বলে মরিয়ম মান্নান ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে প্রচার করেন। একই দিনে দিবাগত রাত সোয়া ২টার দৌলতপুর থানায় মায়ের অপহরণ হওয়ার কথা উল্লেখ করে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন রহিমার ছেলে মিরাজ আল সাদী। পরে মাকে পাওয়া যাচ্ছে না জানিয়ে ২৮ আগস্টে দৌলতপুর থানায় বাদী হয়ে মামলা করেন রহিমার মেয়ে আদুরী আক্তার। এরপর ২২ সেপ্টেম্বর রাতে মরিয়ম নিজের ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে দাবি করেন মায়ের লাশ পেয়েছেন। পরে ২৩ সেপ্টেম্বর ফুলপুর থানায় গিয়ে লিখিত দেন ওই লাশ তার মায়ের। এদিকে বিষয়টি নিশ্চিত হতে মরিয়মের ডিএনএ টেস্ট করেছিল পুলিশ। এতে জানা যায় এটি তাঁর মায়ের লাশ নয়। পরে ২৪ সেপ্টেম্বর রাতে ফরিদপুর থেকে রহিমাকে উদ্ধার করে পুলিশ। বর্তমানে রহিমা বেগম মেয়ে আদুরী আক্তারের জিম্মায় খুলনা শহরের একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করছেন।
ডিবিএন/এসডিআর/মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান