বাঙলীর জীবনে মার্চ এক গুরত্বপুর্ন মাস। এই মাসেই জন্মেছিলেন সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙালী জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ৭১ সালের ৭ই মার্চ বিকেলে বঙ্গবন্ধু ঐতিহাসিক ভাষন দিয়েছিলেন। ঐ সালেই পাকিস্তানিরা হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিল ২৫ শে মার্চ রাতে। বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার আনুষ্ঠানিক ঘোষনা দিয়েছিলেন ২৫ শে মার্চ রাতে। মার্চ মাস বাঙালী জীবনে অবিস্মরনিয় হয়ে রয়েছে নানা কারনে। এই মাসেই স্বজন হারানোর স্মৃতি রয়েছে বহু মানুষের। তাই স্মৃতির পাতা উল্টেপাল্টে স্মরন করেছি বহু জনেরে। অবনত চিত্তে শ্রদ্ধা জানিয়েছি ৩০ লক্ষ শহীদ, আহত মুক্তিযোদ্ধা সম্ভ্রম হারাদের। অগনিত মানুষ যারা সব হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছে, দৈন্যতায় ভুগেছে স্বচল হতে পারেনি আর তাদেরও। দুর্দশায় পতিত হয়ে দুর্ভোগ সয়েছি অনাহারি থেকেছি আমরাও। সব হারিয়ে বাবা আর ঘুড়ে দাড়াতে পারেননি আমরন। অভুক্ত পরিবারের নির্মম দুর্দশাটি ভুলতে পারিনি আজও। সন্তান হিসাবে পরিবারের সেই স্মৃতি পিড়াদেয় এখনও। অনেকেই এখন আর মনে করতে চায়না কিন্তু বিপর্যয় ছিল সব পরিবারেই। গ্রামের পরিত্যক্ত ঘরগুলি মুখোরিত হয়েছিল ৭১ এর মার্চ মাসে। শহুরে মানুষগুলি আশ্রয় নিয়ে ছিল পরিত্যক্ত ভিটায়। নয়টি মাস নিত্য সঙ্কা ছিল মরনের। খুব কম পরিবারই আছে যারা আপনজন হারায়নি। অবারিত সময় ছিল,আড্ডা ছিল অবিরাম। দল বেধে আড্ডা চলেছে বয়সী সতীর্থদের সাথে। জাম্বুরা দিয়ে বল খেলেছি, বাধাহীন গল্প করেছি, গান গেয়েছি বেসুরা কন্ঠে দল বেধে। স্বাধীন বাংলার অনুষ্ঠান শুনেছি প্রতিদিন। বহু গল্প শুনেছি উৎসাহ দেখেছি বিজয়ের উল্লাস দেখেছি বাঙালীর। রাজাকার আলবদর আল শামস দেখেছি স্বাধীনতার বিরুদ্ধে। স্বাধীনতা বিরোধীদের পরিনতিও দেখেছি। কিছু দিন আত্নগোপনে থাকতে হয়েছে কিন্তু সফল হয়েছে তারাই বেশী। অবহেলিত হয়েছে মুক্তি যোদ্ধা। এখন দলিল খুজে দেখাতে হয় স্বাধীনিতার সত্যটি।অমুক্তিযোদ্ধারা মুক্তি যোদ্ধা বনে গেছে বিভক্ত হয়েগেছে দল। রাজনীতিতে যুক্ত হয়ে রাজাকারের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে মুক্তি যোদ্ধা। মার্চ স্বাধীনতার মাস হলেও ঘোষক নিয়ে বিতর্ক হয় রাজনীতিতে। ৭৫ এর পর সব স্মৃতি বদলে দিয়েছে। অপরাধীরা খেতাব পেয়েছে মুক্তি সেনারা হয়েছে প্রত্যাখ্যত। নতুন প্রজন্মকে শিখানো হয়েছে বানানো ইতিহাস। নিজেদের মত করে ইতিহাস বলে বিভ্রান্ত করেছে জাতীকে। কুখ্যাত রাজাকার মিন্ত্রী হয়েছে রাষ্ট্রপিতি হয়েছে এই দেশে। দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান মুক্তি যোদ্ধারা নির্বাক হয়ে কেদেছে বিস্ময়ে। এখন রাজাকার দাবী করে যুদ্ধাপরাধী নেই বাংলাদেশে। ভুলে গেছে মুক্তি যূদ্ধ আর গর্বের গৌরিব। রাজাকারের দম্ভ দেখে হতবাক হই বিস্ময়ে। মার্চ এলেই শুরু হয় আলোচনা, এখন ভার্চুয়াল অনুষ্ঠান মিডিয়াতে সয়লাব। ইতিমধ্যে দু’একটি নজরেও পরেছে কিন্তু আলোচকদের বক্তব্য শুনে হতবাক হয়েছি। দলের নেতারাও অতিরঞ্জিত বলে মার্চের গুরত্ব কমিয়ে দিয়েছে। মার্চ নিয়ে এমন উপস্থাপনা সঠিক নয়। সত্য গোপন করে রাজনীতির ফয়দা হাসিল করা অন্যায়। এইদিনে দেশের মানুষের মনের স্মৃতি সংগ্রহনের উদ্যোগ নিলে জাতী উপকৃত হবে। টেলিভিশনে বসে ভুল তথ্য নয় একাত্তরের চিত্র প্রত্যক্ষদর্শিদের কাছ থেকে গ্রথিত হলে মার্চের প্রতি যোগ্য সম্মান দেখানো হবে। মার্চের ইতিহাস সংরক্ষিত হবে সঠিকভাবে।