ডায়ালাইসিসের ব্যয় মেটাতে না পেরে ৯০ ভাগ কিডনি রোগীই মৃত্যুর শিকার হচ্ছে। বেসরকারি হাসপাতালে কিডনির ডায়ালাইসিস ব্যয় প্রকৃত খরচের দ্বিগুণ তিনগুণ হওয়ায় মাঝপথে চিকিৎসা বন্ধ হচ্ছে সিংহভাগের। সমস্যা সমাধানে হোম ডায়ালাইসিসের সুযোগ সৃষ্টি ও সীমিত লাভে ডায়ালাইসিস সেবা দিতে বেসরকারি হাসপাতাল মালিকদের প্রতি আহ্বান চিকিৎসকদের।
ফরিদা বেগম বলেন, ‘সব সময় টাকা পয়সা থাকে না। জমি জমা সব বিক্রি করে দিয়েছি। তাতেও টাকায় কুলাচ্ছে না।’
সরকারি হাসপাতালেই সপ্তাহে ডায়ালাইসিস ও আনুষঙ্গিক ব্যয় অন্তত ১০ হাজার টাকা। হাসপাতাল ভেদে বেসরকারিতে এই ব্যয় ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত। বেসরকারি সেবা কেন্দ্রগুলো প্রকৃত খরচের কয়েকগুণ মুনাফা করায় পথে নামতে বাধ্য হচ্ছে লাখো পরিবার।
রোগীর এক আত্মীয় বলেন, ‘৪০ হাজার টাকার নিচে কোনো রোগী সপ্তাহে দুই দিন ডায়ালাসিস করতে পারে না।’ এক রোগী বলেন, ‘স্বাস্থ্যখাতে যে দুর্নীতি হচ্ছে তা বন্ধ করতে পারলে জেলা পর্যায়ে ডায়ালাসিস সুবিধা দেয়া সম্ভব।’
এক্ষেত্রে সরকারি সহযোগিতায় উন্নত দেশগুলোর মতো ব্যাপকভাবে হোম ডায়ালাইসিসের সুযোগ সৃষ্টির আহ্বান বিশেষজ্ঞদের।
কিডনি ফাউন্ডেশনের সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন অর রশীদ বলেন, ‘আমরা হিসাব করে দেখেছি প্রতিদিন বিনা লাভ ছাড়ায় ২৩শ’ টাকায় ডায়ালেসিস করা সম্ভব।’
ব্যয় কমানোসহ প্রতিটি জেলায় কিডনি রোগের সেবা ছড়িয়ে দিতে সরকার কাজ করছে বলে জানান জাতীয় কিডনি ইনস্টিটিউট পরিচালক অধ্যাপক ডা নুরুল হুদা লেলিন। তিনি বলেন, ‘যদি সদিচ্ছা থাকে মানুষকে সেবা দেয়ার তাহলে প্রাইভেট হাসপাতালে সেবার মান বাড়িয়ে খরচের হার কমিয়ে আনা উচিত।’
ডায়ালাইসিস প্রয়োজন এমন রোগীদের মাত্র ২০ ভাগ চিকিৎসা নিতে পারেন। এদের মধ্যে আবার ৮০ থেকে ৯০ ভাগ অর্থের অভাবে মাঝপথে চিকিৎসার অভাবে মারা যায়। তাই সরকারের সহযোগিতার পাশাপাশি বেসরকারি হাসপাতালের ডায়ালাইসিস ব্যয় নাগালের মধ্যে আনার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের।