নওগাঁর মান্দায় অবৈধভাবে মাটি উত্তোলন ও পরিবেশ দূষণের প্রতিবাদে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে৷ বাংলা ১৪২৮ সনের জন্য ইজারা দেওয়া হয়েছে আত্রাই নদীর ভাটি অংশের বালুমহাল। কিন্তু নদী থেকে বালু উত্তোলন না করে ইজারাদার অবৈধভাবে কেটে নিচ্ছেন পাড়সংলগ্ন ফসলি জমির মাটি। স্থানীয়দের কোনো বাধাই তোয়াক্কা করা হচ্ছে না। এতে নদীর গতিপথ পরিবর্তন হয়ে ভাঙনের কবলে পড়েছে নদীর পাড় সংলগ্ন ফসলি জমি, ফলদ ও বনজ বাগান। চরম হুমকিতে রয়েছে শশ্মানঘাট, খেয়াঘাট, বাজার রক্ষা বাঁধ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বসতবাড়ি, মাদ্রাসা, ঈদগাহসহ বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ। চরম হুমকিতে পড়েছে ফকিন্নি নদীর ওপর নির্মিত সেতু। ইজারাদারের অবৈধ মাটি কাটা বন্ধের দাবিতে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেও প্রতিকার মিলছে না।
অবশেষে ইজারাদারের কবল থেকে ফসলি জমি, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানসহ ফকিন্নি নদীর সেতু বাঁচাতে আজ বুধবার বিকেলে ত্রিমোহিনী এলাকায় নদীর সংলগ্ন রাস্তায় মানববন্ধন করেন ভূমি মালিক, নুরুল্লাবাদ বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয় ও কারিগরি কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও স্থানীয় বাসিন্দারা।
মানববন্ধন চলাকালে সংক্ষিপ্ত প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য দেন নুরুল্লাবাদ বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয় ও কারিগরি কলেজের অধ্যক্ষ ফজলে রাব্বী তারেক, সহকারী শিক্ষক কামরুজ্জামান, ভূমি মালিক আল মামুন, স্থানীয় বাসিন্দা সোহেল রানা, শিক্ষার্থী হালিমা আক্তার শান্ত, আশিকুজ্জামান অন্ত প্রমূখ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, বাংলা ১৪২৮ সনে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে আত্রাই নদীর ভাটি অংশের বালুমহাল ইজারার জন্য দরপত্র আহবান করা হয়। এতে ৫২ লাখ ৯৪ হাজার ৭০১ টাকায় এ বালুমহাল ইজারা নেন নকিব এন্টারপ্রাইজ। ইজারাদার নদী থেকে বালু উত্তোলন না করে খননযন্ত্র দিয়ে পাড় সংলগ্ন ফসলি জমির মাটি কেটে বিক্রি করছেন। এতে আশপাশের ফসলি জমি, ফলদ ও বনজ বাগানসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান চরম হুমকির মুখে পড়েছে। বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, বাধা নিষেধ করার পরও গায়ের জোরে মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছেন ইজারাদার। নওগাঁ জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিয়েও প্রতিকার মিলছে না। অবিলম্বে মাটিকাটা বন্ধসহ ইজারাদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া না হলে বৃহত্তর আন্দোলনের ডাক দেওয়ারও ঘোষণা দেন বক্তারা।
এ প্রসঙ্গে ইজারাদার রহমতুল্যা মোল্লা বলেন, দরপত্রের মাধ্যমে আত্রাই নদীর ভাটি অংশের বালুমহাল ইজারা নেওয়া হয়েছে। নীতিমালা অনুয়ায়ী বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। এখানে বিদ্যালয়ের সম্পত্তি দখল করে মাটি কাটা হয়নি।
মান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু বাক্কার সিদ্দিক বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।