মৌলভীবাজারের বড়লেখার পাথারিয়া গাংকুল মনসুরিয়া ফাজিল ডিগ্রী মাদ্রাসার ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে দাখিলের নির্বাচনী পরীক্ষার্থী ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করার অভিযোগে দুই বখাটে যুবককে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। বুধবার বিকেলে এ ঘটনা ঘটে।
দন্ডিত বখাটেরা হচ্ছে, উপজেলার গাংকুল গ্রামের ছাদ উদ্দিন ছাদই মিয়ার ছেলে শাকিল আহমদ (২৩) ও পূর্ব-গাংকুল গ্রামের অতুব মিয়ার ছেলে সোহেদ আহমদ (২৩)।
ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) জাহাঙ্গীর হোসাইন। এসময় থানার ওসি (তদন্ত) ফরিদ উদ্দিন, সেকেন্ড অফিসার এসআই হাবিবুর রহমান পিপিএম, মাদ্রাসার অধ্যক্ষ এএফএইচ ইউসুফ আলী, উপাধ্যক্ষ শরফ উদ্দিন আমহদ, সাবেক ইউপি সদস্য ইকবাল হোসেন, মাদ্রাসার গভর্নিংবডির সদস্যবৃন্দ, শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও এলাকার গণ্যমান্য বক্তিবর্গ।
জানা গেছে, বুধবার বিকালের শিফটে দাখিলের নির্বাচনী পরীক্ষার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ের পরীক্ষা দিতে ছাত্রীরা দুপুর একটার দিকে মাদ্রাসায় পৌঁছে সহপাঠীদের নিয়ে কলম কিনতে পাশের লাইব্রেরীতে যায়। সেখান থেকে ফেরার সময় শাকিল আহমদ, সোহেদ আহমদ ও সুমন আহমদ নামক তিন বখাটে পথ আটকে ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করে। ঘটনাটি দেখে মাদ্রাসার ফাজিল প্রথম বর্ষের ছাত্র জেবুল আহমদ ও ফাজিল দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র মুছা আহমদ তাদের মাদ্রাসা ছাত্রীকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ জানায়। এর জেরে তিন বখাটে মিলে দুই ছাত্রকে দা দিয়ে কোপানোর চেষ্টা চালায়। এক বখাটের দায়ের কোপে জেবুল আহমদের গলায় জখম হয়। পরে ছাত্ররা ধাওয়া করে দুই বখাটেকে ধরে মাদ্রাসায় আটক রাখে। এক বখাটে পালিয়ে যায়। এ নিয়ে মাদ্রাসার ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে চরম উত্তেজনা দেখা দেয়। মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ পূর্ব নির্ধারিত নির্বাচনী পরীক্ষা স্থগিত ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে আটক বখাটেদের উপযুক্ত শাস্তির আশ্বাস দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) জাহাঙ্গীর হোসাইন জানান, মাদ্রাসা ছাত্রীকে উত্ত্যক্তের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আটক দুই বখাটে’কে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদন্ড-প্রদান করেছেন। প্রতিবাদকারী ছাত্রকে দা দিয়ে কুপিয়ে জখম করার ঘটনায় আহত ছাত্রের পক্ষ থেকে পালিয়ে যাওয়া বখাটের বিরুদ্ধে থানায় নিয়মিত মামলা করতে বলা হয়েছে।
এদিকে পাথারিয়া গাংকুল মনসুরিয়া ফাজিল ডিগ্রি মাদরাসার গভর্নিং বডির চেয়ারম্যান ও সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম সুন্দরের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ঘটনার সময় তিনি সুজাউল মাদ্রাসায় একটি মিটিংয়ে ব্যস্ত ছিলেন ঐ সময় বিষয়টি জানতে পেরে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, মাদ্রাসার গভর্নিং বডি ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গদের সমন্বয়ে আইনী পদক্ষেপ গ্রহন করেন। এবং ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে বখাটেদের শাস্তি নিশ্চিত করায় তিনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সাধুবাদ জানান।
আজ ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | হেমন্তকাল | ২০শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি | বিকাল ৩:৫৬ | শুক্রবার
ডিবিএন/এসই/ মোস্তাফিজুর রহমান বাপ্পি