মাদকে সয়লাব ভারতীয় সীমান্ত ঘেঁষা কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলা। মাদক নিয়ন্ত্রণে ফুলবাড়ী থানা পুলিশ গত দশ মাসে ১০২ টি মাদক মামলায় ৬৫ জনকে গ্রেফতার সহ স্থানীয় মুল্যে প্রায় দেড় কোটি টাকার মাদক উদ্ধার করলেও থামছে না মাদক ব্যবসা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, প্রায় শতাধিক স্পটে প্রকাশ্যে চলছে মাদক কেনাবেচা। স্পট গুলো হচ্ছে উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের অনন্তপুর, উত্তর অনন্তপুর, কাশিয়াবাড়ী, বেড়াকুটি, ধর্মপুর, বালাবাড়ী, কাশিয়াবাড়ী, কাশেম বাজার, কাশিপুর কলেজমোড়, গংগাহাট ব্রীজের মোড় ফুলবাড়ী সদর ইউনিয়নের আব্দুল্লাবাজার,চোত্তাবাড়ী মোড়, নাখারজান, চাঁদের বাজার, ঠোস বিদ্যাবাগিস, কুটিচন্দ্রখানা, ব্র্যাক মোড়, পানিমাছকুটি মডেল স্কুল, কদমতলা, শিমুলবাড়ী ইউনিয়নের জুম্মার পাড়, নন্দিরকুটি,লালের বাজার, ঠাকুরপাঠ, টেপরিবাজার, মিয়াপাড়া সিএমইএস, হক বাজার, বোডের হাট, রোশন শিমুলবাড়ী, শালবাড়ী হ্যাচারী মোড়, আছিয়ার বাজার, শেখ হাসিনা ধরলা সেতুর পশ্চিম পাড়, নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের বালারহাট, কুরুষা ফেরুষা, জায়গীরটারী, খলিশাকোটাল, গজেরকুটি, বাদশা বাজার, বালাতাড়ি, কৃষ্ণানন্দ বকসী, গোরকমন্ডল বিডিআর বাজার, গোরকমন্ডল নামাটারী, গোরকমন্ডল ব্রীজের পাড়, চর-গোরকমন্ডল আনন্দ বাজার, চর গোরকমন্ডল আবাসন, পশ্চিম ফুলমতি স্কুলের পাড়, নাওডাঙ্গা বকুলতলা বাজার। এসব স্পটে প্রকাশ্যে মাদক কেনাবেচা হচ্ছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
“ডিজিটাল বাংলা নিউজ” অনলাইনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
ফুলবাড়ী থানা সুত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারী থেকে ১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত ১০ মাসে ৪৪৯ কেজি ৪০০ গ্রাম গাঁজা, ১৫৯৫ বোতল ফেনসিডিল, ৪৬০২ পিস ইয়াবা ৫৯১ বোতল ইস্কাফ ও ৬ বোতল মদ উদ্ধার করেছে। এছাড়াও পরিত্যাক্ত অবস্থায় ২৩ কেজি ৮০০ গ্রাম গাঁজা, ৮৭ বোতল ফেনসিডিল, ২৭০ বোতল ইস্কাফ, ২২০ পিস ইয়াবা উদ্ধার হয়েছে। এ সময়ে ১০২ টি মাদক মামলায় মোট ৬৫ জন আসামী হাতেনাতে গ্রেফতার হয়েছে। পলাতক রয়েছে ৩৭ জন। উদ্ধারকৃত এসব মাদকের সরকারী মূল্য ৬২ লাখ ১১ হাজার ৫০০ টাকা দেখানো হলেও বেসরকারী ভাবে এগুলোর স্থানীয় মূল্য প্রায় দেড় কোটি টাকা।
সুত্র আরও জানায়, মাদক প্রতিরোধে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষে গত ডিসেম্বর মাসে স্কুল-কলেজসহ বিভিন্ন এলাকায় ৭০৬ টি উঠান বৈঠক করা হয়েছে।
নাওডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাছেন আলী জানান, ফুলবাড়ী উপজেলার সবচেয়ে বেশি মাদক কেনাবেচা হয় নাওডাঙ্গা ইউনিয়নে। সেজন্য নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের বালারহাট বাজারে একটা পুলিশ ফাঁড়ী স্থাপন করা খুবই জরুরী। তাহলে পুলিশ সবসময় ইউনিয়নের আনাচে কানাচে টহল দিতে পারবে। ফলে মাদক কেনা বেচা বা দুর দুরান্তর থেকে মাদক সেবন করতে আসা মাদকসেবীদের আনাগোনা অনেকটা কমবে।
কাশিপুর ইউনিয়নের যুবলীগ নেতা আমিনুল ইসলাম জানান, শুধুমাত্র প্রশাসনের একার পক্ষে মাদক প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়। এজন্য সমাজের সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। কিন্তু মাদক ব্যবসায়ীদের দাপটে সাধারণ মানুষ মুখ খুলতে ভয় পায়। তাই মাদকের প্রভাব বেড়েই চলছে।
ফুলবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ফজলুর রহমান জানান, প্রতিদিনই আমাদের মাদক বিরোধী অভিযান চলছে এবং এ অভিযান অব্যাহত থাকবে। তবে আমাদের একার পক্ষে মাদক নির্মুল করা সম্ভব নয়। সমাজের সচেতন মানুষ, জনপ্রতিনিধিরা যদি পুলিশকে সহযোগিতা করে এবং দুই দেশের সীমান্ত রক্ষীবাহিনী যদি মাদক ঠেকাতে তৎপর হয়, তবেই মাদক চোরাচালান প্রতিরোধ করা সম্ভব।
ডিবিএন/এসডিআর/মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান