তিমির বনিক, মৌলভীবাজার প্রতিনিধি: মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে বর্ণাঢ্য আয়োজনে আজ ঊষালগ্নে সমাপ্ত হলো মণিপুরী সম্প্রদায়ের প্রধান উৎসব শ্রীকৃষ্ণের মহারাসলীলা।
বুধবার (৯ নভেম্বর) সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে অনুষ্ঠানের পরিসমাপ্তি ঘটে। রাতভর শ্রীকৃষ্ণের মহারাসলীলা পরিবেশনের মাধ্যমে মণিপুরি নৃত্যে হাজারো দর্শকদের বিমোহিত করে রাখেন মণিপুরী নারীরা।
রাসোৎসবে জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে হাজার হাজার ভক্তবৃন্দসহ দেশি-বিদেশি পর্যটকের ভিড়ে মুখরিত হয়েছিল কমলগঞ্জের মণিপুরী অঞ্চলগুলোর আশেপাশে কানায় কানায় ভড়পূর।
ভিড় সামলাতে পুলিশ সদস্যদের হিমশিম খেতে হয়। রাসোৎসব উপলক্ষে মঙ্গলবার সকাল থেকে গোধূলীলগ্ন পর্যন্ত রাখালনৃত্য অনুষ্ঠিত হয়। রাসলীলা উন্মুক্তমঞ্চ মাঠে কলাগাছের বেষ্টনীর বৃত্তাকারে এ নৃত্য অনুষ্ঠিত হয়। এ উপলক্ষে মাধবপুরে বসেছিল রকমারি আয়োজনে বিশাল মেলা।
সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। সম্মানিত অতিথি ছিলেন মৌলভীবাজার-৪ আসনের সংসদ সদস্য সাবেক চিফ হুইপ উপাধ্যক্ষ ড. মো. আবদুস শহীদ ও সংসদ সদস্য অসিম কুমার উকিল। এছাড়াও বিশেষ অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আবুল মনসুর, মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক মীর নাহীদ আহ্সান প্রমুখ।
আয়োজকেরা জানান, কার্তিক মাসের পূর্ণিমা তিথিতে গৌড়ীয় বৈষ্ণব ধর্মাবলম্বী মণিপুরিদের প্রধান ধর্মীয় মহোৎসব শ্রীকৃষ্ণের মহারাসলীলার আয়োজন করা হয়।
কমলগঞ্জের মাধবপুর ইউপির জোড়ামণ্ডপ প্রাঙ্গণে মণিপুরি মহারাসলীলা সেবা সংঘের উদ্যোগে বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরি সম্প্রদায়ের ১৮০তম মহারাসলীলা উৎসবের আয়োজন করা হয়। সেখানে রাস উৎসব উপলক্ষে প্রকাশিত স্মারক সংকলনের মোড়ক উন্মোচনও করা হয়। মণিপুরিদের রাসলীলার অনেক ধরন। নিত্যরাস, কুঞ্জরাস, বসন্তরাস, মহারাস, বেনিরাস বা দিবারাস। শারদীয় পূর্ণিমা তিথিতে হয় বলে মহারাসকে মণিপুরিরা পূর্ণিমারাসও বলে থাকে।
মাধবপুর মণিপুরি মহারাসলীলা সেবা সংঘের সাধারণ সম্পাদক শ্যাম সিংহ বলেন, এবারের রাসোৎসব আমরা বড় পরিসরেই আয়োজন করেছি। উৎসবে সার্বিক নিরাপত্তার জন্য প্রশাসনের সার্বিক তদারকি ও কঠোর নজরদারি ছিল। প্রায় একমাস আগ থেকেই চলছিল রাসোৎসবের প্রস্তুতি। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী অনুষ্ঠানকে ঘিরে সকল রকম সহযোগিতা করেন। এরি প্রতিফলন ঘটছে সুন্দর মনোরম পরিবেশে আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করতে পেরেছি।