শুরু হলো মণিপুরি সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব মহারাসলীলা। প্রতিবছরের ন্যায় রাখাল নৃত্যের মধ্য দিয়ে শুক্রবার সকালে শুরু হয়েছে মহারাসলীলার এবছরের আড়ম্বরপূর্ণ আয়োজন। রাস দেখতে এরিইমধ্যে অনুষ্ঠানস্থলে জড়ো হতে শুরু করেছেন দর্শক ও মনিপুরী সম্প্রদায়ের মানুষ। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মানুষের ভিড় পরিণত হতে চলেছে জনসমুদ্রে।
প্রতি বছর কার্তিক মাসের পূর্ণিমা তিথিতে এই উৎসব পালন করা হয়। কার্তিক মাসের পূর্ণিমাতিথিতে গৌড়ীয় বৈষ্ণব ধর্মাবলম্বী মণিপুরিদের প্রধান ধর্মীয় মহোৎসব শ্রীকৃষ্ণের মহারাসলীলার আয়োজন করা হয়। সে ধারাবাহিকতায় এবছর শুক্রবার শুরু হয়েছে মণিপুরিদের ঐতিহ্যবাহী ‘রাস উৎসব’।
মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জের মাধবপুর জোড়ামন্ডপ এবং আদমপুর মন্ডপের ঐতিহ্যবাহী মহারাসলীলা প্রতিবছরই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসায় লাখো মানুষের মিলনমেলায় পরিণত হয়। এবছরও এখানে রাসকে ঘিরে নেওয়া হয়েছে নানা প্রস্তুতি। রাখাল নৃত্য দিয়ে শুরু হওয়া রাসলীলার ইতি ঘটবে গোপীনৃত্যের মধ্য দিয়ে।
শত বছরের পুরোনো মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার মাধবপুরের শিববাজারে জোড়ামণ্ডপে এবছর ১৮২ তম এবং আদমপুরের তেতইগাঁওয়ে ৪২তম রাসলীলা আয়োজিত হয়েছে।
জানা যায়, ১৭৭৯ সালে মণিপুরের মহারাজা ভাগ্যচন্দ্র স্বপ্ন দেখে নৃত্যগীতে যে প্রার্থনার শুরু করেছিলেন, সেটাই “রাস উৎসব”। ভাগ্যচন্দ্রের পরবর্তী রাজাদের বেশির ভাগই ছিলেন নৃত্যগীতে পারদর্শী এবং তারা নিজেরাও রাসনৃত্যে অংশ নিতেন। সেই ধারাবাহিকতায় মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে উদযাপিত হয়ে আসছে রাস উৎসব। বর্নাঢ্য আয়োজন, মৃদঙ্গ, করতাল ও শঙ্খধ্বনির মধ্য দিয়ে রাধাকৃষ্ণের লীলা ও শ্রীকৃষ্ণ কীর্তন ঘিরে এই দিনটি সকলের উৎসব হয়ে ওঠে। অনুষ্ঠান আচার আচরণ রীতিনীতি অনুযায়ী রাত হয়ে আগামীকাল পর্যন্ত।
এই রাস উৎসবে সারাদেশের আগ্রহী মানুষের ঢল নামে কমলগঞ্জে। ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে জাতপাত ভুলে সকল মানুষের অংশগ্রহণে এটি পরিণত হয় এক মহামিলনের অংশস্থল।
আজ ১লা অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | হেমন্তকাল | ১৪ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি | রাত ৮:৫৩ | শনিবার
ডিবিএন/এসই/ মোস্তাফিজ বাপ্পি