অরুনজীব নন্দী অর্নব, ভোলা থেকে: আমন ধান ঘরে তোলার সাথে সাথে শুরু হয়েছে আসন্ন ইরি ধান চাষাবাদের জন্য আদর্শ বীজতলা তৈরির কাজ। ভোলা জেলায় প্রত্যেকটি উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে আদর্শ বীজতলা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। স্বল্প খরচে ধানের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে আদর্শ বীজতলার দিকে ঝুঁকে পড়েছেন এ অঞ্চলের কৃষকরা।
জানা গেছে, আদর্শ বীজতলার গুণগত ও উৎকৃষ্ট মানের ধানের চারা উৎপাদনের জন্য ১ মিটার প্রস্থ বেড করে এবং দুই বেডের মাঝে নালা রেখে প্রধানত এ বীজতলা করা হয়। সেচ দেয়া ও অতিরিক্ত পানি নিষ্কাশনের সুবিধা, আন্তপরিচর্যার সুবিধা ও সঠিক অনুপাতে বীজ বপনের জন্য এই আদর্শ বীজতলা। আদর্শ বীজতলা করলে অল্প জায়গায় চারা দিয়ে বেশি জমি রোপণ করা যায়। ১ শতক বীজতলার চারা দিয়ে প্রায় ২০ শতক ধানের জমি রোপণ করা যায়। আদর্শ বীজতলার চারায় কুশি গজায়। এ কারণে মাত্র একটি বা দুটি চারা দিয়ে একটি গোছা তৈরি করা যায়। অপর পক্ষে সমতলী বীজতলার চারা লিকলিকে চিকন, দুর্বল এবং কম বাড়তি সম্পন্ন হয়। ফলে ওই চারা দিয়ে ধানের জমি রোপণ করলে ধানের ফলন কমে যায়। আদর্শ বীজতলার প্রতি বর্গমিটারে ৩০ গ্রাম বীজ প্রয়োজন হয়। সেই হিসেবে ১ শতক আয়তনের বীজতলায় মাত্র ১ হাজার ২শ’ বীজ প্রয়োগ করতে হয়। পক্ষান্তরে সমাতলী বীজতলায় এর থেকে অনেক বেশি বীজ লাগে। আদর্শ বীজতলার ওপরে কোনো বাড়তি পানি জমা হতে পারে না। সমান হারে বীজগুলো বীজতলায় দেয়া সম্ভব হয়। ফলে প্রত্যেকটি চারা সমান মানের হয়।
বোরহানউদ্দিন উপজেলার ফুলকাচিয়া ইউনিয়নের কৃষক সুজন নন্দী ও মো: শরীফ হোসেন বলেন, কৃষি বিভাগের পরামর্শ অনুযায়ী আমরা এখন সবাই আদর্শ বীজতলা তৈরি করছি। এতে ভাল মানের চারা তৈরি হবে, এ বীজতলায় বীজ কম লাগছে। রোপণের সময় চারা সাশ্রয় হয়। এ চারা দিয়ে লাইন লোগো পদ্ধতিতে ধান রোপণ করে গত কয়েক বছর ধরে ভালো ফলন পেয়েছেন বলে জানান।