ভুটানের প্রধানমন্ত্রী লোটে শেরিং বলেছেন, বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে বাণিজ্য উন্নয়নের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি কার্যকর যোগাযোগের মাধ্যমে বন্ধুপ্রতিম এ দেশ দু’টির সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
প্রধানমন্ত্রী লোটে শেরিং ঢাকায় বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশন (এফবিসিসিআই) নেতৃবৃন্দের সাথে এক আলোচনা সভায় এই আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
এফবিসিসিআই সভাপতি মো. শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ভূটানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. টান্ডি দর্জি এবং সেদেশের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় ভুটান থেকে জলবিদ্যুৎ আমদানির বিষয়ে ভারতকে সম্পৃক্ত করার ওপরে গুরুত্ব দেয়া হয়। ভূটানের প্রধানমন্ত্রীও জলবিদ্যুৎ প্রকল্পে ত্রিপাক্ষিক আয়োজনের ওপর গুরুত্ব দেন।
ভূটানের নেতৃবৃন্দ বাংলাদেশের সঙ্গে বিদ্যমান বাণিজ্য নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের সম্ভাবনাগুলো খুঁজে দেখা এবং আরো কার্যকর যোগাযোগের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান,দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান,ভূটানের রাষ্ট্রদূত সোনাম তোবদেন রাবগে,ভূটান চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি ফুব জাম এবং সেদেশের ২৬ সদস্যের একটি বাণিজ্য প্রতিনিধিদল অনুষ্ঠানে অংশ নেন। এফবিসিসিআইসহ দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ি নেতৃবৃন্দ সভায় উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বলেন, বাংলাদেশ এবং ভুটান উভয় দেশের সরকারই দারিদ্র্য বিমোচন এবং জনগনের কল্যাণে কাজ করে চলেছে।
অনুষ্ঠানে এফবিসিসিআই সভাপতি মো: শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন বলেন,প্রতিবেশী এ দেশ দু’টির মধ্যকার বাণিজ্য সম্পর্ক উন্নয়নের বিপুল সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও এখনও তা কাঙ্খিত পর্যায়ে উনীœত হয়নি। এ প্রসঙ্গে তিনি বস্ত্রখাত, তথ্য প্রযুক্তি, নির্মাণ ইত্যাদি খাতে কাজ করার সম্ভাবনা তুলে ধরেন।
এফবিসিসিআই সহ-সভাপতি মো. মুনতাকিম আশরাফ বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি, বিনিয়োগ পরিস্থিতি এবং ভূটানের সাথে বাণিজ্য উন্নয়নের পন্থা নিয়ে পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন দেন।
অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে ‘জয়েন্ট বিজনেস কাউন্সিল’ গঠনের লক্ষ্যে এফবিসিসিআই এবং ভূটান চেম্বার অব কমার্সের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়। এফবিসিসিআই সভাপতি এবং ভূটান চেম্বারের সভাপতি ফুব জাম স্ব স্ব চেম্বারের পক্ষে স্মারকটি স্বাক্ষর করেন।
অনুষ্ঠানে ভূটান থেকে নির্মাণ খাত, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, ভোগ্যপণ্য এবং পর্যটন ও সেবা খাতের ব্যবসায়ি নেতৃবৃন্দ অংশ নেন। এসব খাত থেকে আসা বাংলাদেশী প্রতিনিধিবৃন্দ অনুষ্ঠানে তাদের ভূটান প্রতিপক্ষের সাথে আলোচনা করেন।
উল্লেখ্য, চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বাংলাদেশ ৩ দশমিক ৭২ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য ভূটানে রফতানি করে এবং ভুটান থেকে ১৮ দশমিক ১০ মিলিয়ন ডলারের পণ্য আমদানি করে। ভুটানে বাংলাদেশের রফতানিযোগ্য পণ্য হচ্ছে কৃষি পণ্য, আকরিক, স্ল্যাগ,ছাই, ওভেন গার্মেন্টস, প্লাস্টিক ও প্লাস্টিক সামগ্রী এবং ওষুধ পণ্য। আর ভুটান থেকে মুলত খনিজ পণ্য, সবজি, আয়রন ও স্টিল এবং টেক্সটাইল সামগ্রী আমদানি করা হয়।